Advertisement
E-Paper

‘ট্রাম্প প্রশাসনে এমন বিভাজন, আগে দেখিনি’

প্রেসিডেন্ট নিজে যদিও ‘ট্রাম্পোচিত’ ভঙ্গিতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছেন। পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ায় প্রথমে শুভেচ্ছা এবং তার পরেই ব্যাননকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প আজ টুইট করেন, ‘‘ভুয়ো খবরের দুনিয়ায় এমন প্রতিদ্বন্দ্বীরই বড় প্রয়োজন ছিল।’’ অবশ্য ডোমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে ভোটে জিতে আসার ক্ষেত্রে ব্যাননের ভূমিকার প্রশংসাও করেন প্রেসিডেন্ট।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০১৭ ০৩:২০
সে-দিন: ব্যাননের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের ফাইল ছবি।

সে-দিন: ব্যাননের সঙ্গে ডোনাল্ড ট্রাম্প। রয়টার্সের ফাইল ছবি।

যুদ্ধের ডাক দিয়েছিলেন ছাঁটাই হওয়ার পর-পরই। এ বার ‘শত্রুশিবির’-এর ফাঁকফোকর খুঁজতেও মাঠে নামলেন স্টিভ ব্যানন। দিন দু’য়েক আগেও ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখ্য পরামর্শদাতা। ষাটোর্ধ্ব সেই ব্যাননকেই গত কাল সরাসরি তোপ দাগতে শোনা গেল ‘দ্বিধাবিভক্ত’ এবং ‘দিশাহীন’ হোয়াইট হাউসের বিরুদ্ধে। তাঁর কথায়, ‘‘প্রশাসনের অন্দরে এমন বিভাজন, এর আগে কোনও জমানায় দেখিনি।’’

হোয়াইট হাউসের পাট চুকিয়ে ব্যানন এখন পুরোদস্তুর সাংবাদিক-সম্পাদক। শুক্রবার প্রেসিডেন্টের নির্দেশে সরকারি চাকরি খোয়ানোর পরেই তিনি ফিরে যান তাঁর পুরনো কর্মস্থলে। সেই ব্রেইটবার্ট-এরই মুখ্য সম্পাদক হয়ে, গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের আগে ট্রাম্পের সমর্থনে যারা বিস্তর প্রচার চালিয়েছিল। মার্কিন মুলুকে ব্রেইটবার্টের পরিচিতি চরম ডানপন্থী সংবাদমাধ্যম হিসেবে। আগে যা-ই হয়ে থাক, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে অবশ্য ট্রাম্প-প্রশাসনের বিরুদ্ধেই ধারাবাহিক প্রচার চালাচ্ছে ব্রেইটবার্ট। মার্কিন কূটনীতিকদের একাংশ বলছেন, ব্যাননকে ছেঁটে পরোক্ষে বিরোধী-পক্ষকেই আরও শক্তিশালী করে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। কারণ, প্রচারের সময় থেকে ট্রাম্পের ‘ঘনিষ্ঠ বৃত্তে’ থাকা ব্যানন হাড়ে হাড়ে চেনেন ট্রাম্পকে। তাই আগামী দিনে তিনি কী বোমা ফাটান, সে দিকেই কান পেতে হোয়াইট হাউস।

প্রেসিডেন্ট নিজে যদিও ‘ট্রাম্পোচিত’ ভঙ্গিতেই পরিস্থিতি সামাল দিতে চাইছেন। পুরনো চাকরিতে ফিরে যাওয়ায় প্রথমে শুভেচ্ছা এবং তার পরেই ব্যাননকে কটাক্ষ করে ট্রাম্প আজ টুইট করেন, ‘‘ভুয়ো খবরের দুনিয়ায় এমন প্রতিদ্বন্দ্বীরই বড় প্রয়োজন ছিল।’’ অবশ্য ডোমোক্র্যাট প্রতিদ্বন্দ্বী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধে ভোটে জিতে আসার ক্ষেত্রে ব্যাননের ভূমিকার প্রশংসাও করেন প্রেসিডেন্ট। ব্যানন বরাবরই ‘শ্বেতাঙ্গ আধিপত্যবাদে’ বিশ্বাসী। বস্তুত সেই কারণেই ট্রাম্পের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে তাঁর। কিন্তু সূত্রের খবর, ইদানীং দু’জনের বোঝাপড়ায় ঘাটতি দেখা গিয়েছিল। ট্রাম্পই আর আস্থা রাখতে পারছিলেন না ব্যাননে। অনেকে আবার বলছেন, ব্যাননকে সরাতে কলকাঠি নেড়েছেন ট্রাম্পের মেয়ে ইভাঙ্কা ট্রাম্প ও জামাই জ্যারেড কুশনার।

আরও পড়ুন: কাশ্মীর প্রশ্নে কখনই সমর্থন নয় পাকিস্তানকে, জানাল ইজরায়েল

শুরুটা জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা মাইকেল ফ্লিনকে দিয়ে। তার পর একে একে হোয়াইট হাউসের মিডিয়া সচিব শন স্পাইসার, চিফ অব স্টাফ রেন্স প্রিবাস এবং কমিউনিকেশন্স ডিরেক্টর স্কারামুচি। ব্যারনকে নিয়ে গত ৮ মাসে ট্রাম্প প্রশাসনের ৫ শীর্ষ কর্তাকে হোয়াইট হাউস ছাড়তে হলো।

তবে ছাঁটাই তালিকায় এই সাম্প্রতিক সংযোজনটাই চিন্তা বাড়িয়েছে মার্কিন কূটনীতিকদের। শুধু প্রচারে নয়, প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ‘আমেরিকা ফার্স্ট’ নীতি এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রেও ব্যাননের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি খারিজ থেকে শুরু করে টিপিএ বাণিজ্য চুক্তি বাতিল, শরণার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা— সার্বিক অর্থেই ট্রাম্পের মন্ত্রণাদাতা ছিলেন ব্যানন। ট্রাম্পের চাকরি করতে গিয়ে দেশের সংবাদমাধ্যমের একটা বড় অংশকে ‘বিরোধী’ তকমাও দিয়েছিলেন। ব্যানন তা হলে হঠাৎ কেন ট্রাম্পের বিরাগভাজন হলেন? অভিযোগ, তিনিই সংবাদমাধ্যমের কাছে হোয়াইট হাউসের সব তথ্য ফাঁস করে দিচ্ছিলেন।

সেটাই একমাত্র কারণ? কূটনীতিকদের একাংশ মনে করিয়ে দিতে চাইছেন গত ফেব্রুয়ারিতে এক মার্কিন সংবাদমাধ্যমের সেই প্রচ্ছদের কথা। যেখানে ব্যাননের ছবি বড় করে ছেপে লেখা হয়েছিল— ইনিই কি বিশ্বের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি! প্রচ্ছদ নিবন্ধটিতে ট্রাম্পকে পরোক্ষে ব্যাননের হাতের পুতুল বলেও ইঙ্গিত করা হয়। ট্রাম্পের গাত্রদাহ কি তখন থেকেই— উত্তর খুঁজছে আমেরিকা।

Donald Trump Steve Bannon White House স্টিভ ব্যানন আমেরিকা ডোনাল্ড ট্রাম্প
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy