প্রবাসী বাঙালির কাছে দুর্গাপুজো শুধু একটা উৎসব নয়, দেশকে কাছে পাওয়ার একটা উপলক্ষ। জার্মানির বিভিন্ন শহরে দীর্ঘ সময় ধরে দুর্গাপুজো হচ্ছে। যেমন কোলন শহরে ৩৩ বছরের পুরনো পুজো, তেমনই বার্লিন, স্টুটগার্ট, ফ্রাঙ্কফুর্ট, এবং মিউনিখের মতো শহরেও একাধিক পুজোর জাঁকজমকপূর্ণ আয়োজন দেখা যায়। সেই তালিকায় নতুন করে যুক্ত হয়েছে জার্মানির নর্থ রাইন-ওয়েস্টফালিয়া প্রদেশের ছোট্ট শহর এসেন। এখানে মাত্র দ্বিতীয় বছরেই দুর্গোৎসব এক ভিন্ন মাত্রা পেয়েছে। রুর নদীর পাশে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গুঁড়িয়ে যাওয়াএই শিল্পাঞ্চলে এ বার পুজোর আয়োজন জমজমাট।
গত বছর প্রথমবার নবগঠিত সংগঠন ‘ইন্ডিয়ান কালচারাল কানেকশন এসেন’-এর উদ্যোগে এসেনে পুজোর আয়োজন করা হয়েছিল। কিন্তু প্রথম বছরে আয়োজকদের বড় চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হয়। পুজোর ঠিক আগে নেদারল্যান্ডসের রটারডাম বন্দরে প্রতিমা আটকে যাওয়ায় সবারই মনখারাপ হয়ে গিয়েছিল। শেষ মুহূর্তে ছোট প্রতিমা এনে সব আচার-অনুষ্ঠানের মধ্যেই সম্পন্ন হয় পুজো।
এসেনের দুর্গাপূজা আয়োজিত হয় শহরের একটি সুপরিচিত কমিউনিটি হলে। রীতি মেনে পুজো হবে পাঁচ দিন। নতুন প্রতিমা স্থাপন করা হবে হলের ভিতরে। দর্শনার্থী ও শিল্পীদের সুবিধার জন্য হলের বাইরের মাঠে একটি সুসজ্জিত মঞ্চ তৈরি করা হয়েছে, যেখানে নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান পরিবেশিত হবে এবং ভোগ পরিবেশনা করা হবে।
জোরকদমে প্রস্তুতি চলছে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের। সুকুমার রায়ের নাটক মঞ্চস্থ করবে ছোটদের দল আর বড়দের জন্য নাটক লিখে ফেলেছেন এখানকারই এক বাঙালি গবেষক। পুজোর ক’টা দিন বাঙালি খাবার ও প্রসাদের আয়োজন তো থাকেই। তা ছাড়া, কলকাতার পুজোর আমেজ যাতে একটুও নষ্ট না হয়, তাই থাকছে মাটন বিরিয়ানিও।
এসেন শহরে এই একটা মাত্রই পুজো হয়। পাশের অনেক শহর যেমন ডর্টমুন্ড, মুলহাইম, বখুম বা ডুসেলডর্ফ থেকে অনেক মানুষ আমাদের পুজো দেখতে আসেন। বাঙালি ছাড়া ভারতের অন্য রাজ্যের মানুষজনও অংশ নেন এখানকার পুজোয়। পুজো দেখতে আসেন স্থানীয় জার্মানরাও।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)