Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪
Coronavirus

বিপুল চাহিদা, উৎপাদনে ঘাটতি, থামল রাশিয়ার কোভিড টিকার প্রয়োগ

মস্কোয় মোট ২৫টি কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা দেওয়ার কাজ চলছিল। তার মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে ৮টি কেন্দ্রে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সংবাদ সংস্থা
মস্কো ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ৩০ অক্টোবর ২০২০ ১৬:১৩
Share: Save:

ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শেষ না করেই করোনার টিকা প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিল রাশিয়া। সেই টিকা নিয়ে এ বার নিজেই বিপাকে রাশিয়া। পর্যাপ্ত সংখ্যায় টিকা না থাকায় মস্কোর বেশ কয়েকটি কেন্দ্রে বন্ধ হয়ে গিয়েছে ‘স্পুটনিক ভি’-র পরীক্ষামূলক প্রয়োগ। অন্য দিকে অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি করোনার টিকা শেষ পর্যায়ে রয়েছে। এগিয়ে চলেছে ভারতও। দেশে টিকা চূড়ান্ত হওয়ার পর বিশ্বের অন্যান্য দেশেও সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে ভারতীয় বিদেশমন্ত্রক।

যে কোনও টিকা আবিষ্কারের আগে তৃতীয় ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল বা পরীক্ষামূলক প্রয়োগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এই পর্যায়েই সবচেয়ে বেশি মানুষের দেহে প্রয়োগ করা হয় টিকা। রাশিয়ার তৈরি করোনার টিকা স্পুটনিক ভি-র সেই তৃতীয় তথা শেষ ধাপের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল সবে শুরু হয়েছিল। তার মধ্যেই সেই টিকা প্রয়োগের অনুমোদন দিয়ে দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন বিশ্বের চিকিৎসা বিজ্ঞানী ও বিশেষজ্ঞরা। পরীক্ষামূলক প্রয়োগের ফল কোনও বিজ্ঞান পত্রপত্রিকায় প্রকাশ না করা নিয়েও প্রশ্নের মুখে পড়ে মস্কো। কিন্তু তার পরেও টলানো যায়নি। স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা দেওয়ার কর্মসূচি থামায়নি পুতিন প্রশাসন।

এ বার অবশ্য থামাতে বাধ্য হল। কারণ, পর্যাপ্ত উৎপাদন নেই টিকার। একটি আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমের খবর, মস্কোয় মোট ২৫টি কেন্দ্রে স্বেচ্ছাসেবকদের টিকা দেওয়ার কাজ চলছিল। তার মধ্যে বন্ধ রাখা হয়েছে ৮টি কেন্দ্রে। প্রশাসনিক সূত্রে দাবি করা হয়েছে, প্রচুর সংখ্যক স্বেচ্ছাসেবক টিকা নিতে আগ্রহী। কিন্তু চাহিদার তুলনায় ওই পরিমাণ টিকা উৎপাদন করা যাচ্ছে না। সেই কারণেই আপাতত নতুন স্বেচ্ছাসেবকদের টিকাদান বন্ধ রাখা হয়েছে।

আরও পড়ুন: দেশে করোনায় মৃত্যু বাড়ল লাফিয়ে, স্বস্তি নতুন আক্রান্ত ও সুস্থতার হারে

ভারতেও রাশিয়ার এই টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ চালিয়ে যাচ্ছিল দেশীয় সংস্থা ‘ডক্টর রেড্ডিস ল্যাবরেটরিজ’। কিন্তু ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের সবক’টি পর্ব সম্পূর্ণ না করেই টিকার অনুমোদন দিয়ে দেওয়ার পরেই ভারতের সেই ট্রায়াল বন্ধ করতে বলে দিয়েছিল ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অব মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)। কার্যকারিতা পুরোপুরি প্রমাণ হওয়ার আগেই সাধারণ নাগরিকদের টিকা দেওয়া নিয়ে বিজ্ঞানীদের একাংশ মনে করছেন, কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিলে তার ফল ভুগতে হবে বিপুল সংখ্যক মানুষকে।

আরও পড়ুন: কোভিড রোগীর নেগেটিভ রিপোর্ট আসা মানেই কিন্তু সুস্থতা নয়

‘স্পুটনিক ভি’ থামিয়ে দিলেও ভারতে অন্যান্য যে টিকার কাজ চলছে, সেগুলি চূড়ান্ত হলে সারা বিশ্বকেই তা সরবরাহ করা হবে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, সম্প্রতি ভারত দু’টি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। প্রতিবেশী দেশগুলি থেকে তাতে যোগ দিয়েছিলেন প্রায় ৯০ জন প্রতিনিধি। তিনি বলেন, ‘‘রাষ্ট্রপুঞ্জের সাধারণ সভায় প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেছিলেন, ভারতের টিকা উৎপাদন ও সরবরাহের যে ক্ষমতা রয়েছে তা বিশ্ববাসীর কল্যাণে ব্যবহার করা হবে।’’ সেই অনুযায়ী কাজ চলছে বলেও জানিয়েছেন অনুরাগ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE