ভ্লাদিমির পুতিনের জন্য আলাস্কায় লাল গালিচা বিছিয়েছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার তিন দিন পর সোমবার হোয়াইট হাউসে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জ়েলেনস্কির সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন তিনি। জ়েলেনস্কির জন্য ট্রাম্প লাল গালিচা পাতবেন কি না জানা নেই, তবে বৈঠকের আগেই ইউক্রেনের দুই আবদার খারিজ করে দিলেন তিনি। সোমবার সকাল ৬টা ৪৭ মিনিটে (ভারতীয় সময় অনুসারে) সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। সেখানেই তিনি জানিয়ে দেন, অধুনা রাশিয়া অধিকৃত ক্রিমিয়া আর ফেরত পাবে না ইউক্রেন। এর পাশাপাশি ইউক্রেনের দীর্ঘ দিনের আর্জি খারিজ করে ট্রাম্প বলেন, আমেরিকার নেতৃত্বাধীন সামরিক জোট নেটো-র অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে না জ়েলেনস্কির দেশ।
বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, কার্যত রাশিয়ার দাবিকেই মান্যতা দিয়েছেন ট্রাম্প। অন্য দিকে, আপাতত দু’গোল হজম করেই ওয়াশিংটনে পৌঁছেছেন জ়েলেনস্কি। অন্য দিকে, সোমবার ফের যুদ্ধ থামানোর দায় কার্যত জ়েলেনস্কির ঘাড়েই চাপিয়েছেন ট্রাম্প। লিখেছেন, “ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জ়েলেনস্কি প্রায় এখনই রাশিয়ার সঙ্গে যুদ্ধ থামাতে পারেন। অবশ্য তিনি যদি সেটা চান। তিনি যুদ্ধ চালিয়ে যেতেও পারেন। কেবল মনে রাখবেন এটা (যুদ্ধ) কী ভাবে শুরু হয়েছিল।” তার পরেই নিজের পূর্বসূরি বারাক ওবামাকে খোঁচা দিয়ে ইউক্রেনকে নিজেদের অবস্থানের কথা জানান ট্রাম্প। লেখেন, “ওবামার দেওয়া ক্রিমিয়া আর ফেরত পাবেন না। আর নেটো-তেও ইউক্রেন ঢুকতে পারবে না। কিছু জিনিস আর বদলায় না।”
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পের পর সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন জ়েলেনস্কিও। সেখানে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জানান, তিনি ইতিমধ্যেই ওয়াশিংটনে পৌঁছে গিয়েছেন। বৈঠকে ডাকার জন্য ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান তিনি। তাঁর লেখায় আসে ক্রিমিয়ার প্রসঙ্গও। জ়েলেনস্কি লেখেন, “আমরা সকলেই চাই যুদ্ধ দ্রুত শেষ হোক। আর শান্তি চিরস্থায়ী হোক। কিন্তু আগের মতো যেন না-হয়। এর আগে ইউক্রেনকে ক্রিমিয়া এবং পূর্ব দিকের একাংশ ডনবাস ছেড়ে দিতে হয়েছিল।”
প্রসঙ্গত, ২০১৪ সালে ওবামার আমলে ক্রিমিয়া দখল করেছিল রাশিয়া। সেই সময় ইউক্রেনের মসনদে ছিলেন রুশপন্থী এক প্রেসিডেন্ট। ইউক্রেনের পার্লামেন্ট তাঁকে গদিচ্যুত করে। রাশিয়া অবশ্য বিষয়টিকে পশ্চিমি শক্তির মদতপুষ্ট অভ্যুত্থান হিসাবে দেখেছিল। মস্কোর দাবি ছিল, রাশিয়া এবং রুশদের স্বার্থরক্ষার জন্যই ক্রিমিয়া দখল প্রয়োজনীয় ছিল। ইউক্রেন অবশ্য এই ঘটনাকে সামনে রেখেই জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষার দাবি জানায়। সেই সময় থেকেই নেটো-র অন্তর্ভুক্ত হওয়ার আর্জি জানিয়ে আসছে তারা। ইউক্রেনের এই পদক্ষেপকে আবার ভাল ভাবে নেয়নি পুতিনের দেশ। ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়। সাড়ে তিন বছর পরেও সেই যুদ্ধ চলছে।