এক কোণায় পড়ে রয়েছে ভাঙা-চোরা নৌকাটা। কাঠের পাটাতনের উপর ছড়িয়ে ছিটিয়ে কঙ্কলের সারি। ছেঁড়়া মাছ ধরার জাল। ঠিক যেন জলে ভাসমান এক দুঃস্বপ্ন। জাপানের সমুদ্র তটে এখন শুধুই মৃতদের কথোপকথন। জাপানের সমুদ্র তটে এখন শুধুই এদের আনাগোনা। অক্টোবর মাস থেকে বাইশটি মৃতদেহ নিয়ে ভেসে এসেছে এক ডজন জাহাজ। মৃতদের পরিচয় জানা না গেলেও কাঠের বোর্ড বলছে ‘উত্তর কোরিয়া।’
আধুনিকতার ছোঁয়া লাগেনি ১০ থেকে ১২ মিটার লম্বা নৌকাগুলোয়। জিপিএস নেভিগেশনও নেই। কোথাও কোথাও শবের হাল এতটাই সঙ্গীন যে মৃত্যুর কারণও বোঝার উপায় নেই। মৃত্যু উপত্যকায় দুঃস্বপ্নেরকখনও পাটাতন জুড়ে পড়ে রয়েছে ছ’টি খুলি, কখনও বা টুকরো টুকরো হাড়গোড় জুড়ে পাওয়া যেতে পারে আস্ত কঙ্কাল।
তবে জাপানের কাছে কিন্তু এই ঘটনা মোটেও বিরল নয়। প্রতি বছরই মৃত্যু উপত্যকায় ভেসে আসে জাহাজের পর জাহাজ। এ বছর এখনও পর্যন্ত ৩৪টি জাহাজ ভেসে এসেছে। আগের বছর এসেছিল ৬৫টি জাহাজ, তার আগের বছর ৮০টি। দুর্ভিক্ষ জর্জরিত উত্তর কোরিয়ার ৪১ শতাংশ মানুষই যে অভূক্ত, অর্ধভূক্ত দিন কাটান। শীতে পেট ভরাতে স্কুইড, স্যান্ডফিশ, কিং ক্র্যাবের উপরই ভরসা রাখতে হয়। আর সেই মাছ ধরতে গিয়েই যে ঘটে বিপত্তি।
২০১১-এ ক্ষমতায় আসার পর উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জঙ উন মত্স্যজীবীদের কাজে নিযুক্ত করেন। চিনের মতো দেশে মাছ রফতানি করে বিদেশি মূদ্রা আনার উদ্দেশে মাছ ধরতে পাড়ি দেন এই হত দরিদ্র মত্স্যজীবীরা। দুর্ভিক্ষ, প্রাকৃতিক দুর্যোগে মাঝ সমুদ্রেই শেষ হয়ে যায় স্পপ্ন। পাড়ে ভেসে আসে কাঠের বোর্ড। স্রোতে ঝাপসা হয়ে যাওয়া লেখা পড়া যায়-‘‘কোরিয়ান পিপল’স আর্মি নং ৩২৫’’।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy