Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪
Bangladesh Interim Government

বিএনপি ও জামায়াত ভোটের পথরেখা চাইল ইউনূসের কাছে

বিএনপি চায় যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করো হোক। তার জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, সেটাই ইউনূস সরকার করুক।

মুহাম্মদ ইউনূস।

মুহাম্মদ ইউনূস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৪ ০৮:৪৯
Share: Save:

বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে এ বার নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট একটি পথরেখার দাবি জানাল প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি। দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগির ও দলের পাঁচ জন নেতা শনিবার ইউনূসের আহ্বানে তাঁর সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা বৈঠক করেন। তার পরে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের জানান, “প্রধান উপদেষ্টা জানিয়েছেন, শীঘ্র নির্বাচনই অন্তর্বর্তী সরকারের অগ্রাধিকার। আমরা তাঁর কাছে এ বিষয়ে একটি নির্দিষ্ট একটি পথরেখা চেয়েছি।”

সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি জাতীয় সংবাদপত্রে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিএনপির মহাসচিব বলেছেন, সংস্কার নিয়ে তাঁদের মাথাব্যথা কম। বিএনপি চায় যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের ব্যবস্থা করো হোক। তার জন্য নির্বাচন কমিশন, বিচার বিভাগ এবং প্রশাসনে যতটুকু সংস্কার প্রয়োজন, সেটাই ইউনূস সরকার করুক। সংস্কারের কাজে ইউনূস সরকারের এক্তিয়ার ও বৈধতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ফখরুল। তিনি বলে, “সংস্কার করার মূল দায়িত্ব কিন্তু হবে নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের। আপনাকে যদি প্রশ্ন করি যে হু আর ইউ— এই সব সংস্কার করছেন, সংবিধান সংস্কার করছেন। আপনি কে? আপনার স্ট্যাটাসটা কী? একটা আন্দোলন করে ছেলেরা আপনাকে বসিয়ে দিয়েছে আর আপনি সব দায়িত্ব পেয়ে গিয়েছেন, আমি সেটা মনে করি না।” বিএনপি সূত্রের খবর, এই বিষয়টি কিছুটা নরম সুরে এ দিন ইউনূসকেও সাফ বলে আসেন মির্জা ফখরুলেরা। বলে দেন, সংস্কারের চেয়ে নির্বাচনকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত সরকারের। ফখরুল জানিয়েছেন, ইউনূস তাঁকে জানিয়েছেন— তাঁরাও সেটাই
মনে করেন।

এ দিন আলাদা ভাবে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করেন জামায়াতে ইসলামী নেতৃত্বও। দলের আমির শফিকুর রহমানে বৈঠক থেকে বেরিয়ে জানান, সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে
তাঁরা সরকারের কাছে দু’টি স্পষ্ট পথরেখা দাবি করেছেন। সংস্কারের কাজে কত দিন লাগতে পারে, নির্বাচনই বা কত দিন পরে হতে পারে, তার জন্য সময়সীমা নির্দিষ্ট করা প্রয়োজন। জামায়াতের আমির বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ দেশ শাসন নয়, একটা গ্রহণযোগ্য, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দেওয়ার পরিবেশ তৈরি করা। এ জন্য কিছু মৌলিক বিষয়ে তাদের সংস্কার করতেই হবে। কী কী মৌলিক বিষয়ে তারা সংস্কার করবে— আমরা সেই বিষয়ে কথা বলেছি।” তিনি জানান, দেশ জুড়ে শান্তিতে দুর্গোৎসব পালনের বিষয়েও ইউনূসের সঙ্গে জামায়াত নেতাদের কথা হয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল সংবাদপত্রের সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছেন, শক্তিশালী দল হলেও তাঁদের বাদ দিয়ে সরকার গঠনের একটা চক্রান্ত তলে তলে হচ্ছে। তিনি বলেন, বিরাজনীতিকরণের একটা ধারণা মানষের মধ্যে প্রচার করা হচ্ছে। কিন্তু নির্বাচনে জয়ী হয়ে সরকার গঠনই গণতান্ত্রিক পথ। সেটা রাজনৈতিক দলগুলিই পারে। বিএনপি নির্বাচনের পরে একটি জাতীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। একমাত্র আওয়ামী লীগ ছাড়া আর সকলকে এই সরকারে তাঁরা আহ্বান জানাবেন। জামায়াতও চাইলে আসতে পারে। আওয়ামী লীগ বিরোধীপক্ষ হতে পারে।

আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, বা তাদের ভোটে লড়তে না দেওয়ার কথা যাঁরা বলছেন, বিএনপি তাঁদের সঙ্গে একমত নন বলে জানিয়েছেন ফখরুল। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনে লড়লে তাঁদের আপত্তি নেই। এই স্বৈরশাসনের পরে মানুষ তাঁদের জয়ী করলে করবে। কিন্তু যে সব নেতার বিরুদ্ধে হত্যা বা গণহত্যার অভিযোগ আছে, তাঁদের বিচার হতেই হবে। তত দিন তাঁদের নির্বাচনে অংশ নেওয়া যাবে না। অন্যরা লড়তে পারেন।

অন্য বিষয়গুলি:

Muhammad Yunus Bangladesh
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE