Advertisement
E-Paper

ইজ়রায়েলের সঙ্গে ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে রাজি হামাসও, ট্রাম্পের হুঁশিয়ারিতেই কাজ?

গত মঙ্গলবার হামাসকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ইজ়রায়েল যুদ্ধবিরতিতে সায় দিয়েছে। এর পরে হামাসকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ মেনে নেওয়ার ডাক দেন তিনি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ০৫ জুলাই ২০২৫ ১৩:৩৬
গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে এ বার সম্মতি দিল হামাসও।

গাজ়ায় যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে এ বার সম্মতি দিল হামাসও। ছবি: রয়টার্স

গাজ়ায় ৬০ দিনের যুদ্ধবিরতিতে এ বার রাজি হল প্যালেস্টাইনপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসও। আমেরিকা আগেই দাবি করেছিল, এই বিষয়ে রাজি হয়েছে ইজ়রায়েল। তার পরে হামাসকে হুঁশিয়ারিও দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। শুক্রবার হামাস ঘোষণা করেছে, তারা যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সম্মতি জানিয়েছে। প্রশ্ন উঠছে, তবে কি আমেরিকার চাপে রাজি হামাস?

সংবাদ সংস্থা সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, হামাস একটি বিবৃতি দিয়ে বলেছে, ‘‘মধ্যস্থতাকারীদের কাছে আমরা ইতিবাচক জবাব দিয়েছি। যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার জন্য যে আলোচনার প্রয়োজন, তার জন্য প্রস্তুত।’’ আমেরিকা দাবি করেছে, ইজ়রায়েল আগেই সম্মতি জানিয়েছে। মনে করা হচ্ছে, এ বার গাজ়ায় শান্তি ফিরতে পারে। হামাসের এই পদক্ষেপের প্রশংসা করেছেন প্যালেস্টাইনি-আমেরিকান বিশারা বাহ্‌বাহ্‌। তিনি সরাসরি হামাসের সঙ্গে এই নিয়ে কথা বলেছিলেন। মধ্যস্থতা করেছিলেন যুদ্ধবিরতি নিয়ে। এ বার হামাস বিবৃতি দেওয়ার পরে বিশারার আশা, শীঘ্রই ‘অভিশপ্ত যুদ্ধ’ থামবে। অন্য দিকে, ইজ়রায়েলের একটি সূত্র বলছে, তারা প্রথম থেকেই আশা করেছিল যে, হামাস যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে সাড়া দেবে। যদিও প্রস্তাবের কিছু বিষয় পরে বদল করা হয়েছে, তবু তাদের আশা ছিল যে, যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হবে হামাস। বিশারা মনে করছেন, এই কারণে দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতিতে কোনও প্রভাব পড়বে না।

সূত্রের খবর, যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে বলা হয়েছে, হামাস এবং ইজ়রায়েল, দুই পক্ষ ধীরে ধীরে স্থায়ী যু্দ্ধবিরতির দিকে এগোবে। সিএনএনের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গাজ়ায় এখনও ইজ়রায়েলের ৫০ জন পণবন্দি রয়েছে। প্রস্তাবে জানানো হয়েছে, যুদ্ধবিরতির সময়ে ১০ জন জীবিত পণবন্দি এবং ১৮ জন মৃতের দেহ ফিরিয়ে দিতে হবে ইজ়রায়েলকে। যুদ্ধবিরতির প্রথম দিনেই আট ইজ়রায়েলি পণবন্দিকে মুক্তি দেওয়ার কথা হামাসের। বদলে বেশ কয়েক জন প্যালেস্টাইনি বন্দিকেও ছাড়ার কথা নেতানিয়াহু প্রশাসনের। কত জনকে ছাড়া হবে, তা এখনও নির্দিষ্ট করা হয়নি। এর পরেই উত্তর গাজ়া থেকে সেনা প্রত্যাহার করার কথা ইজ়রায়েলের। তার পরেই স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিয়ে আলোচনায় বসার কথা দুই পক্ষের। দুই পক্ষের হাতে বন্দি বাকিদের কবে মুক্তি দেওয়া হবে, সেই তারিখ লেখা রয়েছে প্রস্তাবে। এ জন্য চারটি তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে।

হামাস, ইজ়রায়েল দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে পরে কিছু রদবদল করা হয়। ইজরায়েল প্রশাসনের একটি সূত্র বলছে, নতুন প্রস্তাবে আমেরিকার ভূমিকা অনেক জোরালো। তারা সেখানে জানিয়েছে, এই দুই পক্ষের মধ্যে শান্তি ফেরাতে ট্রাম্প প্রশাসন বদ্ধপরিকর। গাজ়ায় বিভিন্ন মাধ্যমে আরও বেশি করে ত্রাণ পাঠানোর কথাও জানিয়েছে আমেরিকা। প্রসঙ্গত, গত মঙ্গলবার হামাসকে রীতিমতো হুঁশিয়ারি দেন ট্রাম্প। তিনি দাবি করেন, ইজ়রায়েল যুদ্ধিবিরতিতে সায় দিয়েছে। এর পরে হামাসকে যুদ্ধবিরতি নিয়ে ‘চূড়ান্ত প্রস্তাব’ মেনে নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘‘হামাস যদি এই শর্তে রাজি না হয়, তা হলে ফল ভাল হবে না!’’ এ বিষয়ে মধ্যস্থতাকারী কাতার এবং মিশরকে হামাসের সঙ্গে কথা বলারও পরামর্শ দেন ট্রাম্প। সেই চাপেই কি রাজি হল হামাস? প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে।

২০২৩ সালের অক্টোবরে দক্ষিণ ইজ়রায়েলে হামলা চালিয়েছিল হামাস। তাতে প্রায় ১২০০ জনের প্রাণ গিয়েছিল। বন্দি করা হয়েছিল আড়াইশো জনকে। ওই ঘটনার পর ইজ়রায়েলও পাল্টা হামাসের উপর হামলা চালায়। দীর্ঘ সংঘর্ষ চলার পর চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে সংঘর্ষবিরতিতে রাজি হয় দু’পক্ষ। কিন্তু মার্চেই আবার সংঘর্ষবিরতি লঙ্ঘন করে হামলা চালাতে শুরু করে ইজ়রায়েল। তাতেই ভেস্তে যায় ইজ়রায়েল-হামাস আলোচনা।

Israel-Hamas Conflict Gaza war palestine
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy