E-Paper

বাংলাদেশের মানবাধিকার নিয়ে উদ্বেগ রাষ্ট্রপুঞ্জের আলোচনায়

বক্তারা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, নির্বিচারে গ্রেফতার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপরে বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে মৌলিক মানবাধিকার নিয়মিত লঙ্ঘিত হচ্ছে।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ০৬ অক্টোবর ২০২৫ ০৭:৩৬
আলোচিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামে অশান্তির কথাও।

আলোচিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামে অশান্তির কথাও। —প্রতিনিধিত্বমূলক চিত্র।

অন্তবর্তিকালীন সরকারের শাসনাধীন বাংলাদেশে দারুণ ভাবে মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে— জেনিভায় রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের ৬০তম অধিবেশনের একটি সেমিনারে এই উদ্বেগপ্রকাশ করা হয়েছে। এই অবস্থা বদলে আন্তর্জাতিক মহলকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানানো হয়েছে। সেখানে আলোচিত হয়েছে সাম্প্রতিককালে চট্টগ্রামে অশান্তির কথাও।

‘বাংলাদেশে মৌলিক মানবাধিকার, আইনের শাসন ও গণতন্ত্রের লঙ্ঘন’ শীর্ষক সেমিনারটি সম্প্রতি যৌথ ভাবে আয়োজন করেছিল ‘সেন্টার ফর জেন্ডার জাস্টিস অ্যান্ড উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট’, ‘গ্লোবাল সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাটিক গভর্নেন্স’, এবং ‘ইন্টারন্যাশনাল ফোরাম ফর সেকুলার বাংলাদেশ’। বিভিন্ন দেশের অন্তত একশো জন অংশগ্রহণকারী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। বক্তারা অভিযোগ করেছেন, বাংলাদেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, নির্বিচারে গ্রেফতার, বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড এবং মতপ্রকাশের স্বাধীনতার উপরে বিধিনিষেধ আরোপের মাধ্যমে মৌলিক মানবাধিকার নিয়মিত লঙ্ঘিত হচ্ছে।

সেমিনারে উল্লেখ করা হয় যে, রাষ্ট্রপুঞ্জের মানবাধিকার কমিশনের গত ফেব্রুয়ারির প্রকাশিত প্রতিবেদনে ২০২৪ সালের জুলাই-অগস্টে সংগঠিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলি উপস্থাপনের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে এবং সম্পাদনাগত ত্রুটি লক্ষণীয়।

‘গ্লোবাল সেন্টার ফর ডেমোক্র্যাটিক গভর্নেন্স’-এরসভাপতি মো. হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘‘প্রকাশিত প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্পাদনাগত মানদণ্ড অনুযায়ী সম্পাদিত হয়নি। যদি প্রতিবেদনটি রাষ্ট্রপুঞ্জের সম্পাদনাগত নির্দেশিকা অনুসারে সম্পাদিত না হয়ে থাকে, তাহলে এটি প্রকাশ করা হল কেন?” ‘সাউথ এশিয়া ডেমোক্র্যাটিক ফোরাম’-এর প্রতিষ্ঠাতা তথা নির্বাহী পরিচালক পাওলো কাসাকার বক্তব্য, যদি আওয়ামী লীগের মতো দলকে বাদ দিয়ে বাংলাদেশে জাতীয় নির্বাচন হয়, তবে তা ‘জালিয়াতিপূর্ণ নির্বাচন’ হিসেবে গণ্য হবে।

‘রাইটস অ্যান্ড রিস্কস অ্যানালাইসিস গ্রুপ’-এর পরিচালক সুহাস চাকমা বাংলাদেশের মানবাধিকার পরিস্থিতি মোকাবিলায় নতুন করে উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান এবং অবিলম্বে একটি স্বাধীন মানবাধিকার পরিষদ গঠনের দাবি জানান। রীতিমতো পরিসংখ্যান দিয়ে তিনি জানান, গত এক বছরে বাংলাদেশে ৬৩৭টি গণপিটুনির ঘটনা ঘটেছে। ৮৭৮ জন সাংবাদিকের উপরে হামলা হয়েছে। ২৪৮৫টি ঘটনা ঘটেছে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে এবং ৫,০০,০০০-এরও বেশি বিরোধী রাজনৈতিক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মিথ্যা মামলা হয়।

সুহাসের অভিযোগ, মুহাম্মদ ইউনুসের অন্তর্বর্তী সরকার গত ৭ নভেম্বর জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সব সদস্যকে বরখাস্ত করেছিল। এখনও পর্যন্ত বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনে নতুন সদস্য নিয়োগ করা হয়নি। ‘ইউরোপিয়ান বাংলাদেশ ফোরাম’-এর ক্রিস ব্ল্যাকবার্নও পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনাগুলির বিশেষ উল্লেখ করেন।

২০২৪ সালের বাংলাদেশে পালাবদলের পরে নারী নির্যাতন উদ্বেগজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে অভিযোগ। সেমিনারে নারী নির্যাতন এবং শিশু অধিকার লঙ্ঘন নিয়ে সরব হয়েছিল ‘নেভার এগেন অ্যাসোসিয়েশন’ প্রতিনিধি নাতালিয়া সিনায়েভা।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bangladesh UN

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy