ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ছাড়পত্র না পাওয়া পর্যন্ত ইরান পরমাণু চুক্তি সই করতে রাজি হবে না বলে বুধবার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ) অভিযোগ করল, আন্তর্জাতিক বিধিনিষেধ না মেনে পরমাণু কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে তেহরান। গত দু’দশকের মধ্যে প্রথম বার তারা এমন কাজ করছে বলেও জানিয়েছে আইএইএ।
পরমাণু চুক্তি নিয়ে আগামী সপ্তাহে আমেরিকার সঙ্গে ষষ্ঠ দফার বৈঠকে বসতে চলেছে ইরান। তার আগে বৃহস্পতিবার আইএইএর গভর্নর বোর্ড জানিয়েছে, গোপনে পরমাণু কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছে মাসুদ পেজ়েকশিয়ানের সরকার। অবশ্য গত সপ্তাহেই ইরান জানিয়েছিল, ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ কর্মসূচিতে আমেরিকা রাজি না হলে পরমাণু চুক্তি করা হবে না। সে দেশের বিদেশমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি বলেছিলেন, ‘‘ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পরিহার করা জাতীয় স্বার্থের বিরোধী। ইরান কখনও সেই পথে হাঁটবে না।’’
ওমানের মধ্যস্থতায় গত মাসে আমেরিকা এবং ইরান পরমাণু চুক্তি নিয়ে পঞ্চম দফার বৈঠক করেছিল। সেখানে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ পুরোপুরি বন্ধ করার শর্ত দিয়েছিল ওয়াশিংটন। পাশাপাশি, তেহরানকে বলা হয় সমৃদ্ধ করা সমস্ত ইউরেনিয়াম অন্য কোনও দেশে জমা রাখতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি হয়নি ইরান। এই আবহে গত ৪ জুন আইএইএ-র ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল মারিয়ানো গ্রোসির সঙ্গে বৈঠক করেন আরাগচি। সম্প্রতি, আইএইএ জানিয়েছিল, ইরান পরমাণু বোমা বানানোর উদ্দেশে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণ চালাচ্ছে। আইএইএ-কে তার জববে ইরান জানায়, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্যই ৬০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম উৎপাদন করা হচ্ছে।
সাধারণ ভাবে পরমাণু বোমা তৈরি করতে গেলে ৯০ শতাংশ পরিশুদ্ধ ইউরেনিয়াম প্রয়োজন। এখনও তেহরান সেই দক্ষতা অর্জন করতে পারেনি বলেই আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মত। তবে ৪২ কিলোগ্রাম ৬০ শতাংশ সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম ব্যবহার করে কম ক্ষমতাসম্পন্ন পরমাণু বোমা বানানো সম্ভব। বৃহস্পতিবার আইএইএ-র গভর্নর বোর্ডে পেশ করা রিপোর্টে অভিযোগ তোলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে সহযোগিতা করছে না ইরান।