ঘড়ির কাঁটা ঘুরিয়ে অতীতে ফেরার সুযোগ নেই। তবে, মনের গতি আটকায় কে? তা-ই দশ বছর আগের স্মৃতি এখনও টাটকাডরসেটের দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের সবার কাছেই।
সেটা ২০১৬ সাল। দক্ষিণ-পশ্চিম ইংল্যান্ডের ডরসেট কাউন্টির বোর্নমাউথ শহরে দুর্গামূর্তির একটা ছবি ঘিরে শুরু হয়েছিল পুজোটা। সঙ্গে ছিল কয়েক জনের অদম্য ইচ্ছা। পুজোর কয়েক দিন যেন কোনও ভাবেই বাংলার মাটির রূপ-রস-গন্ধ থেকে বঞ্চিত না হতে হয়। তা সে যত দূরেই থাকি না কেন। সে ভাবে শুরু হওয়া যাত্রাই আজ রঙিন সাংস্কৃতিক উৎসবে বদলেছে। ২০১৭ সালে কলকাতা থেকে নিয়ে আসা হয় শিল্পীর হাতে তৈরি ফাইবার গ্লাসের প্রতিমা। সেটা ছিল ডরসেটের প্রবাসীদের পুজোর পথচলার এক গুরুত্বপূর্ণ মাইলফলক।
বোর্নমাউথ শহরের হৃদয়ে অনুষ্ঠিত এই দুর্গাপুজো ব্রিটেনের অন্যতম কয়েকটি পুজোর মধ্যে একটি। বাংলার মতোই সেই পুজোয় ষষ্ঠী থেকে বিজয়া দশমী পর্যন্ত পাঁচ দিনের আনন্দযজ্ঞ। পারম্পরিক সব আচার মেনেই। কয়েকটি পরিবারের ছোট্ট মিলনমেলা থেকে দশ বছর পেরিয়ে এই পুজো আজ বৃহৎ এক উৎসবের রূপ নিয়েছে। পুজোয় সেখানে ভিড় জমে হ্যাম্পশায়ার ও আশপাশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা শত শত মানুষেরও। এই পুজো শুধু এক ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বিলেতের মাটিতে বাংলা তথা ভারতের সংস্কৃতি আর ঐতিহ্যের প্রতিফলনও।
ষষ্ঠী থেকে দশমীর পুজোর নানা উপাচারের ফাঁকে উৎসবের নানা রংও জুড়ে থাকে ডরসেটে। বাংলার গান, কবিতায় মেশে দেশের মাটির গন্ধ। লাল-সাদা শাড়িতে দশমীর সিঁদুর খেলায় দেশে ফেলে আসা দিনের নস্ট্যালজ়িয়াও।এক বছরের জন্য মা পতিগৃহে বিদায় নিলেও, পাঁচ দিনের সেই আনন্দের রেশ ফিঁকে হয় না একেবারেই। সমুদ্রঘেঁষা ডরসেটের বাতাসেও বাংলার মতোই রব ভাসে— ‘আসছে বছর আবার হবে’।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)