ছবি এএফপি।
ইস্তফার আশ্বাসে কি তা হলে চিঁড়ে ভিজল?
ব্রেক্সিট চুক্তি নিয়ে ফের ভোটের প্রস্তুতি চলছে ব্রিটিশ পার্লার্মেন্টে। তবে বৃহস্পতিবার সন্ধে পর্যন্ত বোঝা যাচ্ছে না, সেই ভোট কি প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে-র পুরনো চুক্তি নিয়ে, নাকি সংশোধিত ও পরিবর্তিত কোনও চুক্তি পেশ করা হবে পার্লামেন্টে?
কাল সন্ধেবেলা এক বৈঠক ডেকে প্রধানমন্ত্রী মে নাটকীয় ভাবে দলীয় এমপিদের বলেন, ‘‘আমায় আপনারা ভোট দিন, তা হলে আমি ইস্তফা দেব।’’ টেরেসার যুক্তি ছিল, তাঁর দলের অনেক এমপি-ই চান না যে ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)-এর সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে নিয়ে যান মে। তাই তিনি ‘পরবর্তী নেতা’র রাস্তা পরিষ্কার করে দিতে চান।
ইইউ থেকে ব্রিটেন বেরিয়ে গেলে, ইইউ-এর সঙ্গে দফায় দফায় আলোচনায় বসতে হবে ব্রিটেনকে। ঠিক করা আছে, ২৯ মার্চ ২০১৯ থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০২০, এই ২১ মাস ‘ট্রানজ়িশন পিরিয়ড’ বা অন্তর্বর্তী সময় হিসেবে গণ্য করা হবে। ব্রেক্সিট পরবর্তী সময়ে এই ২১ মাস অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ, কারণ ইইউ-এর সঙ্গে ব্রিটেনের বাণিজ্যিক ও অন্যান্য দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের খুঁটিনাটি তৈরি হবে এই সময়সীমার মধ্যেই। এই সময়ে টেরেসা ব্রিটেনের হয়ে ঠিক মতো সওয়াল করতে পারবেন না বলে মত তাঁর দলেরই অনেক এমপি-র। যাঁর মধ্যে অন্যতম প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী বরিস জনসন। সেই সব বিক্ষুব্ধ স্বরকে প্রশমিত করতেই ইস্তফা দেওয়ার কথা বলেছিলেন টেরেসা। তাঁর একটাই শর্ত ছিল, তাঁর দলের সব এমপিকে টেরেসার চুক্তিতে ভোট দিতে হবে। কারণ প্রধানমন্ত্রী এখনও মনে করেন, ‘‘ব্রিটেনের সামনে এটাই সব থেকে ভাল পথ।’’ প্রথম যখন এই চুক্তি পার্লামেন্টে পেশ করা হয়, বিপুল ভোটে হেরে গিয়েছিলেন মে। তাঁর দলেরই একশোরও বেশি এমপি তাঁর চুক্তির বিপক্ষে ভোট দিয়েছিলেন।
বুধবার গভীর রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ভোটাভুটি হয় পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ বা হাউস অব কমন্সে। ব্রেক্সিট বাতিল করা হবে কি না, সেই নিয়ে ভোটাভুটিতে ‘বাতিল করার পক্ষে’ ভোট পড়ে ১৮৪টি। ২৯৩ জন এমপি মত দেন, ব্রেক্সিট হওয়াই উচিত। ব্রেক্সিট হবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত সাধারণ মানুষের হাতে ছেড়ে দিতে দ্বিতীয় বার গণভোটেরও প্রস্তাব পেশ করা হয়। খুব কম ভোটে সেই প্রস্তাব বাতিল হয়ে যায়। তাই দ্বিতীয় গণভোটের এই প্রস্তাব নিয়ে ফের ভোট হতে পারে পার্লামেন্টে।
কাল, ২৯ মার্চ, ব্রেক্সিট হওয়ার কথা ছিল। ইইউ-এর কাছে সময়সীমা বাড়ানোর আর্জি জানিয়েছিলেন মে। ইইউ জানিয়েছে, ১২ এপ্রিলের মধ্যে ব্রিটিশ পার্লামেন্ট যদি কোনও চুক্তি নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছয়, তা হলে ২৯ মে পর্যন্ত ব্রেক্সিটের সময়সীমা বাড়ানো হবে। অন্যথায়, চুক্তিহীন ব্রেক্সিট ছাড়া ব্রিটেনের সামনে কোনও উপায় নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy