ডুসেলডর্ফের আকাশে আজ ধুনুচির ধোঁয়া, ঢাকের বাদ্য আর ‘মা আসছেন’–এর আনন্দধ্বনি। ইউরোপের মাটিতে, প্রবাসের কোলেও, দুর্গোৎসব এখন শুধুই বাঙালির উৎসব নয়— হয়ে উঠেছে এক আন্তঃসাংস্কৃতিক মিলনমেলা, যেখানে ভাষা, অঞ্চল, ধর্ম সব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে মানুষ জড়ো হয় ভালবাসা, বন্ধুত্ব ও শ্রদ্ধার বন্ধনে।
পাঁচ দিনের এই পুজো শুধুমাত্র পুজো নয়— এটা স্মৃতি, সংযোগ আর সংস্কৃতির এক মোহনায় মিলিত হওয়া। শারদীয়ার দিনে এখানে যেমন মহালয়ার ভোরবেলা রেডিয়োর আওয়াজে মন কাঁদে, তেমনই সন্ধ্যায় দেখা যায় জার্মান, তুর্কি বা আফ্রিকান বন্ধুরা ‘ধুনুচি নাচ’ শিখছেন বা মণ্ডপে সিঁদুর খেলায় মেতে উঠছেন।
ডুসেলডর্ফের দুর্গাপুজোর অন্যতম দিক হল সকলকে আপন করার ক্ষমতা। মঞ্চে যেমন থাকে রবীন্দ্রনৃত্যনাট্য, তেমনই থাকে বলিউড গান বা ইউরোপীয় বাদ্যযন্ত্রের ছোঁয়া। বাচ্চাদের জন্য থাকে আলপনা কর্মশালা, বয়স্কদের জন্য আলোচনাচক্র। আর থাকে সেই ভোগের স্বাদ— যা জার্মান রন্ধনশালার মধ্যেও মায়ের প্রসাদের আত্মিক ছোঁয়া আনে। পুজো আমাদের শেখায়, ভৌগোলিক দূরত্ব যতই হোক না কেন, শিকড়ের টান আর ভালবাসা মানুষকে এক করে। শারদীয়া উৎসব তাই এক মানবিক উত্সব, যা আমাদের মনে করিয়ে দেয়— মিলেমিশে বাঁচার আনন্দই প্রকৃত শক্তি। শুভ দুর্গোৎসব!
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)