বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে অনেকগুলি মামলার শুনানি চলছে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে। কবে এই মামলার নিষ্পত্তি ঘটবে, কী রায় হবে— তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে নানা মহলে। এ বার সেই নিয়ে স্পষ্ট ধারণা দিলেন বাংলাদেশের ‘চিফ প্রসিকিউটর’ মহম্মদ তাজুল ইসলাম। তিনি জানান, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসের আগেই ট্রাইবুনালে হাসিনার বিরুদ্ধে চলা বেশ কয়েকটি মামলার নিষ্পত্তি হবে!
বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থা ‘বাসস’কে দেওয়া তাজুলের এক সাক্ষাৎকারে হাসিনা-মামলার প্রসঙ্গ ওঠে। বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সরকারের পক্ষে লড়ছেন তাজুল। সেই সাক্ষাৎকারে হাসিনার বিরুদ্ধে হওয়া মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্নে তিনি জানান, বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়া চ্যালেঞ্জের বিষয়। তবে শীঘ্রই বিচারপ্রক্রিয়া জনসাধারণের কাছে আরও স্পষ্ট হবে। তাঁর কথায়, ‘‘২০২৪ সালের ‘জুলাই-অগস্ট’ আন্দোলনে যে মানবাধিকার লঙ্ঘন হয়েছে, তার সঙ্গে অনেক পুলিশকর্মী জড়িত। সেই কারণে বিচারপ্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অনেক বাধা ছিল।’’
আরও পড়ুন:
তাজুলের দাবি, যে হেতু পুলিশের অনেকেই মানবাধিকার লঙ্ঘনের সঙ্গে জড়িত ছিলেন, তাই তদন্তপ্রক্রিয়া কঠিন হয়ে পড়েছিল। অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ নষ্ট করা হয়। তবে তার পরেও তদন্তে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পাওয়া গিয়েছে বলে জানান তাজুল। তিনি আশ্বস্ত করেন, ‘‘আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে মিলিয়ে বিচার হচ্ছে ট্রাইবুনালে। ফলে এই বিচারপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ নেই।’’ কোন পর্যায়ে রয়েছে বিচারপ্রক্রিয়া? তাজুলের কথায়, ‘‘বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে সাক্ষ্যগ্রহণ এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এ ছাড়াও, বিভিন্ন ভিডিয়ো, কল রেকর্ড, ফরেন্সিক রিপোর্ট-সহ নানা তথ্যপ্রমাণ আদালতে জমা করা হয়েছে।’’
বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস আগেই জানিয়েছিলেন, রমজান মাস শুরুর আগেই ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় সংসদের নির্বাচন হবে। সেই মতো প্রস্তুতিও চলছে বাংলাদেশে। শনিবার জাতীয় নির্বাচন নিয়ে একটি বিবৃতি প্রকাশ করে ইউনূস প্রশাসন। সেই বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই বাংলাদেশের জাতীয় নির্বাচন হবে। আরও জানানো হয়, সময়ে নির্বাচন করানোর ব্যাপারে বাংলাদেশের জনগণের কাছে অন্তর্বর্তী সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। নির্বাচন বানচাল বা বিলম্বিত করার সব রকম প্রচেষ্টা প্রতিহত করবে সরকার। সেই আবহেই হাসিনা-মামলার নিষ্পত্তি নিয়ে তৎপরতার কথা জানালেন বাংলাদেশের ‘চিফ প্রসিকিউটর’।