কুখ্যাত যৌন অপরাধী জেফ্রি এপস্টাইনের জন্মদিনে চিঠি লিখে শুভেচ্ছাবার্তা পাঠিয়েছিলেন আমেরিকার আরও এক প্রেসিডেন্ট (অধুনা প্রাক্তন) বিল ক্লিন্টন। এমনই দাবি করেছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ‘দ্য ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’। সম্প্রতি এই সংবাদমাধ্যমেরই একটি প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, ২০০৩ সালে ৫০তম জন্মদিনে এপস্টাইনকে নগ্ন মহিলার ছবি এঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন বর্তমান মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। ট্রাম্প অবশ্য এই দাবি উড়িয়ে দেন।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, এপস্টাইনের জন্মদিনেই চিঠি লিখে শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন ক্লিন্টন। এপস্টাইনকে পাঠানো নানা প্রভাবশালী ব্যক্তির চিঠি চামড়ার প্রচ্ছদে মোড়া একটি বইয়ে সংকলিত করা হয়। সংবাদমাধ্যমটির দাবি, ওই চিঠির সংকলনেই রয়েছে ক্লিন্টনের পাঠানো চিঠিটি।
চিঠিতে কী লিখেছিলেন ১৯৯৩ থেকে ২০০১ পর্যন্ত মার্কিন প্রেসিডেন্টের পদে থাকা ক্লিন্টন? এপস্টাইনের ‘শিশুসুলভ কৌতূহলে’ মুগ্ধ হয়েছিলেন তিনি। সেই কথাই উল্লেখ করেছিলেন চিঠিতে। এপস্টাইনকে যে তিনি অনেক দিন ধরে চেনেন এবং জানেন, সে ইঙ্গিতও আছে ওই চিঠিতে। ক্লিন্টনের মুখপাত্র ২০১৯ সালে দাবি করেছিলেন, এপস্টাইনের ব্যক্তিগত জেট বিমানে চার বার সওয়ার হয়েছিলেন ক্লিন্টন। এক বার তিনি এপস্টাইনের ম্যানহাটনের বাড়িতেও গিয়েছিলেন। যদিও ব্যক্তিগত কারণে নয়, ‘ক্লিন্টন ফাউন্ডেশন ওয়ার্ক’-এর কাজেই তিনি এপস্টাইনের কাছে গিয়েছিলেন বলে দাবি করেন তাঁর মুখপাত্র। ‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর প্রতিবেদন অনুসারে, ১৯৯৩ সালে হোয়াইট হাউসের একটি অনুষ্ঠানে এপস্টাইন এবং তাঁর প্রেমিকা ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে ছবি তোলেন বিল। আবার ম্যানহাটনের বাড়িতে নাকি ক্লিন্টনের একটি ছবি টাঙিয়ে রেখেছিলেন এপস্টাইন।
‘ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল’-এর কর্ণধার ডো জোনস এবং রুপার্ট মার্ডকের বিরুদ্ধে গত শুক্রবার মানহানির মামলা করেছেন ট্রাম্প। দাবি করেছেন এক হাজার কোটি ডলার, ভারতীয় মুদ্রায় যা ৮৬ হাজার কোটি টাকার বেশি। ট্রাম্পের দাবি, ওয়াল স্ট্রিট জার্নালের ওই প্রতিবেদনে তাঁর নামে অপপ্রচার করা হয়েছে। তাতে মানহানির আইন লঙ্ঘিত হয়েছে। ক্লিন্টন অবশ্য এখনও পর্যন্ত এই বিষয়ে মুখ খোলেননি।
এপস্টাইনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার অভিযোগে এক জনের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা ঠুকেছিলেন ভার্জিনিয়া জিফরে নামের এক মহিলা। মামলার নথিতে এপস্টাইন-ঘনিষ্ঠদের যাবতীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছিল। ইতিমধ্যে একাধিক বার কানাঘুষো শোনা গিয়েছে, ওই ফাইলে নাম রয়েছে বিল ক্লিন্টন থেকে ডোনাল্ড ট্রাম্প, স্টিফেন হকিং থেকে মাইকেল জ্যাকসন-সহ বিশ্বের তাবড় ব্যক্তির। এপস্টাইনের নথি অনুযায়ী, এঁরা প্রত্যেকেই তাঁর পৃষ্ঠপোষকতায় যৌনাচারে যুক্ত ছিলেন। এ-ও শোনা যায়, এপস্টাইনের বিলাসবহুল বিমান ‘লোলিটা এক্সপ্রেস’-এ চেপে বেশ কয়েক বার বিভিন্ন দেশে গিয়েছিলেন ট্রাম্প। চলতি বছরের গোড়ায় ওই ফাইলের একাংশ প্রকাশ্যে আনা হয়। কিন্তু সম্পূর্ণ ফাইল প্রকাশ্যে আনা হয়নি। ২০০৮ সালে এপস্টাইনের বিরুদ্ধে নাবালিকা ধর্ষণ ও নিগ্রহের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়। ২০১৯ সালের অগস্টে গ্রেফতারির মাসখানেকের মাথায় জেলেই আত্মহত্যা করেন তিনি।