Advertisement
E-Paper

হরপ্পার লিপিতে কী আছে? কোন ভাষার সঙ্গে বেশি যোগ? বিশেষজ্ঞদের নিয়ে বিশেষ সম্মেলন ডাকল সংস্কৃতি মন্ত্রক

১৯২১-২২ সালে হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদারো সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়েছিল। ১০৩ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া লিপির পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৮:৫৪
Centre is holding meeting to decode Harappan language

হরপ্পা লিপির পাঠোদ্ধার কি আদৌ সম্ভব? ছবি: সংগৃহীত।

হরপ্পা সভ্যতার লিপিতে কী আছে? পাঠোদ্ধার কি সম্ভব? কোন ভাষার সঙ্গে এই লিপির যোগ সবচেয়ে বেশি? এখনও এমন বহু প্রশ্নের উত্তর অধরা থেকে গিয়েছে। সে সব উত্তর পেতে এ বার বিশেষ সম্মেলনের আয়োজন করল কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রক। ১১ থেকে ১৩ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এই সম্মেলন হবে। স্বনামধন্য প্রত্নতত্ত্ববিদ এবং গবেষকদের সম্মেলেন আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। দীর্ঘ দিন ধরে যাঁরা হরপ্পার লিপি নিয়ে কাজ করছেন, সম্মেলনে তাঁরা নিজেদের গবেষণালব্ধ মতামত জানাবেন। সকলের মত বিশ্লেষণ করলে প্রাচীন সেই লিপি নিয়ে অনেক প্রশ্নের উত্তর মিলতে পারে, মনে করছেন বিশেষজ্ঞেরা।

১৯২১-২২ সালে হরপ্পা এবং মহেঞ্জোদারো সভ্যতা আবিষ্কৃত হয়েছিল। ১০৩ বছর কেটে গিয়েছে। কিন্তু এখনও সেখান থেকে উদ্ধার হওয়া লিপির পাঠোদ্ধার সম্ভব হয়নি। কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের এই সম্মেলনে প্রত্নতত্ত্ববিদদের গোষ্ঠী ছাড়াও আমন্ত্রিত এক ক্যানসার বিশেষজ্ঞ, মহাকাশবিজ্ঞানী এবং অবসরপ্রাপ্ত সরকারি আধিকারিক। সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। সূচি অনুযায়ী, ১২ সেপ্টেম্বর মোদী এবং ১৩ সেপ্টেম্বর শাহ অনুষ্ঠানে থাকবেন। এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে ইন্দিরা গান্ধী ন্যাশনাল সেন্টার ফর দ্য আর্টস্‌ (আইজিএনসিএ)। এটি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি মন্ত্রকের অধীন একটি স্বতন্ত্র প্রতিষ্ঠান।

অনেকে এই সম্মেলনে নিজেদের গবেষণাপত্র প্রকাশ করবেন। তবে হরপ্পার লিপি নিয়ে গবেষকেরা এখনও একমত হতে পারেননি। কেউ বলেন, এই লিপি সংস্কৃতে লেখা, কেউ আবার এর সঙ্গে দক্ষিণী কোনও ভাষার সংযোগের দাবি করেন। অনেকে আবার মনে করেন, হরপ্পার লিপির সঙ্গে সাঁওতাল বা গোন্ডির মতো কোনও আদিবাসী ভাষার মিল রয়েছে।

সফ্‌টওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বহতা মুখোপাধ্যায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে হরপ্পা লিপি নিয়ে কাজ করেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘কোনও গবেষকই হরপ্পা লিপির সম্পূর্ণ পাঠোদ্ধার করা গিয়েছে বলে দাবি করতে পারেন না। আমার মনে হয়, আমি কাজ কিছুটা এগিয়েছি। এটা কোনও বানানভিত্তিক লিপি নয়। প্রাচীন বাণিজ্য এবং শুল্কনীতি নিয়ে এতে লেখা রয়েছে।’’ কেন্দ্রের সম্মেলনে যোগ দেবেন প্রত্নতাত্ত্বিক করুণাশঙ্কর শুল্ক। একটি বইতে তিনি দাবি করেছেন, সিন্ধু নদের পার থেকে যে সমস্ত সিলমোহর উদ্ধার করা হয়েছে, তা আদৌ বাণিজ্যের কাজে ব্যবহার করা হত না। তার নেপথ্য ধর্মীয় কারণ ছিল। প্রধান সিলমোহরে একটি মন্ত্র খোদাই করা ছিল বলে দাবি করেন করুণাশঙ্কর। দিল্লির সম্মেলনে এই সংক্রান্ত আলোচনা করতে পারেন তিনি। নাগপুরের অবসরপ্রাপ্ত প্রযুক্তিবিদ প্রকাশ সালামের আবার দাবি, হরপ্পার লিপির সঙ্গে গোন্ডি ভাষার সম্পর্ক রয়েছে।

হরপ্পার লিপি নিয়ে রাজনীতির টানাপড়েনও কম নয়। তামিলনাড়়ুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন এক বার ঘোষণা করেছিলেন, এই লিপির পাঠোদ্ধার করে দিলে তিনি ১০ লক্ষ ডলার (৮ কোটি টাকা) পুরস্কার দেবেন। উদ্দেশ্য সহজ, যদি কোনও ভাবে দাক্ষিণাত্যের দ্রাবিড়ীয় সভ্যতার সঙ্গে এই লিপির মিল পাওয়া যায়, ডিএমকে রাজনৈতিক ভাবে লাভবান হবে। সে ক্ষেত্রে ভারতের প্রাচীনতম সভ্যতার উত্তরাধিকার দাবি করতে পারবে দাক্ষিণাত্য। আবার একই ভাবে একই কারণে সঙ্ঘ পরিবার প্রথম থেকেই হরপ্পা লিপি নিয়ে আগ্রহী। সঙ্ঘঘেঁষা প্রত্নতত্ত্ববিদদের কেউ কেউ দাবি করেন, হরপ্পা এবং বৈদিক সভ্যতার মানুষের মধ্যে খুব একটা তফাৎ নেই। বক্তব্যের সপক্ষে বেশ কিছু যুক্তিও তাঁরা দিয়ে থাকেন। বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত আয়োজিত সম্মেলনে সেই সমস্ত প্রসঙ্গই উঠতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

Harappan Civilization Harappa Age Ministry of Cultural Affairs
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy