আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টিনের নাম আগেই জড়িয়ে গিয়েছিল। তাঁরা একসময় ঘনিষ্ঠ ছিলেন। অনেকেই দাবি করেছেন, এপস্টিন ফাইল ঘাঁটলে ট্রাম্পের নাম পাওয়া যাবে। এ বার মার্কিন ধনকুবের তথা টেসলার কর্ণধার স্বয়ং ইলন মাস্কের নামও এপস্টিন বিতর্কে জড়াল। ঘটনাচক্রে, এর আগে এপস্টিন বিতর্কে ট্রাম্পের নাম জড়ানোর সময় তা নিয়ে কটাক্ষ করেছিলেন মাস্ক।
আমেরিকায় সম্প্রতি ডেমোক্র্যাটেরা একটি ছ’পাতার নথি প্রকাশ করেছেন। তাতে এপস্টিনের ব্যক্তিগত দ্বীপে মাস্কের পরিকল্পিত সফরের উল্লেখ রয়েছে। শুধু মাস্ক নন, নতুন নথিতে আরও অনেক ‘বড়’ নাম রয়েছে বলে জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যমগুলি। তার মধ্যে অন্যতম বিল গেট্স এবং ট্রাম্পের প্রাক্তন উপদেষ্টা স্টিভ ব্যানন।
আরও পড়ুন:
কী আছে এপস্টিন সংক্রান্ত নতুন নথিতে?
আমেরিকার ভার্জিন আইল্যান্ড্সের লিট্ল সেন্ট জেম্স দ্বীপটি এপস্টিনের ব্যক্তিগত দ্বীপ ছিল। ১৯৯৮ সাল থেকে ২০১৯ সালে মৃত্যুর আগে পর্যন্ত ওই দ্বীপের মালিক ছিলেন এপস্টিন। অনেক মহিলা এবং শিশুকে এই দ্বীপে নিয়ে এসে যৌন হেনস্থা করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ডেমোক্র্যাটদের প্রকাশিত নতুন নথিতে দাবি, ২০১৪ সালের ৬ ডিসেম্বর এই দ্বীপে একটি সফরের পরিকল্পনা করেছিলেন মাস্ক। যদিও তিনি আদৌ ওই দ্বীপে গিয়েছিলেন কি না, এপস্টিনের সঙ্গে দেখা করেছিলেন কি না, তা স্পষ্ট নয়। নথিতে মাস্কের নামের পাশে ছোট করে লেখা, ‘‘এখনও কি চলছে?’’ ডেমোক্র্যাটদের দাবি, মাস্ক দ্বীপে গিয়েছিলেন।
মাস্ক নিজে এই দাবি নস্যাৎ করে দিয়েছেন। এই সংক্রান্ত খবরের সঙ্গে তিনি ইংরেজিতে লিখেছেন শুধু তিনটি শব্দ, ‘দিস্ ইজ় ফল্স’, যার বাংলা তর্জমা করলে হয়, ‘এটা মিথ্যা’।
এপস্টিনের সূচি প্রকাশ করেছেন ডেমোক্র্যাটেরা। কবে কখন কার সঙ্গে তাঁর দেখা করার কথা ছিল, সূচিতে তার উল্লেখ রয়েছে। সেই সূচি অনুযায়ী, স্টিভ ব্যাননের সঙ্গে ২০১৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি এপস্টিনের প্রাতরাশের পরিকল্পনা ছিল। ২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর, মাস্কের পরিকল্পিত সফরের ঠিক আগের দিন এপস্টিনের সঙ্গে প্রাতরাশের কথা ছিল বিল গেট্সের। এ ছাড়া, পিটার থিয়েল, প্রিন্স অ্যান্ড্রুর নামও এপস্টিন সংক্রান্ত তালিকায় রয়েছে। নথি প্রকাশ করে সমগ্র এপস্টিন ফাইল প্রকাশের দাবি আরও জোরালো করেছেন ডেমোক্র্যাটেরা।
আমেরিকার বিচার বিভাগের কাছে দীর্ঘ দিন ধরেই এপস্টিন ফাইল প্রকাশের দাবি জানিয়ে আসছেন ডেমোক্র্যাটদের একাংশ। দাবি, ওই ফাইল প্রকাশ্যে এলে মার্কিন প্রেসিডেন্টের অনেক কীর্তিও ফাঁস হবে। কিন্তু ট্রাম্প প্রশাসন ফাইল প্রকাশে নারাজ। এমনকি, ট্রাম্পের সঙ্গে কয়েক মাস আগে মনোমালিন্যের সময় মাস্কও এপস্টিন নিয়ে কাঠগড়ায় তুলেছিলেন ট্রাম্পকে। ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছিলেন। পরে অবশ্য তিনি এক্স হ্যান্ডলের সেই পোস্ট মুছে দেন। এ বার সেই এপস্টিন বিতর্কে মাস্কের নামও জড়াল।