প্রতীকী ছবি।
বিনিয়োগের দুনিয়ায় এই মুহূর্তে চড়চড়িয়ে নিজের দাম বাড়াচ্ছে একটি বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা। নাম ব্লিঙ্ক চার্জিং কো। গত ১১ বছর ধরে একরকম লোকসানেই চলছিল সংস্থাটি। এমনকি গত বছর একটা সময় দেউলিয়া হয়ে যেতে পারে বলেও ঘোষণা করেছিল তারা। বিশ্ব শেয়ার বাজারের হিসেব বলছে সেই ব্লিঙ্কই এখন ৩০০০ শতাংশ লাভের মুখ দেখেছে।
বিনিয়োগকারীদের সেরা পছন্দ হিসেবে উঠে এসেছে এই সংস্থা। গত ৮ মাসে ক্রমশ বাড়তে বাড়তে এমন জায়গায় পৌঁছেছে ব্লিঙ্কের শেয়ারের দর যে তা টেক্কা দিয়েছে, দূষণহীন বিদ্যুৎ সরবরাহকারী সংস্থা টেসলাকেও।
টেসলা বিনিয়োগকারীদের দীর্ঘদিনের নির্ভরযোগ্য সংস্থা । পুনর্ব্যবহারযোগ্য বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা ব্লিঙ্ক সেই টেসলাকেও টেক্কা দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে, কী এমন হল যে ১১ বছর ধরে ক্ষতিতে চলা সংস্থা হঠাৎ ৩০০০ গুণ বাড়িয়ে ফেলল শেয়ার দর!
শেয়ার বাজারের ইতিহাস বলছে, এত কম সময়ে ১০০ কোটি ডলারের বেশি আর্থিক মূল্যের মাত্র সাতটি সংস্থা এতখানি লাভের মুখ দেখেছে। এমন প্রায় ২৭০০টি সংস্থা রয়েছে, যাদের মোট সম্পদ ১০০ কোটি ডলারের বেশি। সেখানে ব্লিঙ্ক গত ১১ বছর ধরে কোনও লাভের খতিয়ান পেশ করেনি। অর্থাৎ ১১ বছরে সংস্থাটি তেমন লাভের মুখই দেখেনি। তারপরও গত ৮ মাসে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ব্লিঙ্কের এই বাড়তে থাকা জনপ্রিয়তা দেখে তাই কারণ খুঁজতে বসেছেন অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। তাঁদের একাংশের মতে, পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি বা গ্রিন এনার্জি সরবরাহের বিষয়টিই আকৃষ্ট করছে বিনিয়োগকারীদের। বাড়তে থাকা পরিবেশ দূষণ, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং প্রচলিত শক্তি সম্পদ ক্রমশ কমে আসার মতো বিষয় নিয়ে চিন্তা বাড়ছে পৃথিবীর উন্নত ও উন্নয়নশীল রাষ্ট্রগুলি। এই পরিস্থিতিতে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তির উপরেই নির্ভর করা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিনিয়োগকারীরা। তাঁদের কথায়, ভবিষ্যতের জন্য গ্রিন এনার্জি সংস্থাগুলিতে বিনিয়োগ করতেই হবে।
বৈদ্যুতিন গাড়ির চার্জিং স্টেশন চালায় ব্লিঙ্ক। গাড়ির চার্জিংয়ের জন্য ব্যবহার করে পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি। বিনিয়োগকারীদের মতে, ভবিষ্যতের পুনর্বব্যহারযোগ্য শক্তির চাহিদা বাড়বে। আর সেই চাহিদা মেটাতে পারে ব্লিঙ্ক।
যদিও বাজার বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে একমত নন। তাঁরা বলছেন, পুরো ব্যাপারটাই একটা নড়বড়়ে ভিতের উপর দাঁড়িয়ে আছে। বিনিয়োগকারীরা যা ভাবছেন, তা ঠিক না হওয়ারই সম্ভাবনা বেশি। অর্থনৈতিক গবেষণা সংস্থা সাইট্রন রিসার্চের প্রতিষ্ঠাতা অ্যান্ড্রু লেফট বলেছেন, ‘‘ব্লিঙ্কে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ হঠাৎ চাগাড় দেওয়া পাগলামি ছাড়া আর কিছুই না। হয়তো ব্লিঙ্কের মিষ্টি নামটাই পছন্দ হয়ে গিয়েছে বিনিয়োগকারীদের।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy