বিমান তখন উড়ানের জন্য প্রস্তুত। ঠিক তখনই এক খেলোয়াড় তাঁর ভিডিও গেম খুঁজে পাচ্ছিলেন না। উড়ান শুরু না করেই হন্তদন্ত হয়ে খেলোয়ারের ভিডিও গেম খুঁজতে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন পাইলট। ফল, উড়ানে অনেকটা দেরি। এ দিকে রাত হয়ে যাওয়ায় বন্ধ হয়ে যায় জ্বালানি ভরার বিমানবন্দরও। যার ফলেই হল ওই বিমান দুর্ঘটনা। জ্বালানি ফুরিয়ে গিয়ে মাঝ আকাশেই ভেঙে পড়ে ব্রাজিলের ক্লাব দল চাপেকোয়েনসের বিমান। সম্প্রতি ব্রাজিলের ফুটবল ক্লাব দল নিয়ে বিমান ভেঙে পড়ার কারণ হিসেবে এমনই তথ্য সামনে উঠে এল।
কী ভাবে জানা গেল এই তথ্য?
বিমান ওড়ার ঠিক আগের মুহূর্তে ওই ক্লাব ফুটবল দলের ডিরেক্টর চিনহো ডি দোমেনিকো ফুটবলারদের একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ করে দেরি হওয়ার কারণ জানিয়েছিলেন। তিনি মেসেজে লেখেন, ‘‘এক ফুটবলারের ভিডিও গেম খুঁজতে গিয়েই পাইলট বিমান ওড়াতে দেরি করছেন।’’ ওই দলের ফুটবলার দেমারসন কস্টা (তিনি ওই বিমানে ছিলেন না) মেসেজটি প্রকাশ্যে আনেন। জানা গিয়েছে, ওই খেলোয়াড়ের ব্যাগের মধ্যে ভিডিও গেমটি ছিল। অন্যান্য ব্যাগের সঙ্গে সেই ভিডিও গেমের ব্যাগটিও বিমানের নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দেওয়া হয়েছিল। বিমানে বসার পরই তাঁর ভিডিও গেমের কথা খেয়াল হয়। ব্যাগ খুঁজে ভিডিও গেম তাঁর কাছে পৌঁছে দিতে গিয়েই পাইলট উড়ান শুরু করতে দেরি করেন। তার উপর আরও বিপত্তি ঘটে জ্বালানি ভরা নিয়ে। ওই বিমানটির কলম্বিয়ার পৌঁছনোর আগে বগোটা বিমানবন্দরে জ্বালানি ভরার কথা ছিল। কিন্তু দেরিতে উড়ান শুরু করায় বগোটায় পৌঁছতে অনেকটা রাত হয়ে যায়। তত ক্ষণে বগোটা বিমানবন্দর বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে সেই অপর্যাপ্ত জ্বালানি নিয়েই পাইলট বিমান উড়িয়ে কলম্বিয়ায় পৌঁছতে চান। এ জন্য অতিরিক্ত ২০ মিনিট বিমানটিকে আকাশে থাকতে হয়েছে, যা বিমানের ক্ষমতা সীমার অনেক বেশি। যার ফলেই বিমানের সমস্ত জ্বালানি শেষ হয়ে গিয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে।
৭২ জন যাত্রী এবং ন’জন বিমানকর্মীকে নিয়ে ওই বিমানটি কলম্বিয়ার উদ্দেশে রওনা দিয়েছিল সোমবার দুপুরে। স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ বিমানটি ব্রাজিলের সাও পাওলো বিমানবন্দর থেকে উড়ান শুরু করে। কিন্তু, কলম্বিয়ার মেডেলিন বিমানবন্দরে অবতরণ করার আগেই ওই দিন স্থানীয় সময় রাত সওয়া ১০টা নাগাদ বিমানটি মাঝআকাশে ভেঙে পড়ে। মারা যান ৭৬ জন যাত্রী।
আরও পড়ুন: জ্বালানি শেষ নামতে চাই, পাইলটের শেষ আর্তির অডিও সামনে এল