Advertisement
E-Paper

চিন মানল, শিক্ষা নিতে হবে ডোকলাম থেকে

দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-চিন সম্পর্কের ভিত যে পঞ্চশীল, নাম না করে তার আদর্শের কথাগুলিও বলেন চিনা মুখপাত্র। হুয়ার কথায়, ‘‘সীমান্ত নিয়ে ঐতিহাসিক যে সমঝোতা রয়েছে, সেগুলি আমাদের মেনে চলতে হবে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২০ ডিসেম্বর ২০১৭ ০৩:১৫

ডোকলাম অচলাবস্থা থেকে শিক্ষা নেওয়া উচিত, কবুল করল চিন। আর এটা ঘটল ঠিক ভারত-চিন সীমান্ত আলোচনার মুখে। চিনের ‘স্টেট কাউন্সিলর’ ইয়াং জিয়েচি আগামী শুক্রবার নয়াদিল্লিতে বৈঠক করবেন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের সঙ্গে। আগেও ১৯ বার এমন বৈঠক হয়েছে দু’দেশের মধ্যে। তবে চিনের বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র হুয়া চুনইং আজ সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘এ বারের এই বৈঠকটিকে খুবই গুরুত্ব দিচ্ছে দু’দেশ।’’

চিনা মুখপাত্র হুয়া-র কথায়, ‘‘চলতি বছরে ভারত ও চিন মোটামুটি ভাবে ভাল সম্পর্কই বজায় রেখে চলছিল। কিন্তু ডোকলাম বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়ায়। ওই অভিজ্ঞতা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের সংঘাতের পরিস্থিতি আর না তৈরি হয়।’’

দীর্ঘদিন ধরেই ভারত-চিন সম্পর্কের ভিত যে পঞ্চশীল, নাম না করে তার আদর্শের কথাগুলিও বলেন চিনা মুখপাত্র। হুয়ার কথায়, ‘‘সীমান্ত নিয়ে ঐতিহাসিক যে সমঝোতা রয়েছে, সেগুলি আমাদের মেনে চলতে হবে। সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখা শুধু নয়, দুই দেশের সম্পর্কের বৃহত্তর ছবিটিকে সুরক্ষিত রাখার জন্যও এটা জরুরি।’’ শুক্রবারের বৈঠকে কি ডোকলাম নিয়ে কথা হবে? এই প্রশ্নেও চিনের মুখপাত্র বুঝিয়ে দেন, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের সামগ্রিক ছবিটিকেই তাঁরা গুরুত্ব দিতে চাইছেন। চিনের মুখপাত্র জানান, সম্প্রতি আরআইসি (রাশিয়া-ভারত-চিন) বিদেশমন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে গিয়ে ওয়াং ই বিদেশমন্ত্রী সুষমা স্বরাজ ও রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে বৈঠক করেছেন। তখনও ডোকলাম প্রসঙ্গ উঠেছে। দু’দেশের বিশেষ প্রতিনিধির মাধ্যমে সীমান্ত বিতর্ক মেটানোর কথা হয়েছে। তবে এর পাশাপাশি বাণিজ্য, অর্থনীতি, প্রতিরক্ষা ও রাজনীতির মতো বহু বিষয়েই আলোচনা হয়েছে বিদেশমন্ত্রী ওয়াং-এর সফরে। এ বারে যাচ্ছেন চিনের স্টেট কাউন্সিলর ইয়াং জিয়েচি। শীর্ষস্থানীয় এই মহিলা কূটনীতিক সম্প্রতি চিনের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিসি)-র পলিটব্যুরো সদস্য হয়েছেন।

আরও পড়ুন: হতে পারে পরমাণু যুদ্ধ, পাক হুঁশিয়ারি

ভারত, চিন ও ভুটান— তিন দেশের সীমান্তের কাছাকাছি ডোকলামের মতো স্পর্শকাতর এলাকায় চিনা সেনা সড়ক তৈরিতে উদ্যোগী হলে ভারতীয় সেনা তাতে আপত্তি জানিয়েছিল। ৭৩ দিন অচলবস্থা চলার পরে গত ২৮ অগস্ট, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর চিন সফরের মুখে সমঝোতার ভিত্তিতে তখনকার মতো মোটানো হয় অচলাবস্থা। কিন্তু ডোকলাম নিয়ে চিনের তৎপরতা যে বন্ধ হয়েছে, এমন নয়। প্রতি বছর নাথু লা দিয়ে কৈলাস, মানস সরোবর যেতেন ভারতীয় তীর্থযাত্রীরা। ডোকলাম সঙ্কটের জেরে বেজিং তা বন্ধ রেখেছে এখনও।

শুধু তা-ই নয়, শ্রীলঙ্কায় বড়সড় বন্দরের দখল পেয়ে ভারতের নাকের ডগায় নিঃশ্বাস ফেলছে ড্রাগন। তবু কূটনীতিকদের একাংশ মনে করছেন, ডোকলাম হোক বা পাক অধিকৃত কাশ্মীর দিয়ে সড়ক তৈরি— নয়াদিল্লি দৃঢ় অবস্থান নেওয়ায় বেজিং যে খানিকটা হলেও সুর নরম করছে, ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের দিকে জোর দেওয়ার কথা বলছে, সেটা ইতিবাচক ঘটনা। তবে চিনা কর্তার এই সফরে নাটকীয় বদল কিছু ঘটে যাবে, এমনটা আশা করছে না সাউথ ব্লক।

এই প্রতিবেদনটি প্রথম প্রকাশের সময় সিকিমকে ‘দেশ’ বলে উল্লেখ করা হয়েছিল। অনিচ্ছাকৃত এই ত্রুটির জন্য আমরা দুঃখিত ও ক্ষমাপ্রার্থী।

Doklam standoff China Bilateral ties India
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy