ভারতীয় প্রৌঢ়ের মাথা কেটে নিয়ে ছিন্ন মুণ্ডে লাথি মারলেন আমেরিকান এক যুবক। ছিন্ন মুণ্ড নিয়ে জঞ্জালের স্তূপের দিকে এগিয়ে যাচ্ছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নিহত প্রৌঢ় আমেরিকার ডালাসে রাস্তার ধারে একটি ছোট হোটেল চালাতেন। অভিযুক্ত তাঁর হোটেলে কাজ করতেন। কোনও কারণে তাঁদের মধ্যে বচসা হয়েছিল বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি। তার পরেই এই হত্যাকাণ্ড। ইতিমধ্যে আমেরিকায় অবস্থিত ভারতীয় দূতাবাস থেকে নিহতের পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।
নিহত প্রৌঢ়ের নাম চন্দ্র নাগামাল্লাইয়াহ্ (৫০)। তিনি কর্নাটকের বাসিন্দা। দীর্ঘ দিন ধরে ডালাসেই থাকতেন। সেখানে তাঁর স্ত্রী এবং ১৮ বছর বয়সি পুত্র আছেন। তাঁদের চোখের সামনেই প্রৌঢ়ের মাথা কেটে নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। হত্যাকারী ৩৭ বছরের ইয়োরডানিস কোবোস-মার্টিনেজ়। ধারালো অস্ত্র নিয়ে রীতিমতো তাড়া করে তিনি প্রৌঢ়কে খুন করেন। ছিন্ন মুণ্ড নিয়ে তাঁর হেঁটে যাওয়ার একটি ভিডিয়ো সমাজমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছিল। যদিও তার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার ডট কম। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করে তাঁর বিরুদ্ধে খুনের মামলা রুজু করেছে আমেরিকার পুলিশ।
আরও পড়ুন:
ঠিক কী ঘটেছিল?
প্রত্যক্ষদর্শীদের দাবি, প্রৌঢ়ের হোটেলের ওয়াশিং মেশিনটি সম্প্রতি ভেঙে গিয়েছিল। গত বুধবার তা নিয়েই কর্মচারী যুবকের সঙ্গে তাঁর বচসা হয়। প্রৌঢ় তাঁকে ওই ভাঙা ওয়াশিং মেশিন ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিলেন। প্রথমে মালিকের নির্দেশ বুঝতে পারেননি অভিযুক্ত। মালিকের সঙ্গে সরাসরি কথা না-বলে তিনি অন্য এক কর্মচারীকে তাঁর বক্তব্য অনুবাদ করে দিতে বলেন। এর পর ধারালো অস্ত্র হাতে তুলে এগিয়ে যান মালিকের দিকে। তাঁকে একাধিক বার কোপ মারেন। বাঁচার চেষ্টা করেছিলেন প্রৌঢ়। জখম অবস্থায় কোনও রকমে ছুটে ঘটনাস্থল থেকে পালানোর চেষ্টা করেছিলেন। কিন্তু লাভ হয়নি। যুবক তাঁকে ধরে ফেলেন। এই সময়ে বেরিয়ে এসেছিলেন প্রৌঢ়ের স্ত্রী-পুত্রও। তাঁরা যুবককে আটকানোর চেষ্টা করেন। তিনি তাঁদের ধাক্কা মেরে সরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর ধারালো ওই অস্ত্র দিয়ে প্রৌঢ়ের মাথা কেটে ফেলেন অভিযুক্ত। ছিন্ন মুণ্ডে লাথি মারেন। তা তুলে নিয়ে জঞ্জালের স্তূপের দিকে এগিয়ে যান। এই সময় পুলিশ ঘটনাস্থলে আসে এবং যুবককে গ্রেফতার করে। তাঁর পোশাক গ্রেফতারির সময় ছিল রক্তমাখা।
ভারতীয় দূতাবাস সমাজমাধ্যমে এই ঘটনাকে ‘দুর্ভাগ্যজনক’ বলে মন্তব্য করেছে। লেখা হয়েছে, ‘‘চন্দ্র নাগামাল্লাইয়াহ্-র দুর্ভাগ্যজনক মৃত্যুতে আমরা সমবেদনা জানাচ্ছি। চন্দ্র ভারতীয়। ডালাসে কর্মস্থলে তাঁকে নিষ্ঠুর ভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা পরিবারটির সঙ্গে যোগাযোগ করেছি। সম্ভাব্য সকল সহযোগিতা করা হচ্ছে। অভিযুক্ত এখন ডালাস পুলিশের হেফাজতে। বিষয়টির দিকে আমরা নজর রাখছি।’’