E-Paper

অনাহারে ধুঁকছে গাজ়া, শঙ্কা বৃদ্ধি

প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্বাস্থ্য এবং অন্য পরিকাঠামো ধরে ধরে ধ্বংস করা, নির্বিচারে হত্যা, প্রজন্ম ছারখার করে দেওয়ার নীতির মতোই গণহত্যার একটা অধ্যায় হল অনাহার নামিয়ে আনার কৌশল।’

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৪ অগস্ট ২০২৫ ০৫:০৭
এমন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি গত ২০ বছরে কখনও হয়নি।

এমন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি গত ২০ বছরে কখনও হয়নি। —ফাইল চিত্র।

গাজ়ায় দেরিতে হলেও দুর্ভিক্ষ ঘোষণার ‘প্রশংসা’ করল প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক। রাষ্ট্রপুঞ্জ দুর্ভিক্ষ ঘোষণার ২৪ ঘণ্টায় মধ্যে ইজ়রায়েলি ক্ষেপণাস্ত্র হানায় গাজায় মৃত্যু হয়েছে ৭০ জন প্যালেস্টাইনির।

আজ প্যালেস্টাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রক একটি বিবৃতিতে বলেছে, ‘স্বাস্থ্য এবং অন্য পরিকাঠামো ধরে ধরে ধ্বংস করা, নির্বিচারে হত্যা, প্রজন্ম ছারখার করে দেওয়ার নীতির মতোই গণহত্যার একটা অধ্যায় হল অনাহার নামিয়ে আনার কৌশল।’ যে হাজার হাজার মানুষের প্রাণ গিয়েছে, তাঁদের বাঁচানো যেত বলে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে হাজার হাজার জীবন নিয়ে বাজিখেলা চলছে এখনও। বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘আন্তর্জাতিক মহলের সামনে এখন সত্যিকারের পরীক্ষা। এ শুধু বিবৃতি দেওয়ার সময় নয়, তা সে যত গুরুত্বই তার থাক না কেন, এটা পদক্ষেপ করারও সময়।’

এ দিকে, ইউনিসেফ বলেছে, শিশুদের জন্য আর কোনও ভাবেই বাসযোগ্য নেই গাজ়া। ইতিমধ্যে প্রচুর শিশুর মৃত্যু হয়েছে অনাহারে। নাসের মেডিক্যাল কমপ্লেক্সের শিশুদের হাসপাতালের ডিরেক্টর আহমদ আর-ফারা একটি সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে গুরুতর অপুষ্টির শিকার ১২০ জন ভর্তি। এই চিকিৎসার জন্য ওই রকম দশটি হাসপাতাল দরকার। আশ্রয়শিবিরগুলির হাজার হাজার শিশু যদি বা প্রাণে বেঁচে যায়, এই অপুষ্টির জের সারা জীবন ধরে তাদের বয়ে বেড়াতে হবে বলে জানান তিনি।

আল-শিফা হাসপাতালের ডিরেক্টর মহম্মদ আবু সালমিয়া জানাচ্ছেন, তিন লক্ষেরও বেশি শিশুর অপুষ্টি অত্যন্ত উদ্বেগের পর্যায়ে পৌঁছেছে। জখম হয়ে হাসপাতালে আসা প্রত্যেকের শরীরে অপুষ্টির লক্ষণ স্পষ্ট। দীর্ঘ সময় লেগে যাবে এর পরিণাম বুঝতে বুঝতে।

গাজ়ায় কাজ করা এক সংবাদকর্মী লিখেছেন, মে মাসের শেষ থেকে এক একটা দিন ইজ়রায়েল-আমেরিকা পোষিত বিতর্কিত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ত্রাণ শিবির খুলেছে আর খাবারের আশা নিয়ে আসা নিরন্ন মানুষ ইজ়রায়েলি হামলায় নিহত হয়েছেন। অনাহার এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, মানুষ প্রাণ যাবে জেনেও ছুটছেন খাবারের জন্য। এ দিকে, ইজ়রায়েলের যুদ্ধবিরোধী মানুষজনও তেল আভিভে আজ অনাহার পরিস্থিতির প্রতিবাদ জানাতে জড়ো হয়েছিলেন।

রাষ্ট্রপুঞ্জের খাদ্য নিরাপত্তা প্রকল্পের একটি উচ্চ পর্যায়ের প্যানেলের এক সদস্যের মতে, এমন দুর্ভিক্ষ পরিস্থিতি গত ২০ বছরে কখনও হয়নি। এর সবচেয়ে কাছাকাছি অবস্থা হয়েছিল সুদানে, আংশিক দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু সেখানেও এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যাওয়ার উপায় ছিল মানুষের। গাজ়ার মানুষের সেটুকু অবধি নেই। অনেক আগেই দুর্ভিক্ষ বেধেছে বলে উল্লেখ করে তিনি জানিয়েছেন, সমস্ত তথ্য জোগাড় করে আনুষ্ঠানিক ভাবে দুর্ভিক্ষ ঘোষণার জন্য বেশ কিছুটা সময় লেগে যায়।

ইজ়রায়েল প্রথমে দুর্ভিক্ষ আটকানোর কথা বলে এগোলেও গত তিন মাসে তারা ত্রাণের ট্রাক ঢোকায় রাশ টেনে এই পরিস্থিতি করেছে বলেও উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘এখন গাজ়ায় ঢোকার আগে যেন প্রতিটা ক্যালোরি হিসাব করছে ইজ়রায়েল।” ত্রাণের খাবারের মধ্যে চকলেট আটকে দেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাচ্চারা ওগুলো পেয়ে খুশি হোক, সেটাওওরা চায় না।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

gaza Israel Army

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy