Advertisement
E-Paper

চোরের উৎপাত, দিনভর বন্ধ আইফেল টাওয়ার

শুধু তাই নয়, পকেটমাররাও নিত্য শাসানি দেয় ওই কর্মীদের। কাজে বাগড়া দিলে সমস্যায় পড়ার হুমকিও দেয়। রোজকার এই ঘটনায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে এ দিন সকালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন টাওয়ারের কর্মীরা। কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে কার্যকরী এবং দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপের দাবি জানান তাঁরা।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৫ ০২:৪০

বোমাতঙ্ক বা ধর্মঘট নয়। ছিঁচকে চোরের উৎপাতে শ্রমিক অসন্তোষ। আর তার জেরেই বন্ধ থাকল আইফেল টাওয়ার!

রোজ হাজারো পর্যটকের সমাগম হয় এখানে। ফিরতি পথে তাঁদের অনেককেই পড়তে হয় চোর-পকেটমারদের খপ্পরে। কেউ খোয়ান মানি ব্যাগ, কেউ মোবাইল ফোন, কেউ বা আবার ল্যাপটপ। চোরেদের না পেয়ে টাওয়ারের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে থাকা কর্মীদেরই দু’-চার কথা শুনিয়ে যান পর্যটকেরা।

শুধু তাই নয়, পকেটমাররাও নিত্য শাসানি দেয় ওই কর্মীদের। কাজে বাগড়া দিলে সমস্যায় পড়ার হুমকিও দেয়। রোজকার এই ঘটনায় বীতশ্রদ্ধ হয়ে এ দিন সকালে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন টাওয়ারের কর্মীরা। কর্তৃপক্ষ এবং প্রশাসনের কাছে কার্যকরী এবং দীর্ঘস্থায়ী পদক্ষেপের দাবি জানান তাঁরা। শ্রমিক অসন্তোষের জেরে টাওয়ার বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন কর্তৃপক্ষ। একটা দিন পর্যটকদের প্রবেশাধিকার বন্ধের সিদ্ধান্তে কতটা আর্থিক ক্ষতি হতে পারে তা তাঁরা বিলক্ষণ জানেন। তবু পকেট মেরেই পকেটমারদের শায়েস্তা করতে উদ্যোগী হন। পুলিশের সাহায্যে সমস্যার চটজলদি সমাধান খোঁজার প্রতিশ্রুতিও দেন। কর্তৃপক্ষের আশ্বাসে বিকেলের দিকে ফের ছন্দে ফেরে আইফেল টাওয়ার।

এই প্রথম নয়। ২০১৩ সালে সংলগ্ন জাদুঘরটিতে পকেটমারদের দৌরাত্ম্যে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল টাওয়ারের মূল ফটক। বছরভর খোলা থাকলেও জঙ্গি হানার আশঙ্কা বা বড়সড় কোনও ধর্মঘটের ক্ষেত্রে আইফেল টাওয়ার বন্ধের রীতি চালু আছে। গত জানুয়ারিতে ‘শার্লি এবদো’-র দফতর আর প্যারিসের সুপারমার্কেটে পর পর জঙ্গি হানার ঘটনায় শহর জুড়ে নিরাপত্তা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। তারই অংশ হিসেবে টাওয়ার চত্বরে মোতায়েন করা হয় অতিরিক্ত বাহিনী। বসানো হয় নজরদারি ক্যামেরাও। কিন্তু তাতেও চুরি কমেনি।

প্রশাসনের তরফে অবশ্য দাবি করা হয়েছে, বিভিন্ন ট্যুরিস্ট স্পটে বসানো সিসিটিভিগুলির দৌলতে ইতিমধ্যেই বেশ কিছু চুরি-চক্রের হদিস পেয়েছে তারা। গত কালই সরকারের এক মুখপাত্র বিবৃতি জারি করে দাবি করেন, শহরে পর্যটকদের বিরুদ্ধে অপরাধের পরিমাণ কমেছে উল্লেখযোগ্য ভাবে। গত বছরের তুলনায় চুরি-ডাকাতি কমেছে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত।

তার পর ২৪ ঘণ্টাও পেরোয়নি। পকেটমারদের উৎপাতে আইফেল টাওয়ার বন্ধের পদক্ষেপ প্রশাসনিক বিবৃতির সত্যতা নিয়েই প্রশ্ন তুলল।

আর পাঁচটা ট্যুরিস্ট স্পটের মতো রুজির আশায় আইফেল টাওয়ারের আশপাশে ভিড় জমান প্রচুর ভিখারি। তাঁদেরই কেউ কেউ চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনায় জড়িত থাকতে পারে বলে দাবি করছে পুলিশ। টাওয়ারের রেপ্লিকা হাতে এলাকায় ঘুরে বেরাতে দেখা যায় বেশ কিছু হকারকে। সন্দেহের তালিকায় রয়েছেন তাঁরাও। টাওয়ার কর্তৃপক্ষের সঙ্গে হাত মিলিয়েই পকেটমার-পাকড়াও অভিযানে নামতে চলেছে পুলিশ। প্রাথমিক তদন্তে তাদের অনুমান, পাঁচ-দশ জনের একটি দলই মূলত এই ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছে।

সারা জীবনের সঞ্চয় পুঁজি করে ছোট ভাইকে নিয়ে প্যারিস-ভ্রমণে এসেছিলেন ভারতের তুষার কারদিলে। সাতসকালেই হাজির হয়েছিলেন টাওয়ারের নীচে। তবে ফিরে গিয়েছেন হতাশ হয়ে। আক্ষেপের সুরে বললেন, ‘‘আগে থেকে টিকিট কেটে রেখেছিলাম। কর্তৃপক্ষ টাওয়ার বন্ধের সিদ্ধান্ত নিতেই পারেন। তবে আগেভাগে পর্যটকদের তা জানিয়ে দেওয়া উচিত।’’

The Eiffel Tower pickpockets Paris landmark visitors tourist
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy