Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪
Ghost Village

পোস্ট অফিস, গির্জা, কবরস্থান— সবই রয়েছে, এই ভুতুড়ে গ্রামে দেখা মিলবে না শুধু মানুষের

কানাডার ট্রিনিটি উপকূলের কাছে একটি ছোট এবং ছিমছাম গ্রাম। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গ্রামটি। মূলত মৎস্যজীবীদের বাস।

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১০:৩৪
Share: Save:
০১ ১৮
কানাডার ট্রিনিটি উপকূলের কাছে একটি ছোট এবং ছিমছাম গ্রাম। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গ্রামটি। মূলত মৎস্যজীবীদের বাস।

কানাডার ট্রিনিটি উপকূলের কাছে একটি ছোট এবং ছিমছাম গ্রাম। সমুদ্রের দিকে তাকিয়ে রয়েছে গ্রামটি। মূলত মৎস্যজীবীদের বাস।

০২ ১৮
পোস্ট অফিস, গির্জা, কবরস্থানের দেখা মিলবে গ্রামে। ঠিক যেন আদর্শ কোনও গ্রাম। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয়, হন্যে হয়ে খুঁজলেও কোনও মানুষের দেখা পাবেন না এই গ্রামে।

পোস্ট অফিস, গির্জা, কবরস্থানের দেখা মিলবে গ্রামে। ঠিক যেন আদর্শ কোনও গ্রাম। কিন্তু বিস্ময়ের বিষয়, হন্যে হয়ে খুঁজলেও কোনও মানুষের দেখা পাবেন না এই গ্রামে।

০৩ ১৮
শুধু এই একটি গ্রামই নয়, কানাডার অধীনস্থ নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডরে এমন জনমানবহীন ৩০০টি ভূতুড়ে গ্রাম রয়েছে।

শুধু এই একটি গ্রামই নয়, কানাডার অধীনস্থ নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডরে এমন জনমানবহীন ৩০০টি ভূতুড়ে গ্রাম রয়েছে।

০৪ ১৮
১৯৫৪ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে একটি সরকারি প্রকল্প কেন্দ্র করে ৩০০ গ্রামের মোট ৩০ হাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর থেকে এই ভাবেই ধুধু করছে গ্রামগুলি।

১৯৫৪ থেকে ১৯৭৫ সালের মধ্যে একটি সরকারি প্রকল্প কেন্দ্র করে ৩০০ গ্রামের মোট ৩০ হাজার বাসিন্দাদের অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। তার পর থেকে এই ভাবেই ধুধু করছে গ্রামগুলি।

০৫ ১৮
আজ এই গ্রামগুলির কথা প্রায় ভুলতে বসেছেন বিশ্ববাসী। শুধু এই গ্রামের বাসিন্দাদের মনে স্মৃতি হিসাবে রয়েছে গিয়েছে নিজেদের গ্রাম।

আজ এই গ্রামগুলির কথা প্রায় ভুলতে বসেছেন বিশ্ববাসী। শুধু এই গ্রামের বাসিন্দাদের মনে স্মৃতি হিসাবে রয়েছে গিয়েছে নিজেদের গ্রাম।

০৬ ১৮
নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডর অনেকটা বিস্তৃত, প্রত্যন্ত এবং আশপাশের অন্য অঞ্চলের থেকে একটু স্বতন্ত্র এলাকা।

নিউফাউন্ডল্যান্ড এবং ল্যাব্রাডর অনেকটা বিস্তৃত, প্রত্যন্ত এবং আশপাশের অন্য অঞ্চলের থেকে একটু স্বতন্ত্র এলাকা।

০৭ ১৮
এখানে অদ্ভূত নামের সব গ্রাম রয়েছে। কোনও গ্রামের নাম ‘কাম বাই চান্স’, কোনওটার নাম ‘হার্টস ডিসায়ার’, ‘হ্যাপি অ্যাডভেঞ্চার’ কিংবা ‘চিমনি টিকল’।

এখানে অদ্ভূত নামের সব গ্রাম রয়েছে। কোনও গ্রামের নাম ‘কাম বাই চান্স’, কোনওটার নাম ‘হার্টস ডিসায়ার’, ‘হ্যাপি অ্যাডভেঞ্চার’ কিংবা ‘চিমনি টিকল’।

০৮ ১৮
এই গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মূল জীবিকা ছিল মাছ শিকার করা। পাশাপাশি থাকা গ্রামগুলির মধ্যেও যোগাযোগ প্রায় ছিল না বললেই চলে। খুব সরল জীবনযাপন করতেন বাসিন্দারা।

এই গ্রামগুলোর বাসিন্দাদের মূল জীবিকা ছিল মাছ শিকার করা। পাশাপাশি থাকা গ্রামগুলির মধ্যেও যোগাযোগ প্রায় ছিল না বললেই চলে। খুব সরল জীবনযাপন করতেন বাসিন্দারা।

০৯ ১৮
কিন্তু ১৯৪৯ সালে ওই মানুষগুলোর জীবন বদলে যায়। তখন গ্রেট ব্রিটেনের হাত ছেড়ে কানাডার অধীনে চলে আসে নিউফাউন্ডল্যান্ডএবং ল্যাব্রাডরের গ্রামগুলো।

কিন্তু ১৯৪৯ সালে ওই মানুষগুলোর জীবন বদলে যায়। তখন গ্রেট ব্রিটেনের হাত ছেড়ে কানাডার অধীনে চলে আসে নিউফাউন্ডল্যান্ডএবং ল্যাব্রাডরের গ্রামগুলো।

১০ ১৮
এর পর কানাডার প্রশাসনের নজর পড়ে এই সমস্ত প্রত্যন্ত এবং পৃথক গ্রামগুলির উপর। জনকল্যাণ এবং মৎস্য দফতরের উপর গ্রামগুলির উন্নয়নের দায়িত্ব পড়ে।

এর পর কানাডার প্রশাসনের নজর পড়ে এই সমস্ত প্রত্যন্ত এবং পৃথক গ্রামগুলির উপর। জনকল্যাণ এবং মৎস্য দফতরের উপর গ্রামগুলির উন্নয়নের দায়িত্ব পড়ে।

১১ ১৮
সমীক্ষা করার জন্য আমলারা গ্রামগুলিতে গিয়ে রীতিমতো অবাক হয়ে যান। সেখানে এমন গ্রামও রয়েছে, যেখানে কেউ পড়াশোনা জানেন না। চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। ‘কাম বাই চান্স’ গ্রামে যেমন চিকিৎসার ব্যবস্থা হিসাবে একটি ছোট কটেজ রয়েছে,কিন্তু কোনও চিকিৎসক নেই।

সমীক্ষা করার জন্য আমলারা গ্রামগুলিতে গিয়ে রীতিমতো অবাক হয়ে যান। সেখানে এমন গ্রামও রয়েছে, যেখানে কেউ পড়াশোনা জানেন না। চিকিৎসার কোনও ব্যবস্থা পর্যন্ত নেই। ‘কাম বাই চান্স’ গ্রামে যেমন চিকিৎসার ব্যবস্থা হিসাবে একটি ছোট কটেজ রয়েছে,কিন্তু কোনও চিকিৎসক নেই।

১২ ১৮
আরও প্রত্যন্ত কয়েকটি গ্রামে সপ্তাহে একবার সাধারণ অসুখের ওষুধ নিয়ে পৌঁছয় একটি নৌকা। কখনও কখনও চিকিৎসকও চলে আসেন নৌকা চেপে। কয়েক ঘণ্টা গ্রামে ঘুরে চিকিৎসা করে ফের ফিরে যান।

আরও প্রত্যন্ত কয়েকটি গ্রামে সপ্তাহে একবার সাধারণ অসুখের ওষুধ নিয়ে পৌঁছয় একটি নৌকা। কখনও কখনও চিকিৎসকও চলে আসেন নৌকা চেপে। কয়েক ঘণ্টা গ্রামে ঘুরে চিকিৎসা করে ফের ফিরে যান।

১৩ ১৮
মাত্র ১৪টি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠা একটি প্রত্যন্ত গ্রামেরও সন্ধান পান তাঁরা। যে গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা পর্যন্ত নেই। চাষাবাদ সম্বন্ধেও সে ভাবে জানেন না সেখানের বাসিন্দারা। মাছ শিকারই তাঁদের একমাত্র ভরসা।

মাত্র ১৪টি পরিবার নিয়ে গড়ে ওঠা একটি প্রত্যন্ত গ্রামেরও সন্ধান পান তাঁরা। যে গ্রামে যাওয়ার কোনও রাস্তা পর্যন্ত নেই। চাষাবাদ সম্বন্ধেও সে ভাবে জানেন না সেখানের বাসিন্দারা। মাছ শিকারই তাঁদের একমাত্র ভরসা।

১৪ ১৮
গ্রামবাসীদের অত্যন্ত সরল জীবনযাত্রায় ফের বদল আসে ১৯৫৭-এ। ওই সব গ্রামের জন্য চিকিৎসক-সহ আরও অনেক সরকারি অফিসার পাঠায় সরকার। কয়েকদিন থাকার পর তাঁরা কানাডা সরকারকে জানান, দ্রুত ওই সমস্তগ্রামে সভ্যতার বিকাশের প্রয়োজন।

গ্রামবাসীদের অত্যন্ত সরল জীবনযাত্রায় ফের বদল আসে ১৯৫৭-এ। ওই সব গ্রামের জন্য চিকিৎসক-সহ আরও অনেক সরকারি অফিসার পাঠায় সরকার। কয়েকদিন থাকার পর তাঁরা কানাডা সরকারকে জানান, দ্রুত ওই সমস্তগ্রামে সভ্যতার বিকাশের প্রয়োজন।

১৫ ১৮
যোগাযোগের জন্য রাস্তা বানাতে হবে, পড়াশোনার জন্য স্কুল বানাতে হবে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করাটা ছিল প্রথম প্রয়োজন। পরিস্থিতি এমন ছিল যে তার জন্য গ্রামগুলিকে খালি করতে হয়।

যোগাযোগের জন্য রাস্তা বানাতে হবে, পড়াশোনার জন্য স্কুল বানাতে হবে এবং চিকিৎসার জন্য হাসপাতালের ব্যবস্থা করাটা ছিল প্রথম প্রয়োজন। পরিস্থিতি এমন ছিল যে তার জন্য গ্রামগুলিকে খালি করতে হয়।

১৬ ১৮
সরকারি এই প্রকল্পে বেশিরভাগ বাসিন্দাই অনিচ্ছুক ছিলেন। তাঁদের বুঝিয়ে এবং ক্ষতিপূরণ-সহ বেশ কিছু অর্থ দিয়ে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের লক্ষ্য ছিল এই এলাকার বিপুল মাছের জোগানকে ব্যবসায়িক কাছে লাগানো।

সরকারি এই প্রকল্পে বেশিরভাগ বাসিন্দাই অনিচ্ছুক ছিলেন। তাঁদের বুঝিয়ে এবং ক্ষতিপূরণ-সহ বেশ কিছু অর্থ দিয়ে অন্য জায়গায় সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সরকারের লক্ষ্য ছিল এই এলাকার বিপুল মাছের জোগানকে ব্যবসায়িক কাছে লাগানো।

১৭ ১৮
কিন্তু ওই সমস্ত গ্রামে সভ্যতার বিকাশ ঘটাতে গিয়ে দেখা যায় বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। পাথুরে জমি কেটে রাস্তা বানানো যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। ফলে সরকারের বিকাশ প্রকল্প মাঝপথেই থমকে যায়।

কিন্তু ওই সমস্ত গ্রামে সভ্যতার বিকাশ ঘটাতে গিয়ে দেখা যায় বড় অঙ্কের অর্থের প্রয়োজন। পাথুরে জমি কেটে রাস্তা বানানো যথেষ্ট খরচসাপেক্ষ। ফলে সরকারের বিকাশ প্রকল্প মাঝপথেই থমকে যায়।

১৮ ১৮
১৯৭৫ সাল থেকে ওই গ্রামগুলো সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। এই গ্রামে আজও সরল জীবনযাত্রার ছাপ রয়েছে। আজও সেই পোস্ট অফিস, গির্জা, ছোট ছোট ঘর-সবই রয়েছে। সে গ্রামে গেলে এ সবই দেখতে পাওয়া যাবে। শুধু দেখা মিলবে না কোনও মানুষের।

১৯৭৫ সাল থেকে ওই গ্রামগুলো সম্পূর্ণ পরিত্যক্ত। এই গ্রামে আজও সরল জীবনযাত্রার ছাপ রয়েছে। আজও সেই পোস্ট অফিস, গির্জা, ছোট ছোট ঘর-সবই রয়েছে। সে গ্রামে গেলে এ সবই দেখতে পাওয়া যাবে। শুধু দেখা মিলবে না কোনও মানুষের।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
Follow us on: Save:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE