জাপানের সঙ্গে আমেরিকার বাণিজ্য চুক্তির সম্ভাবনায় জল ঢেলে দিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প! আমেরিকায় জাপানি পণ্যের উপর চড়া রফতানি শুল্ক আরোপের হুঁশিয়ারি দেওয়ার পর দিনই এই মন্তব্য করেছেন তিনি।
মঙ্গলবার ফ্লরিডা সফর শেষে ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, ‘‘জাপানের সঙ্গে চুক্তি আদৌ সম্পন্ন হবে কি না, তা নিয়ে আমি সন্দিহান। আমরা জাপানের সঙ্গে আলোচনা করেছি। তবে আমরা কোনও চুক্তির দিকে এগোতে পারব কি না, তা নিয়ে আমি নিশ্চিত নই।’’ জাপানকে সরাসরি আক্রমণও করেছেন ট্রাম্প। তিনি বলেন, ‘‘গত ৩০-৪০ বছর ধরে ওরা আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে। ফলে ওদের সঙ্গে চুক্তি করা খুবই কঠিন।’’
গত ২ এপ্রিল বিভিন্ন দেশের পণ্যের উপর পারস্পরিক শুল্ক আরোপের ঘোষণা করেছিলেন ট্রাম্প। ২৪ শতাংশ শুল্ক আরোপ হয়েছিল জাপানি পণ্যেও। কিন্তু আরোপ হওয়ার আগের দিন নয়া শুল্কনীতিতে ৯০ দিনের স্থগিতাদেশ ঘোষণা করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ৯০ দিনের ওই সময়সীমা শেষ হচ্ছে আগামী ৯ জুলাই। ফলে তার আগেই জাপান-আমেরিকা বাণিজ্যচুক্তি চূড়ান্ত হবে কি না, তা নিয়ে জল্পনা বাড়ছে।
আরও পড়ুন:
উল্লেখ্য, জাপান পূর্ব এশিয়ায় আমেরিকার একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য অংশীদার দেশ। দুই দেশের কৌশলগত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কও রয়েছে। কিন্তু ট্রাম্পের একের পর এক আক্রমণের পর দুই দেশের সম্পর্ক আপাতত আতশকাচের তলায় রয়েছে। জানা গিয়েছে, অতি সম্প্রতি বাণিজ্যচুক্তি নিয়ে দর কষাকষির জন্য সপ্তম বার ওয়াশিংটনে গিয়েছিলেন জাপানের শুল্ক বিশেষজ্ঞ রিওসেই আকাজাওয়ার। এই মুহূর্তে কোয়াড বৈঠকের জন্য অস্ট্রেলিয়া এবং ভারতের সঙ্গে ওয়াশিংটনে রয়েছেন জাপানের বিদেশমন্ত্রী তাকেশি ইওয়ায়া-ও। তার মাঝেই ট্রাম্পের এই মন্তব্য প্রকাশ্যে আসায় জল্পনা বেড়েছে।
সোমবার ট্রাম্প সমাজমাধ্যমে একটি পোস্টে প্রথমে জাপানের বিরুদ্ধে অভিযোগ তোলেন, তারা আমেরিকার থেকে চাল কেনে না। যদিও পরিসংখ্যান বলছে অন্য কথা! মার্কিন সরকারি হিসাব অনুযায়ী গত বছর জাপান আমেরিকার কাছ থেকে ২৫৪৯ কোটি টাকার চাল কিনেছিল। এই বছরের জানুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যেই জাপান ৯৭৫ কোটি টাকার চাল কিনে ফেলেছে। কিন্তু মঙ্গলবার ট্রাম্প সেই দাবির পুনরাবৃত্তি করে বলেন, ‘‘ওদের ভাতের খুব প্রয়োজন, কিন্তু তারা ভাত নেবে না।’’ জাপানিরা মার্কিন গাড়িও কেনে না বলে অভিযোগ করেন তিনি। অথচ জাপান অটোমোবাইল ইম্পোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের তথ্য অনুযায়ী, গত বছর জাপান ১৬,৭০৭টি আমেরিকান গাড়ি আমদানি করেছে।
তবে ট্রাম্প ইতিমধ্যে আভাস দিয়ে রেখেছেন, ৯ জুলাইয়ের পর শুল্কনীতিতে স্থগিতাদেশের সময়সীমা আর বৃদ্ধি করতে চান না তিনি।