Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রাণ বাঁচিয়ে নায়ক আজ গৃহহীনেরাই

রাস্তাই ওঁদের বাড়িঘর। বিস্ফোরণটা ঘটেছিল সেই রাস্তার খুব কাছে। আর তার পরে চোখের সামনে ছোট ছোট রক্তমাখা মুখগুলো দেখে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেননি স্টিফেন জোন্স, ক্রিস পার্কাররা। পুলিশের সঙ্গে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তাঁরাও।

সংবাদ সংস্থা
লন্ডন শেষ আপডেট: ২৬ মে ২০১৭ ০২:০৩
Share: Save:

রাস্তাই ওঁদের বাড়িঘর। বিস্ফোরণটা ঘটেছিল সেই রাস্তার খুব কাছে। আর তার পরে চোখের সামনে ছোট ছোট রক্তমাখা মুখগুলো দেখে হাত গুটিয়ে থাকতে পারেননি স্টিফেন জোন্স, ক্রিস পার্কাররা। পুলিশের সঙ্গে উদ্ধারকাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন তাঁরাও।

সোমবার রাতে ম্যাঞ্চেস্টার এরিনায় যাওয়ার রাস্তাতেই ঘুমোচ্ছিলেন স্টিফেন। দিনভর রাজমিস্ত্রির কাজ করে রাতটা পথেই কাটে তাঁর। এরিনায় চলছিল কনসার্ট। হঠাৎই বিস্ফোরণের শব্দে ঘুম ভেঙে যায় বছর পঁয়ত্রিশের যুবকের। চোখ খুলে দেখেন, রক্ত মেখে ছোট ছোট ছেলেমেয়ের দল বেরিয়ে আসছে হল থেকে। কোথাও প্রাণহীন সন্তানকে জড়িয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন মা। সব দেখে চুপ থাকতে পারেননি জোন্স। পরে তিনি বলেন, ‘‘আমার ঘরবাড়ি না থাকলেও হৃদয় তো আছে। ওই অবস্থা হাত গুটিয়ে বসে থাকলে নিজেকে ক্ষমা করতে পারতাম না।’’ বহু আহতকে জোন্স শুধু উদ্ধারই করেননি, নিজের হাতে অনেকের শরীর থেকে টেনে বার করেছেন কাচের টুকরো।

সোশ্যাল মিডিয়ায় জোন্সের কথা জানতে পেরে তাঁকে সাহায্যে এগিয়ে এসেছেন কোটিপতি ডেভিড সুলিভ্যান। তাঁর ছেলের টুইট, ‘এই রকম এক জন নিঃস্বার্থ মানুষকে পুরস্কৃত করা উচিত। আমরা ছ’মাসের জন্য ওঁর থাকা-খাওয়ার দায়িত্ব নিতে চাই।’

ম্যাঞ্চেস্টারের চোখে এখন ‘হিরো’ ভবঘুরে ক্রিস পার্কারও। সোমবার রাতে স্টেডিয়ামের কাছে ভিক্ষা করছিলেন তিনি। পার্কারের কথায়, ‘‘বিস্ফোরণের শব্দটা শুনে ছুটে পালানোর বদলে মনে হল, এগিয়ে গিয়ে আহতদের সাহায্য করি।’’ আর বসে থাকেননি ক্রিস। কনসার্ট দেখতে আসা বহু ছেলেমেয়েকে উদ্ধার করেন তিনি। বিস্ফোরণে দু’টো পা উড়ে গিয়েছিল এক বাচ্চা মেয়ের। নিজের জামা দিয়ে তার পায়ের ক্ষত মুড়ে চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান পার্কার। মাথায় ও পায়ে গুরুতর চোট লেগে বছর ষাটের এক প্রৌঢ়া আবার মারা যান তাঁর কোলেই।

ফেসবুকে ছেলের ছবি ও খবর দেখে পার্কারকে খুঁজছেন তাঁর মা জেসিকা। ছেলের সঙ্গে গত কয়েক বছর যোগাযোগ ছিল না। কিন্তু এখন তাকে বাড়ি ফেরাতে অশক্ত শরীরেই ভার্জিনিয়া থেকে ম্যাঞ্চেস্টারে যাওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছেন প্রৌঢ়া। বলেছেন, ‘‘ও হয়তো খারাপ সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু ওর মনটা নষ্ট হয়ে যায়নি। ওর জন্য গর্বিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Manchester attack Stephen Jones
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE