স্বাধীন বাংলাদেশের তিনিই প্রথম ‘নির্বাসিত’ কবি। এক দশকেরও বেশি সময় ভারতে কাটিয়ে চলে যান জার্মানি। বার্লিনেরই এক বৃদ্ধাবাসে কাল রাতে মারা গেলেন সত্তর দশকের বিতর্কিত কবি দাউদ হায়দার। ৭৩ বছর বয়সে।
অকৃতদার দাউদের পরিবার সূত্রে জানানো হয়েছে, বেশ কয়েক বছর ধরেই নানা রকম শারীরিক সমস্যায় ভুগছিলেন কবি। গত বছর ডিসেম্বরে বাড়িতে পড়ে গিয়ে মস্তিষ্কে গুরুতর চোট পান। দীর্ঘদিন হাসপাতালের আইসিইউতে থাকার পরে ছাড়া পেয়ে চলে গিয়েছিলেন বৃদ্ধাবাসে।
১৯৭৪-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের একটি সংবাদপত্রে প্রকাশিত হয়েছিল দাউদের কবিতা ‘কালো সূর্যের কালো জ্যোৎস্নার কালো বন্যায়’। যে কবিতা পড়ে বিভিন্ন ধর্মের মানুষের ভাবাবেগ ক্ষুণ্ণ হয় এবং তাঁকে গ্রেফতারের দাবিতে প্রবল বিক্ষোভ হয় দেশজুড়ে। ১১ মার্চ গ্রেফতার করা হয় দাউদকে। বিচারের পরে সে বছরই ২১ মে তাঁকে নির্বাসন দেয় বাংলাদেশ সরকারে। কলকাতায় চলে যান কবি। সেখানেই ছিলেন ১৩ বছর। ১৯৮৭ সালে চলে আসেন জার্মানিতে। পেশা হিসেবে বেছে নেন সাংবাদিকতাকে।
বাংলাদেশ-সহ ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন অংশ যখন ধর্মীয় প্ররোচনা ও সন্ত্রাসে ক্লিষ্ট, তখনইমারা গেলেন দাউদ। রেখে গেলেন এই লাইন ক’টি— ‘মাতৃজরায়ু থেকে নেমেই জেনেছি আমি/ সন্ত্রাসের ঝাঁঝালো দিনে বিবর্ণ পত্রের মত হঠাৎ ফুৎকারে উড়ে যাই।’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)