প্রতিবাদ: পাথর পুলিশের দিকে। প্যারিসের রাস্তায়। ছবি: এএফপি।
অশান্তির আঁচটা ছিলই। মে দিবস উপলক্ষে সেটাই এ বার তাণ্ডবের আকার নিল।
প্রেসিডেন্টের সংস্কার নীতির বিরুদ্ধে গত কয়েক সপ্তাহ ধরেই বিক্ষোভ-আন্দোলন চলছিল ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসের রাস্তায়। গত কাল মে দিবসের মিছিল আচমকাই হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। রাস্তায় নেমেছিলেন হাজার খানেক বিক্ষোভকারী। এঁদের পোশাকি নাম ‘ব্ল্যাক ব্লকস’। বিক্ষোভকারীদের বেশির ভাগেরই মুখ ছিল কালো কাপড় বা মুখোশে ঢাকা। গাড়ির শো-রুম, রেস্তরাঁ ভাঙচুর থেকে শুরু করে পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ছোড়া— সবই চলেছে কাল। প্যারিস পুলিশের এক শীর্ষ কর্তা জানিয়েছেন, তাঁরা বিক্ষোভকারীদের আটকাননি, কারণ তা করলে সাধারণ মানুষের প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারত। ওই পুলিশ অফিসার জানিয়েছেন, ‘‘বোতল বোমা হাতে পুলিশের দিকে ধেয়ে আসার অর্থই হল ওরা আমাদের পুড়িয়ে মারতে এসেছিল। আমরা সেটাই আটকাতে চেয়েছিলাম।’’ গত বছর এমনই এক বিক্ষোভ আটকাতে গিয়ে এক ফরাসি পুলিশ অফিসার গুরুতর অগ্নিদগ্ধ হন বলেও মনে করিয়ে দিয়েছেন ওই অফিসার।
মে দিবস উপলক্ষে প্রতি বছরই বিশাল মিছিলের আয়োজন করে ফ্রান্সের শ্রমিক সংগঠনগুলি। এ বারও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুলিশ জানিয়েছে, ২২ হাজার মানুষ শান্তিপূর্ণ মিছিলে অংশ নেবেন বলে তাদের জানা ছিল। কিন্তু তার মধ্যেই একটা বড় অংশ আচমকা ভাঙচুর শুরু করে। গোটা শহর জুড়ে চলে তাণ্ডব। তাঁদের হাতে ছিল সোভিয়েত পতাকা। সঙ্গে সরকার বিরোধী ব্যানার। ফ্যাসিবাদ বিরোধী ওই মিছিলের মূল উদ্দেশ্য ছিল নতুন প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাকরঁ-র সংস্কার নীতির বিরোধিতা করা। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রেলের শ্রমিক ইউনিয়নের নেতারা এটাই করে আসছেন। কিন্তু সেই বিক্ষোভ এতটা হিংসাত্মক হয়ে ওঠেনি এত দিন।
কালো মুখোশ পরা কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী কার্যত দখল নিয়েছিল প্যারিসের রাস্তার। বিক্ষোভকারীদের হটাতে তাদের লক্ষ্য করে শেষে কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে রায়ট পুলিশ। প্রেসিডেন্ট মাকরঁ এখন অস্ট্রেলিয়া সফরে। সেখান থেকেই টুইট করে এই হিংসার নিন্দা করেন তিনি। ভাঙচুরের ঘটনায় যাঁরা জড়িত, অবিলম্বে তাঁদের বিরুদ্ধে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। সরকারি মুখপাত্র বেঞ্জামিন গ্রিভ-র কথায়, ‘‘সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকলে মুখ না ঢেকে তার প্রতিবাদ করো। হু়ডে মাথা আর মুখোশে মুখ ঢেকে যারা প্রতিবাদ করে তারা গণতন্ত্রের শত্রু বলেই মনে করি।’’ কাল গোলমালে জড়িত থাকার অভিযোগে ২০০ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy