প্রতীকী ছবি।
করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধে এতদিন নির্ভরযোগ্য অস্ত্র ছিল টিকা। তবে টিকা করোনা প্রতিরোধক। তার প্রয়োগ হয় করোনা হতে পারে এই অনুমানে। করোনা সংক্রমিত হওয়ার আগেই। এই প্রথম এমন অস্ত্র হাতে আসতে চলছে যা করোনা হওয়ার পর কাজে লাগবে।
দু’টি ট্যাবলেট। একটির নাম প্যাক্সলভিড। অন্যটি, মলনিউপিরাভির। আপাতত এই দুই ট্যাবলেটকেই করোনার চিকিৎসার অস্ত্রাগারে সেরা অস্ত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছেন বিশেষজ্ঞরা। আর পাঁচটা অসুখের যেমন নির্দিষ্ট ওষুধ থাকে করোনার ক্ষেত্রে এত দিন তা ছিল না। রেমডেসিভির, টসিলিজুমাবের মতো কিছু ওষুধ যা একাধিক রোগে ব্যবহার করা যায় তার সাহায্যেই চিকিৎসা করা হচ্ছিল। তবে নতুন দুই ট্যাবলেটের আবির্ভাব সেই অভাব আর কিছু দিনের মধ্যেই পূরণ করতে চলেছে।
দু’টি ট্যাবলেটের করোনা মোকাবিলার ক্ষমতা কতটা, তা বোঝাতে একটা সোজাসাপটা হিসেব দিয়েছেন গবেষকরা। এ ব্যাপারে একটি সমীক্ষা চালানো হয়েছিল। দেখা গিয়েছে প্যাক্সলভিড করোনা রোগীদের হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার সম্ভাবনা ৮৯ শতাংশ কমিয়েছে। অন্য দিকে, মলনিউপিরাভির ওষুধটি যাঁদের দেওয়া হয়েছিল, তাঁদের মধ্যে কেবল ৭.৩ শতাংশ রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। দু’টি ওষুধের ২৮ দিনের চিকিৎসায় কেউ মারা যাননি। কোনও করোনা রোগী গুরুতর অসুস্থও হয়ে পড়েননি। ১,২১৯ জন করোনা রোগীকে প্যাক্সলভিড দেওয়া হয়েছিল। তাঁদের মধ্যে কেবল ০.৮ শতাংশ রোগীকে শেষ পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়।
করোনার ট্যাবলেট প্যাক্সলভিড তৈরি করেছে আমেরিকার সংস্থা ফাইজার। যাঁরা ইতিমধ্যেই করোনার ২৫০ কোটি টিকা তৈরি করে ফেলেছে। মলনিউপিরাভির তৈরি করেছে মার্কস নামে আরও একটি ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা। সংস্থা দু’টিকে ইতিমধ্যেই করোনার ওষুধের বড় বরাত দিয়ে দিয়েছে ব্রিটেন। বরিস জনসনের সরকার প্রায় ৫ লক্ষ মলনিউপিরাভির আর আড়াই লক্ষ প্যাক্সলভিড চেয়ে পাঠিয়েছে। আমেরিকাও ১০ লক্ষের বেশি প্যাক্সলভিড সংরক্ষণ করেছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
কিন্তু কত দাম হতে পারে এই ওষুধের?
দাম নিয়ে ফাইজার এবং মার্কের সঙ্গে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন দেশ আলোচনা শুরু করেছে। তবে রয়টার্সের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু) এই ওষুধের এক একটি কোর্স ১০ ডলারের বিনিময়ে বিভিন্ন দেশে পৌঁছে দেওয়ার প্রকল্প নিয়েছে।
দিনে কত বার, কী ভাবে খেতে হবে এই ওষুধ?
বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী প্যাক্সলভিড খাওয়া শুরু করতে হবে করোনা সংক্রমিত হওয়ার ৩-৫ দিনের মধ্যে। রোগীকে দিনে দু’বার প্যাক্সলভিডের তিনটি ট্যাবলেট খেতে হবে। মার্কের মলনিউপিরাভিরও সংক্রমণের ৫ দিনের ভিতর আরম্ভ করতে হবে। দিনে দু’বার চারটি বড়ি খেতে হবে।
ভারতে কবে থেকে পাওয়া যাবে এই ওষুধ?
ভারতে এখনও এই ওষুধ পরীক্ষানীরিক্ষার স্তরেই। সিপলা, ড. রেড্ডি, এমকিওর, সান এবং টরেন্টের মতো কিছু ওষুধ প্রস্তুতকারী সংস্থা মলনিউপিরাভিরের ক্লিনিকাল ট্রায়ালের জন্য মার্কের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy