E-Paper

মুক্তির পরে ইজ়রায়েলি বৃদ্ধা বললেন, ‘সলোম’

এখানেই শেষ নয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কেন মুক্তি পাওয়ার পরে হামাস সদস্যের সঙ্গে হাত মেলালেন।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৭:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

হামাসের হাতে বন্দি হওয়ার পরে তিনি ভেবেছিলেন জীবনে ঘোর বিপর্যয় নেমে এল। এ বার তাঁকে নরক-যন্ত্রণা ভোগ করতে হবে। কিন্তু আদতে হয়েছে উল্টোটাই। হামাসের সশস্ত্র সদস্যেরা তাঁদের সঙ্গে অত্যন্ত ভাল ব্যবহার করেছেন। তাঁরা গুরুত্বের সঙ্গে মিটিয়েছেন খুঁটিনাটি প্রয়োজনগুলিও। এ ভাবেই নিজের অভিজ্ঞতার কথা জানালেন ইয়োকভেড লিফশিৎজ়। ৮৫ বছরের এই বৃদ্ধাকে গত কাল সন্ধ্যায় মুক্তি দিয়েছে হামাস। একটি ভিডিয়োয় দেখা গিয়েছে, মুক্তি পাওয়ার পরে মুখোশ পরা এক হামাস সদস্যের দিকে এগিয়ে গেলেন লিফশিৎজ়। হাত মেলালেন তাঁর সঙ্গে। বলেন, ‘সলোম’(সেলাম)। ওই হামাস সদস্যও মাথা নিচু করে অভিনন্দন গ্রহণ করলেন।

দিন কয়েক আগে তাদের কাছে বন্দি থাকা দুই আমেরিকার নাগরিককে মুক্তি দিয়েছিল হামাস। কাতার এবং মিশরের মধ্যস্থতায় সম্পূর্ণ মানবিক কারণে গত কাল সন্ধ্যায় লিফশিৎজ় এবং ৭৯ বছরের নুরিত কুপারকে মুক্তি দেয় হামাস। রেড ক্রসের প্রতিনিধিদের হাতে দুই বৃদ্ধাকে তুলে দেওয়া হয়। বিমানে করে তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় ইজ়রায়েলের একটি হাসপাতালে। পরে তাঁদের নিয়ে যান পরিবারের সদস্যেরা। এর পরে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হল লিফশিৎজ। তাঁর কথায়, ‘‘৭ অক্টোবর যখন আমাদের ধরে নিয়ে গেল, মনে হচ্ছিল এ বার নরকবাস শুরু হবে। আমাকে একটা মোটরসাইকেল করে কিব্বুৎজ়ে নিয়ে গিয়েছিল ওরা। কোনও দিন দেশে ফিরতে পারব ভাবিনি।’’

এখানেই শেষ নয়। তাঁর কাছে জানতে চাওয়া হয়েছিল, তিনি কেন মুক্তি পাওয়ার পরে হামাস সদস্যের সঙ্গে হাত মেলালেন। ওই বৃদ্ধার উত্তর, ‘‘ওরা আমাদের সঙ্গে অত্যন্ত ভদ্র ব্যবহার করেছে। সাধ্য মতো মেটানোর চেষ্টা করেছে আমাদের চাহিদাগুলি।’’ হামাসের সদস্যেরা বন্দিদের সঙ্গে কেমন ব্যবহার করছেন, তারও বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন লিফশিৎজ়। তাঁর কথায়, ‘‘আমাদের খাওয়ার কোনও কষ্ট হয়নি। সাদা পনির ও শশা খেতে দিয়েছে। ওরা যা খেয়েছে আমাদেরও তাই দিয়েছে।’’ গত ৭ অক্টোবরের হামলার জন্য কার্যত ইজ়রায়েল সরকারকেই কাঠগড়ায় তুলেছেন লিফশিৎজ়। তাঁর মতে, বিপুল অর্থ ব্যয় করে যে সুরক্ষা ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে, তাতে কোনও কাজই হয়নি। তাঁর ক্ষোভ, ‘‘আমরা সরকারের বলির পাঁঠা হয়েছি। আমাদের কার্যত নরকে ফেলে রাখা হয়েছে।’’ সূত্রের খবর, ৮৫ বছরের ওই মহিলার বক্তব্য অসন্তুষ্ট এবং বিড়ম্বনায় ইজ়রায়েল প্রশাসন। বন্দিদের হামাস অত্যাচার করছে বলে যে তথ্য তারা সামনে আনার চেষ্টা করছিল লিফশিৎজ়ের বক্তব্যে কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে।

গাজ়াবাসীর কাছে আজ ইজ়রায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) আবেদন জানিয়েছে, হামাসের হাতে বন্দিদের সন্ধান দেওয়ার জন্য। এক্স হ্যান্ডলে তারা পোস্ট করেছে, ‘শান্তি এবং সন্তানদের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ চাইলে গাজ়াবাসী যেন হামাসের হাতে পণবন্দিদের সম্পর্কে তথ্য আইডিএফ-কে দেন। মানবিক কারণে এই সাহায্য করলে আর্থিক ভাবে পুরস্কৃতও করা হবে’।

কাতার আজ বলেছে, ‘এই যুদ্ধ এ বার বন্ধ হোক। ইজ়রায়েলকে নির্বিচারে হত্যার অনুমোদন দেওয়া যায় না।’’ তাদের মতে, এর ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিঘ্নিত হবে। চিন জানিয়েছে, প্রতিটি রাষ্ট্রের আত্মরক্ষার অধিকার রয়েছে। কিন্তু তা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন মেনেই করতে হবে। অসামরিক নাগরিকদের নিরাপত্তা যেন বিঘ্নিত না হয় তা সুনিশ্চিত করা জরুরি।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

hamas israel Prisoners

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy