গোপনে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষানিরীক্ষা চালাচ্ছে পাকিস্তান, চিন-সহ চার দেশ। রবিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিবিএস নিউজ়-কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে এমনই দাবি করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। সম্প্রতি আমেরিকায় নতুন করে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। নিজের সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প বলেন, “বাকি দেশগুলি (পরমাণু অস্ত্র) পরীক্ষা করছে। আমরা একমাত্র দেশ, যারা পরীক্ষা করছি না। আমরাও পিছিয়ে থাকতে চাই না।”
সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প বলেন, “আমরা পরীক্ষা করছি, কারণ বাকিরাও পরীক্ষা করছে।” একই সঙ্গে ট্রাম্পের সংযোজন, “হঠাৎই উত্তর কোরিয়া পরীক্ষা করছে। পাকিস্তান পরীক্ষা করছে। তারা কিন্তু আপনাকে গিয়ে এই খবর দেয়নি। তারা গোপনে এই পরীক্ষা করছে, যাতে মানুষ জানতেও না পারে কী হচ্ছে।” তার পরেই ট্রাম্প দাবি করেন, রাশিয়া এবং চিনও একই ভাবে তাদের পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষানিরীক্ষা করছে। ওই দেশগুলিকে দুষে ট্রাম্পের বক্তব্য, মুক্ত সমাজে গোপনীয়তার সঙ্গে এই সব কাজ করা হচ্ছে। যদিও ট্রাম্পের দাবি খারিজ করে দিয়েছে চিন। চিনের বিদেশ মন্ত্রক সংবাদসংস্থা এএফপি-কে জানিয়েছে, তারা একটি দায়িত্বশীল পরমাণু শক্তিধর দেশ। তাই আত্মরক্ষার প্রয়োজন ছাড়া তারা পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষানিরীক্ষা করে না।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের নির্দেশে ৩৩ বছর পর আমেরিকায় পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষা করা হবে। বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সে দেশে শোরগোল শুরু হয়েছে। এই প্রসঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের বিদ্যুৎসচিব (এনার্জি সেক্রেটারি) ক্রিস রাইট হোয়াইট হাউসের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ফক্স নিউজ়কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে রাইট জানিয়েছেন, এই মুহূর্তে কোনও বিস্ফোরণ ঘটানোর পরিকল্পনা নেই আমেরিকার। ট্রাম্প যা বলেছেন, তা কেবল প্রথাগত পরীক্ষানিরীক্ষা। রাইটের কথায়, ‘‘আমরা যে পরীক্ষার কথা বলছি, আমার মনে হয় সেটা প্রথাগত। এখানে কোনও পরমাণু বিস্ফোরণ হবে না। এগুলোকে বলা হয় অ-জরুরি বিস্ফোরণ।’’ তবে কী হবে পরমাণু অস্ত্র পরীক্ষার সময়ে? রাইট জানিয়েছেন, পরমাণু অস্ত্রের সমস্ত অংশ পরীক্ষা করে দেখা হবে। নির্দিষ্ট সময়ে কোনও অংশ বিগড়ে যেতে পারে কি না, তা থেকে সঠিক ভাবে বিস্ফোরণ ঘটানো সম্ভব কি না, সে সব খতিয়ে দেখা হবে।
ট্রাম্প সাক্ষাৎকারে যে চার দেশের নাম করেছেন, সেগুলির মধ্যে পাকিস্তান বাদে বাকি তিন দেশ বাণিজ্যিক বা সামরিক ক্ষেত্রে আমেরিকার প্রতিদ্বন্দ্বী। স্বাভাবিক ভাবে পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা সংক্রান্ত ট্রাম্পের দাবি নিয়ে শোরগোল শুরু হয়েছে। সাক্ষাৎকারের একটি অংশে ট্রাম্প ফের দাবি করেছেন, গত মে মাসে ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে হতে চলা পরমাণু যুদ্ধ তিনিই থামিয়েছেন। তিনি এই পদক্ষেপ না-করলে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা যেতেন বলে দাবি করেছেন তিনি।