Advertisement
১৯ এপ্রিল ২০২৪

চুপ থাকব না, ওবামা বলে দিলেন বিদায়লগ্নে

শেষ পর্যন্ত, তিনি তো এক জন বাবা। মেয়েদের কথা বলতে বলতে যাঁর গলা কেঁপে যায়। যিনি গর্ব ভরে সকলকে বলেন, তাঁর মেয়েরাই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার আলো দেখায়। হ্যাঁ, এই ‘কঠিন’ সময়েও।প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে তাঁর শেষ সাংবাদিক বৈঠকের শেষ প্রশ্ন।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ছবি: এপি।

হোয়াইট হাউসে সাংবাদিক বৈঠকে বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। ছবি: এপি।

সংবাদ সংস্থা
ওয়াশিংটন শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০৩:২৩
Share: Save:

শেষ পর্যন্ত, তিনি তো এক জন বাবা। মেয়েদের কথা বলতে বলতে যাঁর গলা কেঁপে যায়। যিনি গর্ব ভরে সকলকে বলেন, তাঁর মেয়েরাই ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আশার আলো দেখায়। হ্যাঁ, এই ‘কঠিন’ সময়েও।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে হোয়াইট হাউসে তাঁর শেষ সাংবাদিক বৈঠকের শেষ প্রশ্ন। ‘‘এটা কিন্তু একটু ব্যক্তিগত’’, শুরুতেই বলে নিয়েছেন সাংবাদিক। ‘‘এই নির্বাচনে যা হলো, সেটা আপনি ও ফার্স্ট লেডি মেয়েদের কাছে কী ভাবে ব্যাখ্যা করছেন?’’ উত্তর দিতে গিয়ে ব্যক্তিগত ও রাজনৈতিক জীবনকে মিলিয়ে দিলেন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। তাঁর আট বছরের হোয়াইট হাউসের জমানায় হামেশাই যা করেছেন। শেষ বেলাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটল না।

মেয়েদের কী বলব, এই প্রশ্নের উত্তরে ওবামা যা বললেন, তা শুধু তাঁর সন্তানকে দেওয়া পরামর্শ নয়। অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা এক দেশ, অজানার আশঙ্কায় বুক দুরুদুরু এক পৃথিবীকে দিশা দেখানোর প্রচেষ্টাও বটে।

ওবামা বললেন, ‘‘মেয়েদের বুঝিয়েছি, কখনও, কোনও অবস্থাতেই হাল ছাড়বে না। পড়ে গেলে আবার উঠে দাঁড়াবে, জামা থেকে ধুলো ঝেড়ে ফের হাঁটতে শুরু করবে।’’

ওবামাপন্থীদের মতে, ‘হাল ছাড়বে না’ কথাটা জরুরি। কারণ মেয়েদের উপদেশের আড়ালে বার্তা তো দেশের সেই সব মানুষকে, যাঁরা ট্রাম্প-ঝড়ে বিধ্বস্ত। এবং আরও বড় ঘূর্ণিঝড়ের আতঙ্কে ভুগছেন। তাঁর মেয়েদের মতো নতুন প্রজন্মের ছেলেমেয়েদের জন্য ওবামার বার্তা, ‘‘আমি গর্বিত, কারণ তোমরা ছিঁচকাদুনে নও। হেরে গেলে তোমরা ভাবো না, সব শেষ হয়ে গেল। তোমরা যা ন্যায্য মনে করো, যার জন্য লড়াই করো, তার জন্য সব সময় লড়াই করে যাবে। শুধু নিজেদের জন্য নয়, আমেরিকার জন্যও।’’

লড়াইয়ের ময়দান থেকে তিনি নিজেও যে সরছেন না, তা আজ স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিদায়ী প্রেসিডেন্ট। মার্কিন আইন বলে, তিনি আর কখনও প্রেসিডেন্ট পদে লড়তে পারবেন না। তবে প্রত্যক্ষ রাজনীতি থেকে দূরে থাকলেও ‘‘প্রয়োজনে মুখ খুলতে দ্বিধা করব না’’, বললেন ওবামা। তাঁর কথায়, ‘‘এ দেশের কিছু মূল্যবোধ রয়েছে, একান্ত নিজস্ব কিছু চিন্তাধারা। সেগুলোর ওপর আঘাত আসছে দেখলে চুপ করে থাকব না।’’ প্রসঙ্গত, আগামিকাল হোয়াইট হাউস থেকে চলে গেলেও ওয়াশিংটন ছাড়ার কোনও পরিকল্পনা আপাতত নেই ওবামা পরিবারের। অন্তত বড় মেয়ে সাশা যত দিন কলেজে না-ঢুকছে। প্রেসিডেন্টের বাসভবন থেকে মাত্র দু’মাইল দূরে তাঁদের নতুন বাড়ি ঠিক হয়েছে। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের এই সিদ্ধান্ত যথেষ্ট ব্যতিক্রমী, কারণ পদ থেকে সরে যাওয়ার পরে মার্কিন রাষ্ট্রনেতারা সাধারণত ওয়াশিংটন ছেড়ে চলেই যান।

তবে এখনকার ‘কর্মসূচি’তে শুধুই স্ত্রী ও মেয়েদের সঙ্গে সময় কাটানো। হোয়াইট হাউসের ‘মিডিয়া ব্রিফিং রুম’ থেকে শেষ বার বেরোনোর সময় ওবামা তাই বলে গেলেন— ‘‘এ বছরই আমাদের বিয়ের ২৫ বছর। মিশেলকে আর এক বার জিজ্ঞেস করে নেওয়ার সময়ে এসেছে, তুমি কি আমার সঙ্গে বাকি জীবনটা কাটাতে চাও?’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Barack Obama
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE