Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪
Covid Vaccines

এক টিকাতেই করোনা-মুক্তি নয়

বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, টিকা নেওয়া মানে পরের দিনই করোনা-মুক্তি নয়। বরং ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শ্রাবণী বসু
লন্ডন শেষ আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৪:১৪
Share: Save:

সব পরীক্ষায় ভাল রেজাল্ট। তাই আগামী সপ্তাহে ফাইজ়ারের টিকা দেওয়া শুরু হয়ে যাচ্ছে ব্রিটেনে। কিন্তু আশার পাশাপাশি বাসা বাঁধছে আশঙ্কাও। সত্যিই করোনা-মুক্তি ঘটবে তো? আজ ‘ভারত বায়োটেক’-এর টিকা ‘কোভ্যাক্সিন’-এর ট্রায়ালে অংশগ্রহণকারী মন্ত্রী অনিল ভিজের করোনা সংক্রমণ ঘটায়, প্রশ্ন আরও ঘনীভূত হচ্ছে! বিশেষজ্ঞেরা বলছেন, টিকা নেওয়া মানে পরের দিনই করোনা-মুক্তি নয়। বরং ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু।

বুধবার ব্রিটেন ঘোষণা করে, জরুরি পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে তারা ফাইজ়ার-বায়োএনটেক জুটিকে ছাড়পত্র দিচ্ছে। করোনা রুখতে ৯৫ শতাংশ কার্যকারিতা প্রমাণ করেছে প্রতিষেধকটি। বৃহস্পতিবারই ব্রিটেনে পৌঁছে গিয়েছে প্রথম দফার টিকা। সরকারে তরফে জানানো হয়েছে, সামনের গরমের মধ্যে স্বাভাবিক জীবন ফিরে পাবেন সকলে। কিন্তু এটাও সত্যি— টিকা নেওয়া মানেই করোনা-মুক্তি নয়। করোনার বিরুদ্ধে লড়াই শুরু মাত্র!

ব্যাপারটা এ রকম— টিকা দেওয়ার পদ্ধতিটি এক দিনের নয়। ফাইজ়ার ও অক্সফোর্ডের টিকার মতো কোভ্যাক্সিন-এরও দু’টো ডোজ় নিতে হবে সকলকে। ফাইজ়ারের ক্ষেত্রে প্রথম টিকা নেওয়ার ২১ দিন পরে দ্বিতীয় ডোজ়। কোভ্যাক্সিন-এর ক্ষেত্রে ২৮ দিনের মাথায় বুস্টার। এরও দু’সপ্তাহ পরে শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। অতএব, টিকা নেওয়া মানে পরের দিনই শরীরে করোনা-প্রতিরোধ ক্ষমতা চলে আসবে, এমন নয়।

এ বার এই টিকাকরণ পদ্ধতিটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরেও কোভিড-১৯ হবে না, এমন কথা ১০০ শতাংশ জোর দিয়ে বলতে পারছেন বিশেষজ্ঞেরা। কারণ টিকা নতুন, ভাইরাসও নতুন। তার স্বভাবচরিত্র পুরোটা জানা নেই কারও।

বিজ্ঞানীরা স্পষ্টই জানাচ্ছেন, কিছু প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। যেমন, ভ্যাকসিন নেওয়ার শরীরে যে ইমিউনিটি বা রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হবে, তা কত দিন স্থায়ী হবে! প্রতি বছর টিকা নিতে হবে কি না, তা-ও স্পষ্ট নয়। বিশেষজ্ঞেরা জানাচ্ছেন, ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু হলে, বিষয়গুলো ক্রমশ স্পষ্ট হবে। কারণ, ভাইরাসের অনেকগুলি স্ট্রেন রয়েছে। বহু ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, কোনও করোনা-রোগী সুস্থ হওয়ার পরে সামান্য কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে ফের আক্রান্ত হচ্ছেন।

পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে মন্ত্রী অনিল ভিজের করোনা-আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা অচেনা নয়। ফাইজ়ার থেকে মডার্না, অক্সফোর্ড, এদের সকলের পরীক্ষাধীন ভ্যাকসিনের ট্রায়ালে কেউ না কেউ আক্রান্ত হয়েছেন। যেমন, ফাইজ়ারের তৃতীয় পর্যায়ের ট্রায়ালে ৪২ হাজার স্বেচ্ছাসেবক অংশ নিয়েছিলেন। তার মধ্যে ১৭০ জন সংক্রমিত হন। এই ১৭০ জনের মধ্যে ৮ শতাংশ ভ্যাকসিন নিয়েছিলেন। বাকিরা প্লাসিবো।
অর্থাৎ খুব অল্প সংখ্যক লোক ভ্যাকসিন নেওয়া পরেও করোনা-আক্রান্ত হয়েছেন। সেই ভিত্তিতেই ফাইজ়ারের ‘একশোয় ৯৫’ পাওয়া। অর্থাৎ এটাই বাস্তব— ট্রায়ালে অংশ নেওয়া ব্যক্তির করোনা সংক্রমণ হওয়া নজিরবিহীন ঘটনা নয়।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Covid Vaccines Coronavirus
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE