E-Paper

প্রথা মেনেই বরণ থেকে বিসর্জন

ওমানে বসবাসকারী কয়েক জন বাঙালি ১৯৮২ সালে উদ্যোগী হয়ে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। এ দেশের রাজধানী মাস্কাটের ঠিক মাঝখানে একটি মন্দির রয়েছে।

রুম্পা মিত্র

শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ০৬:৫০
durga puja.

মানে দুর্গোৎসবে মেতে ওঠেন পরবাসে থাকা বাঙালিরা। —ফাইল চিত্র।

আশ্বিনের শারদপ্রাতে আকাশে যখন গালফোলা সাদা মেঘে ভেসে বেড়ায় তখন বাঙালির হৃদয় জুড়ে উৎসবের অনুরণন জাগবেই। তিনি পৃথিবীর যে প্রান্তেই থাকুন না কেন। ঢাকের বোল, শিউলি-সৌরভ সম্ভবত আটকে থাকে না কোনও ভৌগোলিক বেড়াজালে। নিজের জন্মভূমি থেকে বহু বহু মাইল দূরে, আরব সাগরের তীরে ওমানে দুর্গোৎসবে মেতে ওঠেন পরবাসে থাকা বাঙালিরা।

ওমানে বসবাসকারী কয়েক জন বাঙালি ১৯৮২ সালে উদ্যোগী হয়ে দুর্গাপুজো শুরু করেছিলেন। এ দেশের রাজধানী মাস্কাটের ঠিক মাঝখানে একটি মন্দির রয়েছে। প্রতি বছর সেখানেই যাবতীয় আচার-অনুষ্ঠান মেনে দেবীর আরাধনা হয়। এখানের বাঙালি অ্যাসোসিয়েশনই দুর্গাপুজোর যাবতীয় আয়োজন করে থাকে। আশা করা হচ্ছে, এ বারের পুজোয় হাজারের বেশি প্রবাসী বাঙালি অংশ নেবেন।

আমাদের এখানের পুজোয় প্রতি বছর প্রতিমা বদল হয় না। পাঁচ বছর অন্তর কলকাতা থেকে প্রতিমা আনা হয়। স্থানীয় বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনই পুরোহিতের ব্যবস্থা করে। পুজোর সংগঠকদের মধ্যে অনেকেই ঢাক বাজানোয় অত্যন্ত পারদর্শী। ঢাকির কাজটা তাঁরাই সামলে দেন। আনুষ্ঠানিক ভাবে পুজো শুরু হয় ষষ্ঠীর দিন থেকে। অষ্টমীতে অঞ্জলি, সন্ধিপুজো, দশমীতে দেবীবরণ-সিঁদুর খেলা এবং বিসর্জন সবই হয় প্রথা মেনে। এখানে বলে রাখা ভাল, ওমানে দুর্গাপুজোর কোনও ছুটি থাকে না। তাই যাঁরা পুজোর আয়োজক, তাঁরা চার-পাঁচ দিনের ছুটি নিয়ে নেন। আর আমাদের মতো লোকজন ওই সন্ধ্যায় ভিড় জমাই মন্দির চত্বরে। পুজোর চার দিনের মধ্যে যদি শনি-রবিবার থাকে, তা হলে তো কথাই নেই! দু’বেলাই গন্তব্য পুজো মণ্ডপ।

পুজোর দিনগুলিতে আগত দর্শনার্থীদের ভোগ বিতরণ করা হয়। বেঙ্গলি অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা অবশ্য বিনামূল্যেই ভোগের প্রসাদ পান। অন্য দর্শনার্থীদের নামমাত্র মূল্যে ভোগের প্রসাদ দেওয়া হয়। পুজোর দিনগুলিতে মন্দিরে সব চেয়ে বেশি জনসমাগম হয় অষ্টমীর অঞ্জলিতে এবং ধুনুচি নাচে। প্রতিবেশী সংযুক্ত আমিরশাহি থেকেও অনেক বাঙালি ওমানে আসেন এই পুজোয়। অনেকে আবার চার দিন থেকে পুরো পুজোটাই কাটিয়ে যান মাস্কাটে।

ওমানে বসে পুজোর দিনগুলিতে কলকাতা বা বাংলার পুজোর অনুভূতিকে আমরা কেউই খুঁজতে যাই না। কিন্তু আরব সাগরের তীরে পরভূমে বসে দুর্গাপুজোয় যে শামিল হতে পারছি, এটাই বা কম কিসের!

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Durga Puja 2023 Oman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy