Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

কিমকে ঠেকাতে আবারও খাঁড়া

কাল ছিল ভোট। যদিও হোয়াইট হাউসে ঘুঁটি সাজানো চলছিল অনেক আগে থেকেই। তার পর চলতি মাসের গোড়ায় কিম হাইড্রোজেন বোমা ফাটাতেই চূড়ান্ত পদক্ষেপ করেন মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জরুরি বৈঠক ডাকে রাষ্ট্রপুঞ্জও।

সংবাদ সংস্থা
রাষ্ট্রপুঞ্জ শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০৩:০৯
Share: Save:

অগত্যা সায় মার্কিন প্রস্তাবেই। উত্তর কোরিয়ার উপর আরও কয়েক প্রস্ত বাণিজ্যিক নিষেধাজ্ঞা চাপাল রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদ। সর্বসম্মতিক্রমে। ২০০৬ থেকে শুরু করে রাষ্ট্রপুঞ্জের তরফে এ নিয়ে সাত বার খাঁড়া পড়ল পিয়ংইয়ংয়ের উপর।

ওয়াশিংটনের দাবি, কিম জং উনের লাগাতার পরমাণু কর্মসূচি রুখতে আপাতত এর চেয়ে ভাল কোনও বিকল্প ছিল না। চিন আর রাশিয়া এতেও বেঁকে বসতে পারে বলে গোড়ায় একটা আশঙ্কা তৈরি হয়। যদিও দিনের শেষে কিমের ঝুলিতে কিচ্ছুটি নেই। নিরাপত্তা পরিষদে ১৫টা ভোটই গেল পিয়ংইয়ংয়ের অর্থনৈতিক শিরদাঁড়া ভেঙে দেওয়ার পক্ষে। তেল আমদানি থেকে শুরু করে বস্ত্র রফতানি, কয়লা-সিসা উৎপাদন— কিমকে ফের ‘না’ বলে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ।

কাল ছিল ভোট। যদিও হোয়াইট হাউসে ঘুঁটি সাজানো চলছিল অনেক আগে থেকেই। তার পর চলতি মাসের গোড়ায় কিম হাইড্রোজেন বোমা ফাটাতেই চূড়ান্ত পদক্ষেপ করেন মার্কিন প্রেসি়ডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। জরুরি বৈঠক ডাকে রাষ্ট্রপুঞ্জও। তড়িঘড়ি নিষেধাজ্ঞা প্রস্তাব পাঠিয়ে ভোটের ডাক দেন ট্রাম্প। উত্তর কোরিয়ায় পরমাণু কর্মসূচি নিয়ে এমনিতেই নিষেধ রয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জের। আর কাল ভোটের ফল বেরোতেই বোঝা গেল— এ নিয়ে আরও অন্তত ছ’টি দিক থেকে কিমের দেশকে চাপে রাখতে চাইছে আমেরিকা। যার জেরে তেল, বস্ত্রশিল্পের পাশাপাশি ভিন্ দেশে উত্তর কোরিয়ার শ্রমিক নিয়োগ বন্ধ করে দিল রাষ্ট্রপুঞ্জ। কোপ পড়ল অন্য দেশের সঙ্গে যৌথ বাণিজ্যেও। মার্কিন প্রস্তাব মোতাবেক কালো তালিকাভুক্ত হয়েছে উত্তর কোরিয়ার বেশ কয়েকটি সরকারি প্রতিষ্ঠানকে।

শোনা যাচ্ছিল, শাসক কিম আর তাঁর দলের যাবতীয় সম্পত্তিও ফ্রিজ করা হতে পারে। প্রায় শেষ মুহূর্তে আমেরিকা তা ছেঁটে ফেলায় কিছুটা হলেও স্বস্তি কিম শিবিরে। গোড়ায় উত্তর কোরিয়াকে তেল সরবরাহ পুরো বন্ধ করে দিতে চেয়েছিল আমেরিকা। কিন্তু চিন-রাশিয়ার আপত্তিতে সুর নরমে বাধ্য হয় ওয়াশিংটন। গৃহীত প্রস্তাবে তেল আমদানি ৩০ শতাংশ কমানোর কথা বলা হয়েছে।

তবু হুমকি জারি রেখেছে উত্তর কোরিয়া। গত কালও আমেরিকাকে ‘রক্তপিপাসু পশু’-র তকমা দিয়ে তারা জানায়, ওয়াশিংটন যদি এ ভাবে চাপ অব্যাহত রাখে, তার ফল হবে ভয়াবহ। পিয়ংইয়ংয়ের আয়ের অন্যতম বড় উৎস বস্ত্রশিল্প। এতে নিষেধাজ্ঞা জারি হওয়ায় কিমের দেশ বড়সড় ক্ষতির মুখে পড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। ভোটাভুটি শেষে রাষ্ট্রপুঞ্জে মার্কিন রাষ্ট্রদূত নিকি হ্যালির দাবি, ‘‘উত্তর কোরিয়ার উপর নতুন নিষেধ চাপানোয় আনন্দের কিছু নেই। কোনও ভাবেই আমরা যুদ্ধ আনতে চাই না।’’

যদিও নয়া নিষেধাজ্ঞার ফল আদৌ মিলবে কি না, ধন্দে আমেরিকারই একাংশ। কিমের ‘বন্ধু’ চিনের ভূমিকা নিয়ে আগেও একাধিক বার হতাশা জাহির করেছেন ট্রাম্প। ভাবাচ্ছে রাশিয়াও। নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্য দেশ হিসেবে এই দু’টি দেশই চাইলে মার্কিন প্রস্তাবে ভেটো দিতে পারত। বিশেষত মস্কো সেই পথে না হাঁটায় উত্তর কোরিয়ার সঙ্গে অবৈধ বাণিজ্যের আশঙ্কা বাড়তে চলেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE