আমেরিকার সঙ্গে চিনের শুল্কযুদ্ধ জারি। তার মধ্যেই বেজিং জানাল, গত মাসে তাদের রফতানি ২০২৪ সালের মার্চ মাসের তুলনায় ১২.৪ শতাংশ বেশি। ব্লুমবার্গের সমীক্ষা যদিও অনুমান করেছিল, মার্চ মাসে চিনের এই রফতানি আগের বছরের তুলনায় ৪.৬ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বাস্তবে সেই সমীক্ষাকে ছাপিয়ে গিয়েছে চিনের রফতানি। মার্চে সবচেয়ে বেশি তারা রফতানি করেছে আমেরিকাতেই। চিনের শিল্পপতিদের একটা অংশ মনে করছেন, আমেরিকার শুল্কনীতির কারণে এই ছবিটা এপ্রিল থেকে বদলে যাবে। ধাক্কা খেতে পারে রফতানি বাণিজ্য। বেজিংয়ের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ কাস্টমস জানিয়েছে, মার্চে চিনের আমদানি কমেছে গত বছরের তুলনায় ৪.৩ শতাংশ।
চিনের পণ্যের উপর কড়া হারে শুল্ক চাপিয়েছিল আমেরিকা। প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আমেরিকার বাজারে চিনা পণ্যের উপর ১৪৫ শতাংশ শুল্ক চাপানোর কথা ঘোষণা করেন। কম যায়নি চিনও। শুক্রবার তারা ঘোষণা করে, এ বার থেকে মার্কিন পণ্যের উপর ১২৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক ধার্য করা হচ্ছে। তার পরে নড়েচড়ে বসে আমেরিকা। নয়া শুল্কনীতি থেকে মোবাইল এবং কম্পিউটারকে ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করে তারা। প্রসঙ্গত, মার্কিন বহুজাতিক প্রযুক্তি সংস্থা ‘অ্যাপল’-এর আইফোন এবং অন্য পণ্যগুলির বেশিরভাগই উৎপাদিত হয় চিনে। চিনা পণ্যে আমেরিকা যে চড়া হারে শুল্ক বসিয়েছে, সে কারণে আমেরিকার বাজারে ‘অ্যাপল’-এর পণ্যের দাম বৃদ্ধির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে মোবাইল এবং কম্পিউটারকে আমদানি শুল্কের নয়া নীতি থেকে বাদ দেয় ট্রাম্প প্রশাসন।
সোমবার বেজিং জানিয়েছে, গত জানুয়ারি থেকে মার্চে চিন সবচেয়ে বেশি পণ্য রফতানি করেছে আমেরিকায়। প্রায় ১১৫.৬ বিলিয়ন ডলারের পণ্য সে দেশে রফতানি করেছে তারা। ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় নয় লক্ষ কোটি টাকা। চিনা সংস্থা পিনপয়েন্ট অ্যাসেট ম্যানেজমেন্টের প্রধান অর্থনীতিবিদ ঝিয়েই ঝাং জানিয়েছেন, এই পরিসংখ্যান আমেরিকার শুল্ক চাপানোর আগে চিনের রফতানির হার প্রকাশ করেছে। তাঁর মতে, নতুন শুল্ক চাপানোর ফলে চিনের রফতানির হার অনেকটাই ধাক্কা খাবে। গত বছর চিনে সম্পত্তি কেনাবেচার ক্ষেত্র অনেকটাই ধাক্কা খেয়েছিল। তার পরে গৃহঋণ নীতি শিথিল করেছিল সরকার। তাতেও ধাক্কা পুরোপুরি সামলানো যায়নি। এর মধ্যে আমেরিকার শুল্ক চাপানোর ঘোষণা তাদের অর্থনীতিকে আরও বিপাকে ফেলতে পারে বলেই মনে করছেন দেশের অর্থনীতিবিদেরা।