প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ফেরাতে দিল্লির কাছে প্রয়োজনীয় নথিপত্র পাঠিয়েছে ঢাকা। বৃহস্পতিবার এমনটাই দাবি করল বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রক। সে দেশের সংবাদমাধ্যম‘প্রথম আলো’-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র মহম্মদ রফিকুল আলম জানিয়েছেন, ভারতের সঙ্গে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির অধীনে হাসিনাকে ফেরাতে চেয়ে এই কাগজপত্র পাঠানো হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে আরও জানানো হয়েছে যে, হাসিনাকে সে দেশে ফেরানোর জন্য নথিপত্র পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে দিল্লিতে। এ বার কূটনৈতিক ভাবে অপেক্ষা করবে তারা। বাংলাদেশ প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, জুলাইয়ে গণআন্দোলনের সময় সে দেশে যে ‘হত্যাকাণ্ড’ হয়েছে, তার বিচার করতে চাইছে মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকার। সে জন্যই তারা হাসিনাকে দেশে ফেরাতে তৎপর। বাংলাদেশের বিদেশ মন্ত্রকের তরফে দাবি করা হয়েছে হয়েছে, ভারতে আওয়ামী লীগের যে নেতারা রয়েছেন, তাঁদের ফেরাতে আন্তর্জাতিক নীতি প্রয়োগ করা হবে কি না, সেই নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা করবে অন্তর্বর্তী সরকার।
গণ আন্দোলনের কারণে গত বছর ৫ অগস্ট বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন হাসিনা। তার পরেই দেশ ছাড়েন। তার পর থেকে তিনি ভারতে রয়েছেন। গত বছর ডিসেম্বরে হাসিনাকে ফেরত পাঠানোর কথা বলে দিল্লিকে ‘নোট ভারবাল’ (কূটনৈতিক বার্তা) দিয়েছিল ঢাকা। ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল তার প্রাপ্তিস্বীকারও করেছিলেন। তবে সেই নিয়ে তখন কোনও মন্তব্য তিনি করেননি। ‘প্রথম আলো’র প্রতিবেদন অনুযায়ী, সে সময় রফিকুল জানিয়েছিলেন নয়াদিল্লি থেকে উত্তর পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তাঁরা। এ বার নয়াদিল্লিকে এই বিষয়ে নথিপত্র পাঠানো হয়েছে বলে দাবি করলেন তিনি।
আরও পড়ুন:
হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর তাঁর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রুজু হয়। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা সাইদুর রহমানের খুনের ঘটনায় বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়। হাসিনা বাংলাদেশ ছাড়ার পর থেকে সে দেশের বিভিন্ন থানায় অন্তত ২৩৩টি ফৌজদারি মামলা দায়ের হয় তাঁর বিরুদ্ধে। এর মধ্যে ১৯৮টি ক্ষেত্রে খুনের অভিযোগ আনা হয়। হাসিনা-সহ ১৪৩ জনের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনাল। এ বার বিদেশমন্ত্রকের দাবি, হাসিনাকে ফেরাতে প্রয়োজনীয় নথি পাঠানো হয়েছে ভারতকে।