Advertisement
E-Paper

প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীর লেখাও মুছল চিন

২০১৩ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতিকে নির্দিষ্ট দিশায় চালিত করেছিলেন যিনি, তিনি কী এমন লিখেছিলেন, যাতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বা নেতৃত্বকে আক্রমণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন চিনফিংয়ের নজরদাররা!

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ এপ্রিল ২০২১ ০৬:০২
ওয়েন জিয়াবাও।

ওয়েন জিয়াবাও।

কোনও প্রশ্ন নয়। কর্তাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেশের কমিউনিস্ট পার্টির গরিমায় ‘আঁচ’ পড়ে ইতিহাস নিয়ে এমন কোনও আলোচনাও নয়। শি চিনফিংয়ের শাসনে চিনের নেট জগতের এই নিয়ম কতটাই কড়া, তা সামনে এল ফের। মুছে ফেলা হল দেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ওয়েন জিয়াবাওয়ের লেখা মায়ের স্মৃতিচারণাও।

সম্প্রতি প্রয়াত মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে ওয়েন গত শুক্রবার দীর্ঘ একটি নিবন্ধ লিখেছিলেন ম্যাকাও হেরাল্ড নামে ছোট একটি সাপ্তাহিক পত্রিকায়। শনিবার দেশের সোশ্যাল মিডিয়া উইচ্যাট-এ তা শেয়ার করেন কেউ। কিন্তু দ্রুত তা সরিয়ে ফেলা হয়। উইচ্যাট জানায়, এই লেখা তাদের নীতি-বিরোধী। বার্তা-বিনিময়ের চিনা অ্যাপ ওয়েইবো-তে লেখাটির লিঙ্ক পোস্ট করেছিলেন কেউ কেউ। তাতে ক্লিক করলে এখন উত্তর আসছে ‘৪০৪’। অর্থাৎ পাতাটি বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে।

গত সপ্তাহেই চিনের নেট নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ একটি হটলাইন নম্বর দিয়েছে নেটিজ়েনদের। বলা হয়েছে, দেশের নেতৃত্বকে আক্রমণ করে, কমিউনিস্ট পার্টির ঐতিহাসিক সাফল্যকে বিকৃত ভাবে দেখায় এমন কোনও মন্তব্য বা ‘অবৈধ’ লেখা নজরে এলেই যেন ওই নম্বরে জানিয়ে দেওয়া হয়। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ২০১৩ পর্যন্ত দেশের অর্থনীতিকে নির্দিষ্ট দিশায় চালিত করেছিলেন যিনি, তিনি কী এমন লিখেছিলেন, যাতে ইতিহাস বিকৃত করা হয়েছে বা নেতৃত্বকে আক্রমণ করা হয়েছে বলে মনে করছেন চিনফিংয়ের নজরদাররা!

স্পষ্ট কোনও উত্তর নেই। যেটুকু জানা গিয়েছে তা হল, ওয়েন ওই নিবন্ধে আবেগের সঙ্গে মায়ের জীবনের বিভিন্ন অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন। দ্বিতীয় চিন-জাপান যুদ্ধ থেকে শুরু করে সাংস্কৃতিক বিপ্লব চিনে নানা উথালপাতালের মধ্যে মায়ের লড়াইয়ের দিনগুলির কিছু বিবরণ দিয়েছিলেন লেখায়। বর্তমান শাসকদের বলা ইতিহাস ছাড়া অতীতের ভিন্নতর কোনও বয়ানই দেশবাসী বা বিশ্ব জানুক, এটা চায় না চিনের প্রশাসন।

ওই নিবন্ধেরই এক জায়গায় ওয়েন লিখেছিলেন, “আমার মনে হয়, চিন এমন একটি দেশ হওয়া উচিত যেখানে পুরোপুরি ন্যায় ও সুবিচার থাকবে। জনগণের ইচ্ছা, মানবতা ও মানুষের প্রকৃতি সব সময় মর্যাদা পাবে।” তবে কি বর্তমান চিনে ন্যায়-সুবিচারের অভাব বোধ করছেন ওয়েন! মনে করছেন, মানুষের ইচ্ছা বা মানবিকতা মর্যাদা পাচ্ছে না! মনে করা হচ্ছে, এ সব ইঙ্গিতের কারণেই সম্ভবত লেখাটি নাপসন্দ ও আপত্তিকর মনে হয়েছে চিনফিংয়ের নেট-নজরদারদের।

এ দেশে যাঁরাই ক্ষমতার অলিন্দে থাকেন, প্রায় সব ক্ষেত্রেই নিঃশব্দে সরে যাওয়ার পরে নীরবই থাকেন তাঁরা। ওয়েনের লেখা সেই নীরবতায় যতি টানতে চেয়েছিল বলেই হয়তো তা নিশ্চিহ্ন করে দিল চিন প্রশাসন।

China
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy