(বাঁ দিকে) আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এবং ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
গাজ়া ভূখণ্ডের দখল নেবে আমেরিকাই! বুধবার এমনই ঘোষণা করলেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুধু তা-ই নয়, গাজ়াকে অর্থনৈতিক ভাবে শক্তিশালী করে তোলার কথাও শোনা গেল ট্রাম্পের কণ্ঠে। তিনি জানান, ইজ়রায়েলি এবং প্যালেস্টাইনের সংঘাতে এত দিন আমেরিকা যে নীতি নিয়েছে তা ভেঙে দেবেন।
ইজ়রায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এখন আমেরিকা সফরে। মঙ্গলবার তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন ট্রাম্প। স্বভাবতই, সেই বৈঠকে আলোচনার অন্যতম বিষয়ই ছিল ইজ়রায়েল-হামাস যুদ্ধপরিস্থিতি। সেই বৈঠকের পর নেতানিয়াহু এবং ট্রাম্প যৌথ সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানেই গাজ়া দখলের হুঁশিয়ারি দেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। তবে তিনি এ-ও জানান, গাজ়া ভূখণ্ড থেকে প্যালেস্টাইনদের স্থায়ী ভাবে প্রতিবেশী দেশগুলিতে পুনর্বাসন করার কথাও ভাবা হচ্ছে। অনেকের মতে, গাজ়ায় বড়সড় হামলার পরিকল্পনা করতে পারে আমেরিকা।
ট্রাম্প বলেন, ‘‘আমেরিকা গাজ়া ভূখণ্ডের দখল নেবে। আমরা ওই ভূখণ্ডের মালিক হব। সেখানে থাকা সমস্ত বিপজ্জনক বোমা এবং অন্যান্য অস্ত্র ধ্বংস করব।’’ তাঁর দাবি, ‘‘আমরা গাজ়াতে উন্নতি করব। সেখানে হাজার হাজার কর্মসংস্থান তৈরি হবে। এমন কিছু হবে, যার জন্য পশ্চিম এশিয়া গর্ববোধ করবে।’’ প্যালেস্টাইনিদের গাজ়া থেকে সরিয়ে অন্যত্র পুনর্বাসন দেওয়া হলে, সেখানে কারা থাকবেন? রহস্য রেখেই ট্রাম্পের জবাব, বিশ্বের মানুষের বাসস্থল হবে গাজ়া!
ট্রাম্পের সঙ্গে ‘একমত’ নেতানিয়াহু। আমেরিকার প্রেসিডেন্টের প্রশংসা করে তিনি বলেন, ‘‘ট্রাম্প সাধারণ ধারণার খোলস ভেঙে ফেলার চেষ্টা করছেন।’’ তবে কী ভাবে ট্রাম্প নিজের ‘স্বপ্ন’ বাস্তবায়িত করবেন, তা স্পষ্ট করে কিছু জানাননি। তাঁর দাবি, ‘‘সময় এলেই জানতে পারবেন!’’ তিনি জানান, এ ব্যাপারে আঞ্চলিক নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন। তাঁর চিন্তাভাবনার সমর্থনও পেয়েছেন বলে জানান ট্রাম্প। প্যালেস্টাইনদের গাজ়া ছাড়া করার ইচ্ছা ট্রাম্পের অনেক দিনের। অতীতেও বার বার তিনি সেই কথা জানিয়েছেন। প্রতিবেশী দেশগুলি যাতে প্যালেস্টাইনিদের থাকতে দেয়, সেই আহ্বানও জানিয়েছেন ট্রাম্প। যদিও স্বাধীনতাপন্থী সশস্ত্র প্যালেস্টাইনি গোষ্ঠী হামাস তাঁর বিরোধিতা করেছে। তাদের দাবি, কোনও ভাবে তারা বিনাযুদ্ধে নিজের জায়গা ছাড়বে না!
পশ্চিম এশিয়ায় আমেরিকার অন্যতম কূটনৈতিক ‘সঙ্গী’ ইজ়রায়েল। হামাসের সঙ্গে ইজ়রায়েলের যুদ্ধে প্রথম থেকেই নেতানিয়াহু সরকারের পাশে দাঁড়িয়েছে। অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করেছে। তবে গাজ়ায় যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে দীর্ঘ দিন ধরে সেখানে অস্থিরতা রয়েছে। মাঝেমধ্যেই বোমা পড়ছে। মৃত্যু হচ্ছে সাধারণ মানুষের। যুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে ইজ়রায়েল ও গাজ়া দু’প্রান্তেই প্রচুর ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। দু’প্রান্ত থেকেই বোমা বর্ষণ চলে মাঝে মধ্যেই। দুই পক্ষই কখনও দায় মেনে নেয়, কখনও মানে না।
প্রসঙ্গত, কাতারের মধ্যস্থতায় এবং আমেরিকা ও মিশরের প্রচেষ্টায় গত ১৫ জানুয়ারি রাতে যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয় ইজ়রায়েল সরকার এবং হামাস। ১৯ জানুয়ারি থেকে তা কার্যকর হয়েছে। তার পর থেকেই যুদ্ধবিরতির অন্যতম শর্ত হিসাবে শুরু হয়েছে বন্দি বিনিময়ের প্রক্রিয়া। সেই সঙ্গে বিভিন্ন এলাকায় ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে নিহতদের দেহের সন্ধানও শুরু হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy