প্রয়াত হলেন বাংলাদেশের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। বয়স হয়েছিল ৮০। অশীতিপর বিএনপি নেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি গত কয়েক দিন ধরেই সঙ্কটজনক ছিল। রাজধানী ঢাকার হাসপাতালে সিসিইউ-তে (করোনারি কেয়ার ইউনিট) চিকিৎসাধীন ছিলেন তিনি। মঙ্গলবার সকালে হাসপাতালেই মৃত্যু হয় তাঁর।
খালেদার কিডনির সমস্যা অনেক পুরনো। গত ২৩ নভেম্বর শ্বাসকষ্টের কারণে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। পরীক্ষার পর ফুসফুসে সংক্রমণ এবং নিউমোনিয়া ধরা পড়ে। সূত্রের খবর, বয়সজনিত কারণে পরিস্থিতি অনেক জটিল হয়ে উঠেছিল। কারণ, তাঁর শরীরে আগে থেকেই একাধিক সমস্যা ছিল। একটির চিকিৎসা করতে গেলে অন্য রোগের উপর তার বিরূপ প্রভাব পড়ছিল। কিডনির কার্যকারিতাও অনেকটা কমে গিয়েছিল খালেদার।
সোমবারই খালেদার চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিক্যাল বোর্ডের সদস্যেরা জানিয়েছিলেন, বিএনপি নেত্রীর শারীরিক অবস্থা অত্যন্ত সঙ্কটজনক। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ার কারণে তাঁকে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয়। নিয়মিত ডায়ালিসিসও চলছিল। সোমবার রাতেও মাকে দেখতে হাসপাতালে গিয়েছিলেন খালেদা-পুত্র তারেক। তার আগে বিএনপি দফতরের সামনে থেকে খালেদার আরোগ্যকামনায় প্রার্থনা করার অনুরোধ করেছিলেন তিনি।
শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা হিসাবে যেমন বাংলাদেশের রাজনীতিতে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিলেন হাসিনা, তেমনই খালেদার পরিচিতি ছিল জিয়াউর রহমানের স্ত্রী হিসাবে। স্বামীর মৃত্যুর পর অবশ্য নিজেই নিজের পরিচিতি তৈরি করেছিলেন খালেদা। হাল ধরেছিলেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী পার্টি (বিএনপি)-র। ১৯৯১ সালে বাংলাদেশের প্রথম মহিলা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী হন খালেদা।
দু’দফায় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন খালেদা। প্রথম বার ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ পর্যন্ত। দ্বিতীয় এবং শেষ বার ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত। নারীশিক্ষার প্রসারে খালেদা সরকারের ভূমিকার কথা স্বীকার করে থাকেন অনেকেই। তবে তাঁর আমলে দুর্নীতির অভিযোগও উঠেছে। ২০১৮ ’টি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থায় দুর্নীতির অভিযোগে ১৭ বছরের কারাদণ্ড হয় খালেদার। সেই সময় থেকেই একাধিক বার অসুস্থ হয়ে পড়তে থাকেন তিনি। চলতি বছরের গোড়ায় তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য লন্ডনে উড়িয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। এ বারেও তেমন পরিকল্পনা করা হয়েছিল। কিন্তু বিএনপি নেত্রীর শারীরিক পরিস্থিতি স্থিতিশীল না-থাকায় সেই ঝুঁকি নেওয়া যায়নি।