Advertisement
E-Paper

গরমে পুড়ছে মেরুপ্রদেশ, গলছে হিমবাহ

গোটা জুলাইয়ে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা লন্ডন-প্যারিসের। একে দাবানল, তার মধ্যে ব্রিটেন, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানিকে পুড়িয়ে তাপপ্রবাহ এগিয়ে চলেছে মেরুপ্রদেশের দিকে।

সংবাদ সংস্থা

শেষ আপডেট: ২৮ জুলাই ২০১৯ ০০:৫৬
গরম থেকে রেহাই পেতে। ছবি: রয়টার্স।

গরম থেকে রেহাই পেতে। ছবি: রয়টার্স।

গরমে পুড়ছে ইউরোপ। এ সপ্তাহে পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে চুরমার। দাবানলের আঁচে পুড়ে ছাই উত্তর সাইবেরিয়া, উত্তর স্ক্যান্ডিনেভিয়া, আলাস্কা, গ্রিনল্যান্ড, মেরুপ্রদেশের একটা বিশাল অংশ। এরই মধ্যে দানা বাঁধছে নয়া আতঙ্ক। ভয়াল তাপপ্রবাহ ক্রমেই এগোচ্ছে গ্রিনল্যান্ডের দিকে। সে ক্ষেত্রে তীব্র গরমে বিপজ্জনক ভাবে গলতে শুরু করবে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম হিমবাহ। জলে ডুববে স্থলভাগ। আজ এই সতর্কবার্তা দিয়েছে রাষ্ট্রপুঞ্জ।

গোটা জুলাইয়ে গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা লন্ডন-প্যারিসের। একে দাবানল, তার মধ্যে ব্রিটেন, বেলজিয়াম, নেদারল্যান্ডস, জার্মানিকে পুড়িয়ে তাপপ্রবাহ এগিয়ে চলেছে মেরুপ্রদেশের দিকে। গরমে ‘বেকড’ হওয়ার দশা। আবহবিদেরা বলছেন, শীঘ্রই এ গরমের আঁচ টের পাবেন নরওয়ে, সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের বাসিন্দারা। ব্যাপারটা খানিকটা এ রকম— গোলার্ধের ওই অংশে বায়ুমণ্ডলের মধ্যভাগে একটি শক্তিশালী উচ্চচাপ এলাকা তৈরি হয়েছে। যা শীতল স্রোত প্রবেশ করতে দেবে না ওই অংশে। ঝড়ঝঞ্ঝাও তৈরি হবে না। তাই একে ‘অ্যান্টিসাইক্লোন’ও বলা হয়। বিজ্ঞানীদের কথায়, ‘‘যেন আকাশে ট্রাফিক সিগন্যাল লাল।’’

স্ক্যানডিনেভিয়ান দেশগুলিতে (নরওয়ে, সুইডেন, ডেনমার্ক, ফিনল্যান্ড ও আইসল্যান্ড) তাপমাত্রা থাকবে ৯০ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার উপরে। সেই সঙ্গে ভয়ানক গরম হাওয়ার স্রোত। গত বছর এমনই এক তাপপ্রবাহ থেকে দাবানল লেগেছিল ওই সব অঞ্চলে। এ বছর এখনই দাবানলে পুড়ছে মেরুপ্রদেশের একটা বড় অংশ। নরওয়ের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে বার্গেন শহর শুক্রবারই রেকর্ড গড়েছে। তাপমাত্রা ছিল ৯১ ডিগ্রি ফারেনহাইট (৩২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস)। এ অবস্থায়, বিজ্ঞানীদের আশঙ্কা মেরু সমুদ্রে ভাসমান হিমশৈলগুলি ব্যাপক ভাবে গলতে শুরু করবে। স্বাভাবিক ভাবেই এতে সমুদ্রের জলস্তর বাড়বে। বিষয়টি সহজ করে বোঝাতে বিজ্ঞানীরা বলছেন, যদি গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহটি সম্পূর্ণ গলে যায়, তাতে গোটা পৃথিবীতে সমুদ্রের জলস্তর গড়ে ২৩ ফুট বাড়বে!

ড্যানিশ জলবায়ু কেন্দ্রের বিজ্ঞানী রুথ মোটরাম জানান, গ্রিনল্যান্ডের উপরে উচ্চচাপ তৈরি হয়েছে। ২০১২ সালে এ রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছিল। সে বারে হিমবাহের প্রায় পুরো বরফের চাদরটাই গলতে শুরু করেছিল। সে বছর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছুঁয়েছিল ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এ বারে তো ইতিমধ্যেই ৩২ ডিগ্রি ছাড়িয়েছে পারদ। মোটরাম বলেন, ‘‘এর ফলে আশঙ্কা হচ্ছে হিমবাহের একটা বড় অংশ গলে যাবে। মেরুসাগরে ভাসমান হিমশৈল ও গ্রিনল্যান্ডের হিমবাহ, দুই-ই গলবে। ২০১২-র থেকেও খারাপ পরিস্থিতি হবে। তবে যত ক্ষণ না হচ্ছে, নিশ্চিত কিছু বলা সম্ভব নয়। সবটাই আশঙ্কা।’’

একই ভয় পাচ্ছেন ক্যালিফর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের জলবায়ু বিজ্ঞানী জ্যাক লেব। বলেন, ‘‘কৃত্রিম উপগ্রহ মারফত পাঠানো তথ্য যা বলছে, তা নজিরবিহীন। ইতিমধ্যেই আলাস্কার উপকূল অংশে যথেষ্ট প্রভাব পড়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রও।’’

Heatwave Europe Climate Change
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy