Advertisement
E-Paper

মার্কিন গোয়েন্দাদের হাতে ছিল তিনটি সূত্র, কিন্তু ট্রাম্প-ঘনিষ্ঠের ‘খুনি’কে ধরিয়ে দিল রুমমেটের ফোনে একটি মেসেজ! কী ভাবে

মোট তিনটি সূত্র ধরে তদন্ত এগোচ্ছিলেন মার্কিন গোয়েন্দারা। শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিল একটি মেসেজ! শুক্রবার কির্ককে খুনের অভিযোগে পুলিশ গ্রেফতার করেছে ২২ বছরের টাইলার রবিনসনকে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:০৩
(বাঁ দিকে) সন্দেহভাজনের যে ছবি প্রকাশ করেছিল পুলিশ। আমেরিকার রক্ষণশীল নেতা চার্লি কির্ক (ডান দিকে)।

(বাঁ দিকে) সন্দেহভাজনের যে ছবি প্রকাশ করেছিল পুলিশ। আমেরিকার রক্ষণশীল নেতা চার্লি কির্ক (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

রক্ষণশীল নেতা চার্লি কির্কের হত্যাকাণ্ডের পর তিন দিন তন্ন তন্ন করে খুনিকে খুঁজেছেন আমেরিকার গোয়েন্দারা। নানা জায়গা থেকে নানা ভাবে সূত্র সংগ্রহ করেছেন। মোট তিনটি সূত্র ধরে তদন্ত এগোচ্ছিলেন তাঁরা। কিন্তু শেষ পর্যন্ত অভিযুক্তকে ধরিয়ে দিল একটি মেসেজ! শুক্রবার কির্ককে খুনের অভিযোগে আমেরিকার পুলিশ গ্রেফতার করেছে ২২ বছর বয়সি টাইলার রবিনসনকে। দাবি, তিনিই তাঁর এক রুমমেটকে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন। সেই সূত্র গোয়েন্দাদের রবিনসনের কাছে পৌঁছে দিয়েছে।

কট্টর রিপাবলিকান সমর্থক কির্ক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিশেষ ঘনিষ্ঠ ছিলেন। কির্কের মৃত্যুতে শোকাহত ট্রাম্প আমেরিকা জুড়ে রবিবার পর্যন্ত জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার নির্দেশ দিয়েছেন। গত বুধবার কির্ক ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটিতে একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। দূর থেকে স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে তাঁকে গুলি করা হয়। গুলি গিয়ে লাগে একেবারে কির্কের গলায়। সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। তিন দিন পরে শুক্রবার এই ঘটনার প্রধান সন্দেহভাজন রবিনসনকে গ্রেফতার করে মার্কিন পুলিশ।

জানা গিয়েছে, কির্কের হত্যাকাণ্ডে প্রাথমিক ভাবে তিনটি মাত্র সূত্র হাতে এসেছিল গোয়েন্দাদের। একটি হাতের ছাপ, একটি জুতোর ছাপ এবং জঙ্গলে পড়ে থাকা একটি রাইফেল। কির্ককে খুনে ওই রাইফেল ব্যবহার করা হয়েছিল। কিন্তু হত্যাকারী অবধি কিছুতেই পৌঁছোতে পারছিলেন না গোয়েন্দারা। শুরুতে এফবিআই দু’জনকে আটক করেছিল। জিজ্ঞাসাবাদের পর প্রমাণ না-পেয়ে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। আততায়ী ইউটা ভ্যালি ইউনিভার্সিটি থেকে বেরিয়ে যাচ্ছেন, এমন একটি ফুটেজ প্রকাশ করেছিল পুলিশ। ঘোষণা করা হয়েছিল, ওই সন্দেহভাজনের সন্ধান কেউ দিতে পারলে এক লক্ষ ডলার পুরস্কার দেওয়া হবে। এতেও লাভ হয়নি।

বৃহস্পতিবার সন্দেহভাজন যুবকের ছবি এবং আরও কিছু ভিডিয়ো প্রকাশ করা হয়। জনগণের কাছে সাহায্যের জন্য অনুরোধ করা হয়। প্রথমে পুলিশ জানিয়েছিল, অভিযুক্ত কলেজছাত্র হতে পারেন। পরে অবশ্য রবিনসনকে গ্রেফতার করার পর জানা যায়, তিনি কলেজে পড়তেন না। পরিবারের সঙ্গেই থাকতেন।

রবিনসনের গ্রেফতারির পর ইউটার গভর্নর স্পেন্সার কক্স জানিয়েছেন, ‘খুব ঘনিষ্ঠ এক জন’ রবিনসনকে ধরিয়ে দিয়েছেন। কী ভাবে? কক্স জানান, রবিনসনের পরিবারের এক সদস্য খুনের কথা জানতে পেরেছিলেন এবং তাঁর এক বন্ধুর কাছে সে কথা জানিয়েছিলেন। সেই বন্ধুই কর্তৃপক্ষকে খবর দেন। গভর্নর বলেন, ‘‘আমি রবিনসনের পরিবারের ওই সদস্যকে ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ, তিনি একদম সঠিক কাজটি করেছেন।’’

গত ১০ সেপ্টেম্বর রাতের খাওয়ার টেবিলে বসে রবিনসন ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করেছিলেন, দাবি করেন তাঁর পরিবারের সদস্য। কির্কের ইউটা সফরের প্রসঙ্গ তুলে তিনি বলেছিলেন, ‘‘কির্কের মনটা ঘৃণায় ভরা এবং তিনি ঘৃণা ছড়াচ্ছেন।’’ এর পর রবিনসন তাঁর এক রুমমেটকে যে মেসেজ পাঠিয়েছিলেন, তা প্রকাশ্যে আসে। ‘ডিসকর্ড’ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে রুমমেটের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তিনি। মেসেজে ব্যাখ্যা করেছিলেন, কী ভাবে তোয়ালে মুড়ে স্নাইপার রাইফেলটি তিনি ঝোপের মধ্যে ফেলে এসেছেন। এর পর গোয়েন্দাদের আর দ্বিধা ছিল না। তাঁরা রবিনসনকে গ্রেফতার করেন। ফক্স নিউজ়কে দেওয়া একটি সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প দাবি করেছেন, রবিনসনের বাবা কর্তৃপক্ষকে ছেলের কীর্তির কথা জানিয়েছেন। আততায়ীর ফাঁসির সাজা চেয়ে ট্রাম্প বলেছেন, ‘‘আমি আশা করব, ও দোষী সাব্যস্ত হবে এবং ওর ফাঁসি হবে। ও যা করেছে, চার্লি কির্ক অসাধারণ এক জন মানুষ ছিলেন। এটা ওঁর প্রাপ্য ছিল না।’’

কির্কের ‘খুনি’ রবিনসন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন না, জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স। এমনকি, তিনি ভোটও দিতেন না। পূর্বে কোনও অপরাধের ইতিহাস তাঁর নেই। আপাতত তাঁকে স্প্যানিশ ফর্কে ইউটা কাউন্টি জেলে রাখা হয়েছে, ঘটনাস্থল থেকে যা ১৯ কিলোমিটার দূরে।

Charlie Kirk Murder Case FBI US Politics Donald Trump
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy