Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

মরক্কোয় বৈঠক, পরিবেশ রক্ষার কী হবে, দুশ্চিন্তা বিশ্বে

প্রচার পর্বে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মহিলাদের শ্লীলতাহানি থেকে মেক্সিকানদের ধর্ষক বলা বা মুসলিমদের গলাধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেওয়ার কথা বলে সংবাদমাধ্যমের নজর কেড়েছিলেন তিনি।

মরক্কোর মারাকেশে প্রতিবাদে পড়ুয়ারা। ছবি: এএফপি।

মরক্কোর মারাকেশে প্রতিবাদে পড়ুয়ারা। ছবি: এএফপি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০১৬ ০৩:৩৫
Share: Save:

প্রচার পর্বে বার বার বিতর্কে জড়িয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মহিলাদের শ্লীলতাহানি থেকে মেক্সিকানদের ধর্ষক বলা বা মুসলিমদের গলাধাক্কা দিয়ে দেশ থেকে বার করে দেওয়ার কথা বলে সংবাদমাধ্যমের নজর কেড়েছিলেন তিনি। এমনকী বলেছিলেন, আমেরিকাকে পর্যুদস্ত করতেই বিশ্ব উষ্ণায়নের তত্ত্ব খাড়া করেছে চিন। শুধু তাই নয়, প্রেসিডেন্ট হলে প্যারিস চুক্তি থেকেও বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছিলেন তিনি। তাই এখন পরিবেশবিদদের মাথায় হাত! কী করবেন ট্রাম্প? বিশ্বের পরিবেশ রক্ষার্থে সত্যিই কি এ বার হাত গুটিয়ে নেবেন তিনি?

বিশ্বের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে মরোক্কোর মারাকেশ শহরে বৈঠকে বসেছেন পরিবেশবিদরা। এই নির্বাচনী ফলাফলে খানিকটা বিচলিত হলেও হাল ছাড়তে রাজি নন তাঁরা। বরং সবাই আশাবাদী, এ বার হয়তো বদলে যাবেন ট্রাম্প। প্রশান্ত মহাসাগরের মার্শাল দ্বীপপুঞ্জের প্রেসিডেন্ট হিলদা হেইন যেমন বললেন, ‘‘গত বছরে জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে বিতর্কে জড়িয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তবে এখন যখন নেতৃত্ব দেওয়ার বাস্তব পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন তিনি, তখন আশা করছি বুঝতে পারবেন জলবায়ু পরিবর্তন আমেরিকাবাসীদের কাছে এবং আমাদের মতো দেশের নাগরিকদের কাছে একটি বিপদ সঙ্কেত।’’ ঠিক একই সুর শোনা গিয়েছে ‘ইউনিয়ান অব কনসার্নড সায়েন্টিস্ট’ নামের আমেরিকার একটি বিজ্ঞানী-সংগঠনের ডিরেক্টরের গলাতেও। তাঁর কথায়, ‘‘বিশ্বে এখন অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি ট্রাম্প... কিন্তু তা-ও পদার্থ বিজ্ঞানের অমোঘ সূত্র বদলে দেওয়ার, কিংবা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বন্ধ করা বা সমুদ্রের জলস্তর বেড়ে যাওয়া আটকানোর ক্ষমতা তাঁর নেই! সুতরাং বাস্তবকে তাঁর মানতেই হবে।’’

এ বছরের ২২ এপ্রিল বিশ্বে উষ্ণায়নের মোকাবিলায় প্যারিস চুক্তিতে সই করেছিল একশোরও বেশি দেশ। ছিল আমেরিকাও। সেই চুক্তি অনুসারে, খেয়াল রাখা হবে পৃথিবীর তাপমাত্রা যেন বর্তমানের চেয়ে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি না বাড়ে। আরও ভাল হয় যদি উষ্ণায়নকে দেড় ডিগ্রি সেলসিয়াসের সীমায় বেঁধে রাখা যায়। প্রেসিডেন্ট হলে এই চুক্তি থেকেই বেরিয়ে আসার হুমকি দিয়েছিলেন ট্রাম্প। তবে পরিবেশবিদরা জানিয়েছেন, স্বস্তির বিষয় একটাই যে, নিজের ইচ্ছে

মতো এক্ষুণি ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসা যাবে না। কারণ, প্রথম তিন বছরে কোনও দেশ চুক্তি ভাঙতে পারে না। আর চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার এক বছর আগে সেই দেশকে তা জানাতে হবে। সুতরাং অন্তত ৪ বছরের আগে চুক্তি ভাঙতে পারবে না আমেরিকা।

তবে অনেক পরিবেশবিদেরই ধারণা, চুক্তি ভাঙার চরম পদক্ষেপটা হয়তো করবেন না ট্রাম্প। কিন্তু এ বিষয়ে তিনি তেমন একটা উৎসাহী না-ও হতে পারেন। অবশ্য সে ক্ষেত্রেও বিপদ! কারণ, প্যারিস চুক্তি অনুসারে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে ২০২০ সালের মধ্যে জলবায়ু-সুরক্ষা খাতে বছরে ন্যূনতম ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলার (ভারতীয় মূল্যে ৬ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা) অনুদান দিতে হবে। তাই ট্রাম্প যদি নীরব হয়ে যান, মুখ থুবড়ে পড়তে পারে এই চুক্তি।

তবে যে ট্রাম্প এক দিন বৈষম্যমূলক কথা বলে বিভেদ সৃষ্টি করতে চেয়েছিলেন, সেই তাঁর মুখেই গত কাল শোনা গিয়েছে ঐক্যের কথা। ‘‘বিভেদের ক্ষতে প্রলেপ লাগিয়ে আমেরিকাকে এ বার ঐক্যবদ্ধ’’ হওয়ার স্বপ্ন দেখাতে শুরু করেছেন তিনি। তাই ট্রাম্পের পরিবর্তনের অপেক্ষাতেই বুক বাঁধছেন পরিবেশবিদরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Trump Environmentalists Morocco
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE