Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
london

COVID: করোনা-বিধি রদের সিদ্ধান্তে বিতর্ক ব্রিটেনে

আগামী ১৯ জুলাই থেকে সব বিধিনিষেধ উঠে যাবে বলে ঘোষণা করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৭ জুলাই ২০২১ ০৪:৫৯
Share: Save:

করোনা সংক্রমণ হুড়মুড়িয়ে বাড়ুক, কমুক, একই থাকুক— যাই হোক না কেন আগামী ১৯ জুলাই থেকে সব বিধিনিষেধ উঠে যাবে বলে ঘোষণা করেছেন ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। সোমবার সাংবাদিক বৈঠক ডেকে ওই ঘোষণার পরে প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্ত নিয়ে দেশ জুড়ে তুমুল চর্চা শুরু হয়েছে।

করোনার প্রথম ঢেউ সামলে ওঠার পরে জানুয়ারি নাগাদ অল্প অল্প করে স্বাভাবিক হচ্ছিল ব্রিটেন। কিন্তু দ্বিতীয় ঢেউয়ের আঁচ পাওয়ামাত্র ফের লকডাউন শুরু হয়ে যায়। জুন মাসের মাঝামাঝি করোনা-বিধি থেকে স্বাধীনতা মিলবে এমন ঘোষণা করেও ডেল্টা স্ট্রেনের দাপটে সেই সিদ্ধান্ত পিছিয়ে দিতে বাধ্য হয় ব্রিটিশ সরকার। এ দিকে জনজীবন স্বাভাবিক করার দাবিতে দেশের নানা প্রান্তে লকডাউন-বিরোধী বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যদিও প্রশাসনের মতে, দ্রুতগতিতে টিকাকরণ শুরু হয়ে যাওয়ায় গত বছরের তুলনায় পরিস্থিতি এ বার অন্য রকম। তা হলে কি সেই ভরসাতেই এমন ঘোষণা বরিসের?

১৯ জুলাই করোনা বিধিনিষেধ পুরোপুরি তুলে দেওয়ার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কাল বলেছেন, ‘‘হয় এখন নয়তো কখনওই নয়।’’ তিনি জানান, টিকাকরণের ফলে হাসপাতালে ভর্তি এবং সঙ্কটজনক রোগীর সংখ্যা যে কমেছে সেই বিষয়ে সরকারের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য রয়েছে। তিনি জানান, ১৯ জুলাইয়ের পর থেকে ব্রিটেনে বাজার-দোকান, অফিস, বিনোদন কেন্দ্র, থিয়েটার সব কিছু খুলে যাবে। মাস্কও বাধ্যতামূলক নয়। কেউ চাইলে পরতেই পারেন। তবে মাস্ক পরা নিয়ে সরকারি নিষেধ থাকবে না। বরিসের এই মন্তব্যের সমালোচনা শুরু হয়েছে।

গত কাল ব্রিটেনে ২৭ হাজার নতুন সংক্রমণের খবর মিলেছে। এখনও মোট জনসংখ্যার একটা বড় অংশ টিকা পাননি। সেই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী এই সিদ্ধান্ত ‘বেপরোয়া’ বলে মনে করেছেন বিরোধী লেবার পার্টির নেতারা। বিশেষজ্ঞরা যদিও বারবার বলছেন, বিধিনিষেধ পুরোপুরি উঠে গেলে হুহু করে সংক্রমণ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এমনকি দৈনিক আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ হাজার ছুঁতে পারে। লন্ডনের মেয়র সাদিক খান জানান, বাস বা টিউবের মতো সরকারি পরিবহণে মাস্ক ছাড়া সফরের বিষয়ে গাড়ি চালকেরা দোটানায় পড়েছেন। এতে বাকি যাত্রীরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবেন বলে মনে করছেন তাঁরা। তবে ১৯ জুলাইয়ের পর তিনি মাস্ক পরেই প্রকাশ্য স্থানে যাবেন বলে জানিয়েছেন বরিস। ইতিমধ্যে, ব্রিটিশ নাগরিকদের জার্মানি প্রবেশের উপরে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে সে দেশের সরকার। সেই পথে হেঁটে আগামী দিনে টিকাপ্রাপ্ত বিদেশিদের ব্রিটেন সফরে ছাড় মিলবে বলে আশা।

তবে টিকাকরণ অস্ত্রে ডেল্টা স্ট্রেন যে মোটেই কাবু নয় তার প্রমাণ মিলেছে আমেরিকায়। সেখানে ৫০টি প্রদেশেই এই স্ট্রেনের অস্তিত্ব পাওয়া গিয়েছে। জনসংখ্যার ৫৭ শতাংশকে টিকার দু’টো ডোজ় দিয়ে ঘরবন্দি জীবনে ‘স্বাধীনতার’ হাওয়া এনে দিয়েছিল যে ইজ়রায়েল, সেখানেও সংক্রমণ বাড়ছে। দেখা যাচ্ছে, ডেল্টায় সংক্রমিতদের ৫৫% টিকার দু’টো ডোজ় পেয়েছেন। বিশেষজ্ঞরা জানান, নতুন স্ট্রেনটি রুখতে ফাইজ়ারের টিকা ৬৪ শতাংশ কার্যকর। রাশিয়াতেও বাড়ছে সংক্রমণ। অন্য দিকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রথম দেশ হিসেবে শ্রীলঙ্কায় পৌঁছল ফাইজ়ারের টিকা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

london Britain Boris Johnson COVID Restriction
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE