Advertisement
E-Paper

দু’সপ্তাহ কি ট্রাম্পের ‘ছলনা’ই ছিল? কবে তৈরি হয়েছিল ইরানে হামলার নীলনকশা, কখন চূড়ান্ত নির্দেশ দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট

ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকা ইরানে হামলা চালাবে কি না, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মন্তব্যের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে চালিয়ে দিল আমেরিকা।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০২৫ ২১:৪৬

গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়িয়ে আমেরিকা ইরানে হামলা চালাবে কি না, সেই সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য দু’সপ্তাহ সময় নিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সেই মন্তব্যের ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই ইরানের তিন পরমাণুকেন্দ্রে হামলা চালিয়ে দিল আমেরিকা। তার পর থেকেই বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, ট্রাম্প কি দু’সপ্তাহের কথা বলে আসলে ‘ছলনা’ই করেছিলেন?

রবিবার ভোরে (ভারতীয় সময় অনুযায়ী) ট্রাম্প জানিয়েছেন, ইরানের নাতানজ়, ফোরডো এবং ইসফাহান পরমাণু কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। এই হামলা চালাতে ‘বাঙ্কার বাস্টার’ এবং ‘বি ২ বম্বার’ ব্যবহার করা হয়েছে। রয়টার্স-এর প্রতিবেদন বলছে, ইরানের ফোরডো পরমাণুকেন্দ্রে ছ’টি ‘বাঙ্কার বাস্টার’ বোমা ফেলা হয়েছে। ‘জিবিইউ-৫৭ ম্যাসিভ অর্ডন্যান্স পেনিট্রেটর’ (এমওপি) নামেও পরিচিত এই বোমা। তা ফেলার জন্য বি ২ স্পিরিট বোমারু বিমানকে ব্যবহার করেছে আমেরিকা, যে বিমান ১৫ টন ওজনের বোমা বহনে সক্ষম।

ইরানে হামলার ঘটনাকে আমেরিকা এবং ইজ়রায়েলের জন্য ‘ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলেও বর্ণনা করেছেন। পাশাপাশি এই বার্তাও দিতে চেয়েছেন যে, প্রয়োজনে এই হামলার তেজ আরও বাড়াতে প্রস্তুত আমেরিকা। শুধু ‘বাঙ্কার বাস্টার’ই নয়, আমেরিকার নৌবাহিনীও টোমাহক ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে ইরানের দু’টি পরমাণু কেন্দ্র নাতানজ় এবং ইসফাহানে হামলা চালিয়েছে বলে দাবি।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ট্রাম্প প্রশাসনের এক আধিকারিক মার্কিন সংবাদপত্র ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-কে জানিয়েছেন, গত মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে একটি বৈঠকেই ইরানের হামলার বার্তা দিয়ে দিয়েছিলেন ট্রাম্প। কিন্তু সেই সময় তিনি চূড়ান্ত অনুমতি দেননি। ট্রাম্পের বার্তাতেই সকলে বুঝে গিয়েছিলেন, আমেরিকা হামলা করতে চলেছে ইরানে। সেই মতো বৈঠকের পরেই হামলার নীলনকশা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

মার্কিন সংবাদপত্রের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ট্রাম্প সেই সময় হামলার চূড়ান্ত অনুমোদন দেননি। কারণ, তিনি চাইছিলেন, যদি কোনও ভাবে ইরানকে আলোচনার টেবিলে নিয়ে আসা যায়। আমেরিকার বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফও আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। কিন্তু সেই প্রচেষ্টা ফলপ্রসূ হয়নি। ব্রিটেন, জার্মানি এবং ফ্রান্সের সঙ্গে ইরানের পরমাণু বৈঠকও ব্যর্থ হয়েছে। ইরান সেখানে বলেছে, তারা সমঝোতায় প্রস্তুত নয়। আর ইজ়রায়েল যে ভাবে হামলা চালিয়ে যাচ্ছে, তাতে আলোচনা চালিয়ে যাওয়াও সম্ভব নয়। এর পর আর কূটনৈতিক আলোচনার কথা না ভেবেই হামলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

ট্রাম্প প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের মত, গোটা বিষয়টি নিয়ে একটা অনিশ্চয়তা তৈরি করাই লক্ষ্য ছিল ট্রাম্পের। তাই তিনি দু’সপ্তাহের কথা বলেছিলেন। কিন্তু হামলায় ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই মার্কিন প্রেসিডেন্টের চূড়ান্ত অনুমতি মেলে। ট্রাম্প প্রশাসনের এক আধিকারিক বলেছেন, ‘‘উদ্দেশ্যটা ছিল— এমন একটা পরিস্থিতি তৈরি করা, যা কারও মাথাতেই আসবে না।’’

গত ১৩ জুন ইরানের পরমাণুকেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। তাতে নিহত হন সে দেশে ন’জন পরমাণুবিজ্ঞানী। সামরিক কর্তাদেরও প্রাণ যায়। পাল্টা ইজ়রায়েলে হামলা শুরু করে ইরান। সেই সংঘাতে এ বার জড়াল আমেরিকা।

Donald Trump Iran israel
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy