Advertisement
E-Paper

মোদীর ডাকে প্রজাতন্ত্র দিবসে আসতে নারাজ ট্রাম্প!

মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য সফর ঘিরে দেশে-বিদেশে যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৫৫
ডোনাল্ড ট্রাম্প

ডোনাল্ড ট্রাম্প

ক’দিন আগেই বলেছিলেন, ‘‘ঠেলা বুঝবে দিল্লি।’’ রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের দিল্লি সফরে ক্ষেপণাস্ত্র-প্রতিরোধী ব্যবস্থা ‘এস-৪০০’ কেনার দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হওয়ার পরেই প্রবল চটেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প।

এ বার তিনি সেই ‘ঠেলাই’ বুঝিয়ে দিলেন কি না, কূটনীতিকরা নিশ্চিত নন। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্টের সম্ভাব্য সফর ঘিরে দেশে-বিদেশে যারপরনাই অস্বস্তিতে পড়লেন নরেন্দ্র মোদী। সংবাদমাধ্যমের একাংশের দাবি, আগামী প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে ভারত সরকার আমন্ত্রণ জানিয়েছিল ট্রাম্পকে। গত অগস্টে দিল্লির আমন্ত্রণ পাওয়ার কথা স্বীকারও করেছিলেন হোয়াইট হাউসের প্রেস সচিব সারা স্যান্ডার্স। কিন্তু সেই আমন্ত্রণ নাকি ফিরিয়ে দিয়েছেন ট্রাম্প। বলেছেন, অন্যান্য কর্মসূচি থাকায় ভারতে আসতে পারছেন না তিনি। এই মর্মে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা অজিত ডোভালের কাছে মার্কিন সরকারের চিঠিও পৌঁছে গিয়েছে বলে খবর।

এ নিয়ে এখনও কোনও বিবৃতি দেয়নি ভারতীয় বিদেশ মন্ত্রক। মন্তব্য করেনি রাজধানীর মার্কিন দূতাবাসও। তাদের বক্তব্য, ‘‘যা বলার, হোয়াইট হাউসই বলবে।’’ হোয়াইট হাউস বা ট্রাম্প নিজেও এ নিয়ে মুখ খোলেননি। তবে সাউথ ব্লকের একটি সূত্রের দাবি, শেষ বার আমেরিকা সফরে গিয়ে মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্টকে ভারতে আসতে বলেছিলেন ঠিকই। নির্দিষ্ট করে ২৬ জানুয়ারিতেই আসার আমন্ত্রণ জানানো হয়নি তাঁকে। যদিও জানুয়ারিতে ট্রাম্প না-এলে মোদীর শাসনকালে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ভারত সফরের আর কোনও সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে না। কারণ, ২০১৯-এর মার্চ থেকেই লোকসভা ভোটের তোড়জোড় শুরু হয়ে যাওয়ার কথা।

বিশেষজ্ঞদের একাংশের মতে, বোঝাই যাচ্ছে, দু’দেশের সম্পর্ক খুব একটা মধুর নেই। মোদী কথায় কথায় অন্য রাষ্ট্রপ্রধানদের জড়িয়ে ধরেন (যে তালিকায় ট্রাম্পও রয়েছেন), তাঁদের সঙ্গে ব্যক্তিগত সম্পর্ক রয়েছে বলে দাবি করেন। অথচ বাস্তব পরিস্থিতি আলাদা। সম্প্রতি একটি বইয়ে দাবি করা হয়, মার্কিন প্রেসিডেন্টের অবকাশকালীন ঠিকানা ‘ক্যাম্প ডেভিড’-এ যেতে চেয়েছিলেন মোদী। রাজি হয়নি হোয়াইট হাউস।

এস-৪০০ চুক্তির সময়ে প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামন বলেছিলেন, ‘‘আমেরিকার প্রতি আমি কৃতজ্ঞ।’’ আজ প্রশ্ন উঠেছে, ওয়াশিংটনের মন বুঝতে কি ভুল করেছিল দিল্লি? মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি সত্ত্বেও ইরানের থেকে তেল কেনা বন্ধ করেনি দিল্লি। ক্ষুব্ধ ওয়াশিংটন বলেছিল, ‘‘ভারত সহযোগিতা করছে না।’’

আরও পড়ুন: ‘বন্ধু’ আবেকে ঢালাও উপহার প্রধানমন্ত্রী মোদীর

বিশেষজ্ঞদের মতে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে এ সবেরই প্রভাব পড়তে বাধ্য। শুধু আমেরিকা নয়, চিন, নেপাল, শ্রীলঙ্কার মতো প্রতিবেশীরাও ক্রমশ দূরে সরে যাচ্ছে দিল্লির থেকে। ইমরান খান পাক প্রধানমন্ত্রী হয়েই বৈঠকের ডাক দিয়েছিলেন। লোকসভা ভোটের চিন্তায় সেই আমন্ত্রণও ফিরিয়েছে মোদী সরকার। ফলে দিল্লির সামগ্রিক কূটনৈতিক কৌশলই প্রশ্নের মুখে।

সংবাদ সংস্থাগুলির দাবি, ওয়াশিংটন জানিয়েছে, জানুয়ারিতে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ বক্তৃতা আছে। তাই আসতে পারবেন না তিনি। কিন্তু প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা দু’-দু’বার ভারত সফরে এসেছেন। এক বার প্রজাতন্ত্র দিবসেই প্রধান অতিথি হয়েছিলেন তিনি। সে বার ‘স্টেট অব দ্য ইউনিয়ন’ বক্তৃতাই পিছিয়ে দিয়েছিলেন ওবামা।

আরও পড়ুন: পিটসবার্গে বন্দুকবাজের হামলায় হত বেড়ে ১১

সেই হাওয়া যে বদলেছে, জানান দিচ্ছে ঘটনাপ্রবাহই। প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে বিদেশি রাষ্ট্রপ্রধান বা রাজপরিবারের শীর্ষস্থানীয় প্রতিনিধিরাই সচরাচর প্রধান অতিথি হয়ে আসেন দিল্লিতে। ওবামা, পুতিন থেকে শুরু করে ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ, নিকোলাস সারকো‌জ়িরাও রয়েছেন সেই তালিকায়। সংবাদ সংস্থাগুলির দাবি, ট্রাম্প মুখ ফেরানোয় নতুন অতিথি খোঁজাটাও মাথাব্যথা হয়ে দাঁড়াল সাউথ ব্লকের।

Donald Trump Republic Day ডোনাল্ড ট্রাম্প নরেন্দ্র মোদী Narendra Modi
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy