আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গাজ়া ও ইজ়রায়েলের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি হতে পারে বলে আগেই ঘোষণা করেছেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। রবিবারও তিনি সমাজমাধ্যম ‘ট্রুথ সোশ্যাল’-এর পোস্টে লিখলেন, ‘‘গাজ়া নিয়ে চুক্তিটা এ বার হোক। ফেরানো হোক বন্দিদের।’’
শুক্রবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেছেন, দু’দেশের মধ্যে যুদ্ধ থামাতে যাঁরা মধ্যস্থতা করছেন, তাঁদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা বলেই তাঁর ধারণা হয়েছে যে, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে সমঝোতায় পৌঁছোনো সম্ভব। ট্রাম্পের কথায়, ‘‘আমার মনে হয়, আর দেরি নেই। যারা এ বিষয়ে যুক্ত তাঁদের কয়েক জনের সঙ্গে কথা হয়েছে। মনে হয়, সামনের সপ্তাহের মধ্যে সংঘর্ষবিরতি চালু হয়ে যাবে।’’
২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। তাতে প্রায় ১২০০ জনের প্রাণ গিয়েছিল। বন্দি করা হয়েছিল আড়াইশো জনকে। মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য গার্ডিয়ান’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, এখনও ৫০ জনের মতো ইজ়রায়েলি নাগরিক হামাসের হাতে বন্দি। ওই ঘটনার পর ইজ়রায়েলও পাল্টা হামাসের উপর হামলা চালায়। দীর্ঘ সংঘর্ষ চলার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় দু’পক্ষ। কিন্তু মার্চেই আবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালাতে শুরু করে ইজ়রায়েল। তাতেই ভেস্তে যায় ইজ়রায়েল-হামাস আলোচনা।
সংবাদ সংস্থা রয়টার্স-কে হামাস জানিয়েছে যে, তারা আলোচনায় প্রস্তুত। কিন্তু কিছু শর্ত রয়েছে। তা হল— অবিলম্বে যুদ্ধ বন্ধ করতে হবে এবং গাজ়া ছাড়তে হবে ইজ়রায়েলকে।
বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর দেশ অবশ্য তা মানতে আগ্রহী নয়। বরং সাম্প্রতিক বিভিন্ন রিপোর্টে জানা গিয়েছে, গাজ়ার নিরীহ, নিরস্ত্র মানুষকে নিশানা করছে ইজ়রায়েলি সেনা। ত্রাণ ও খাবারের লাইনে দাঁড়ানো বুভুক্ষু মানুষকে লক্ষ্য করে হামলা চালানো হচ্ছে। শুধু তা-ই নয়, ওয়েস্ট ব্যাঙ্কেও প্যালেস্টাইনিদের বাড়ি, ঘরদোর, জমি জ্বালিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে অবৈধ ইজ়রায়েলিদের বিরুদ্ধে।
গাজ়ায় গণহত্যা নিয়ে বিশ্ব জুড়ে নিন্দা ও সমালোচনার মুখে পড়েছে ইজ়রায়েল। যুদ্ধ থামানোর দাবিতে দেশের ভিতরেও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। যুদ্ধ থামানোর দাবিতে দেশের ভিতরেও সরকারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। ঘরে-বাইরে প্রবল চাপের মুখে পড়েছে বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সরকার।
তবে ইজ়রায়েল প্রশাসন সূত্রের খবর, সরকারের কৌশলগত দফতরের মন্ত্রী রন ডারমার আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন। সেখানে গাজ়া, ইরান প্রসঙ্গে আলোচনা হতে পারে। ওই সময়ে হোয়াইট হাউসে যাওয়ার কথা রয়েছে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুরও।