Advertisement
১৮ জানুয়ারি ২০২৫

জ্বলছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড, মৃত্যু তরুণী সাংবাদিকের

বৃহস্পতিবার রাতে দাঙ্গার আগুনে জ্বলতে থাকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের লন্ডনডেরি। আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা শহরটিকে ‘ডেরি’ বলে ডাকে। তবে ব্রিটিশ সংযুক্তবাদীদের কাছে লন্ডনডেরি।

লায়রা ম্যাকি

লায়রা ম্যাকি

সংবাদ সংস্থা
শেষ আপডেট: ২০ এপ্রিল ২০১৯ ০১:৪৫
Share: Save:

নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের ‘লন্ডনডেরি’তে বিক্ষোভকারীদের গুলিতে নিহত হলেন এক তরুণী সাংবাদিক।

বৃহস্পতিবার রাতে দাঙ্গার আগুনে জ্বলতে থাকে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের লন্ডনডেরি। আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা শহরটিকে ‘ডেরি’ বলে ডাকে। তবে ব্রিটিশ সংযুক্তবাদীদের কাছে লন্ডনডেরি। পুলিশের দাবি, গত কাল রাতে ক্রেগান এলাকায় গণ্ডগোল শুরু করে ‘ডিসিডেন্ট রিপাবলিকান’রা। একের পর এক গাড়ি জ্বালিয়ে দেয় দুষ্কৃতীরা। ছুড়তে থাকে পেট্রল বোমা। সে সময়ই এক বন্দুকবাজের গুলিতে গুরুতর জখম হন ২৯ বছরের সাংবাদিক লায়রা ম্যাকি। পুলিশের ভ্যানের কাছে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। কিছু ক্ষণ পরেই লায়রার মৃত্যু হয়। তাঁর মৃত্যুর জন্য ‘ডিসিডেন্ট রিপাবলিকান’দের দায়ি করেছে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের পুলিশ।

৩০ বছরের দীর্ঘ সংঘর্ষের পরে শান্তি চুক্তি হয় নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডে। এই সংঘর্ষটিকে ‘দ্য ট্রাবল’ বা ‘নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড কনফ্লিক্ট’ বলে। নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অন্তর্ভূক্ত। সে দেশের প্রোটেস্ট্যান্টরা চান ব্রিটেনের মধ্যেই থাকুক নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড। কিন্তু ক্যাথলিক আইরিশ জাতীয়তাবাদীরা চান ব্রিটেন থেকে বেরিয়ে এসে নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ও রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড জুড়ে ইউনাইটেড আয়ারল্যান্ড তৈরি হোক। ‘ডিসিডেন্ট রিপাবলিকান’ বা ‘আইরিশ রিপাবলিকান’রা তাই বর্তমান শান্তি চুক্তিকে সমর্থন করে না। আয়ারল্যান্ডকে একটি সার্বভৌম দেশ, ‘ইউনাইটেড আইরিশ রিপাবলিক’ হিসেবে গড়ে তুলতে চান তাঁরা। বর্তমানে দ্বীপরাষ্ট্রটি রাজনৈতিক ভাবে দ্বিধাবিভক্ত। আয়ারল্যান্ডের বেশির ভাগ অংশ ‘রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড’-এর অধীনে। আর নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের অন্তর্ভূক্ত।

অ্যাসিস্ট্যান্ট চিফ কনস্টেবল মার্ক হ্যামিলটন সাংবাদিক বৈঠকে জানান, গোটা ঘটনাটিকে ‘সন্ত্রাস’-এর চোখে দেখছে পুলিশ। শুরু হয়েছে খুনের তদন্ত। লায়রার জন্ম বেলফাস্টে। একাধিক প্রকাশনা সংস্থার জন্য তিনি কলম ধরেছিলেন। ২০১৬ সালে একটি প্রথম সারির পত্রিকায় ইউরোপের প্রথম ৩০ জন সাংবাদিকের মধ্যে নাম ছিল লায়রা ম্যাকির। ২০০১ সালের পরে এই প্রথম কোনও সাংবাদিক খুন হলেন ব্রিটেনে।

আইরিশ স্বাধীনতা উপলক্ষে গত কাল সংঘর্ষ পরিস্থিতি তৈরি হয় ডেরিতে। হ্যামিলটন জানান, শহরের বিভিন্ন প্রান্তে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছিল। তাদের কাছে খবর ছিল, ডিসিডেন্ট রিপাবলিকানরা এলাকার নানা জায়গায় আগ্নেয়াস্ত্র ও বিস্ফোরক জমিয়ে রেখেছে। হ্যামিলটন জানান, রাত ন’টা নাগাদ একটা ভিড় জমতে থাকে ক্রেগান এলাকায়। ভিড় থেকে পুলিশকে লক্ষ করে পেট্রল বোমা ছোড়া হয়। পুলিশের দু’টি গাড়ি তুলে নিয়ে গিয়ে আগুন ধরিয়ে দেয় বিক্ষোভকারীরা।

অনেকেই ভয় পাচ্ছেন এ দিনের ঘটনায় ব্রেক্সিট পরিস্থিতিতে নতুন করে জটিলতা তৈরি হবে। কারণ, নর্দার্ন আয়ারল্যান্ড ব্রিটেনের মধ্যে। হিসেব মতো ব্রেক্সিট হলে তারাও ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাইরে চলে যাবে। আর রিপাবলিক অব আয়ারল্যান্ড ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য থেকে যাবে।

অন্য বিষয়গুলি:

Death Riot Northern Ireland
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy