বোতাম টিপলেই খেল খতম! পরমাণু ক্ষেপণাস্ত্রে গুয়াম গুঁড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে চলেছে উত্তর কোরিয়া। তাদের বেপরোয়া প্রেসিডেন্ট কিম জং উনের দাবি, শুধু এই প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপ নয়, আমেরিকার মূল ভূখণ্ডও পিয়ংইয়ংয়ের হাতের নাগালে। যার পাল্টা ‘উড়িয়ে দেওয়ার’ কথা বলছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও। তা হলে কি আর একটা বিশ্বযুদ্ধ? আবারও হিরোশিমা-নাগাসাকি! এমন একটা বস্তাপচা অথচ হাড়হিম করা আতঙ্কে যখন গোটা দুনিয়া কাঁপছে, ঠিক তখনই শান্তিতে নোবেল জিতে নিল ‘আইক্যান’ (আইসিএএন)।
পুরো নাম, ‘ইন্টারন্যাশনাল ক্যাম্পেন টু অ্যাবলিশ নিউক্লিয়ার উইপনস’। পরমাণু অস্ত্রের বিরুদ্ধে টানা এক দশক ধরে প্রচার চালিয়ে যাচ্ছে ১০০টিরও বেশি দেশের ৪৬৮টি বেসরকারি সংস্থার এই জোট। যাদের স্বীকৃতি দিয়ে নরওয়ের নোবেল কমিটিও যেন এ বার কড়া বার্তা দিতে চাইল পরমাণু শক্তিধর প্রতিটি দেশকে। সে তারা নিজেদের ‘ষড়যন্ত্র’ যতই গোপন করুক না কেন!
আরও পড়ুন: নিরাপত্তার ঝুঁকি দেখছে ঢাকা-দিল্লি
সূত্রের খবর, এ বছর এই পুরস্কারের জন্য প্রাথমিক ভাবে ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান মিলিয়ে ৩১৮টি নাম নিয়ে তৈরি হয়েছিল মনোনয়ন তালিকা। যাতে ছিলেন পোপ ফ্রান্সিস, জার্মান চ্যান্সেলর আঙ্গেলা মের্কেল, সিরিয়ার উদ্ধারকর্মী দল ‘হোয়াইট হেলমেটস’-সহ রাষ্ট্রপুঞ্জের একাধিক কর্তাব্যক্তির নাম। গোড়ায় তাই খবরটা ‘তামাশা’-ই ভেবেছিলেন আইক্যানের কার্যকরী নির্দেশক বিয়াত্রিচে ফিন। আজ পুরস্কারের ঘোষণায় সাংবাদিক বৈঠকের ঠিক আগেই অসলো থেকে ফোন পান তিনি। পরে সংবাদমাধ্যমকে চোয়াল শক্ত রেখেই বলেন, ‘‘এই পুরস্কারে আমরা সম্মানিত। তবে কাজ এখনও বিস্তর বাকি। নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে এখনও নানা দেশ যে ভাবে গোপনে বা ঢাক পিটিয়ে পরমাণু অস্ত্র বানিয়ে চলেছে, তা রুখতেই হবে।’’
আন্তর্জাতিক চুক্তির মাধ্যমে এর আগে বিশ্ব জুড়ে ক্লাস্টার বোমা, রাসায়নিক কিংবা জীবাণু অস্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু পরমাণু অস্ত্রের পরীক্ষা কিংবা ব্যবহার বন্ধে এখনও কোনও সর্বসম্মত নিষেধাজ্ঞা চাপানো সম্ভব হয়নি। গত জুলাইয়ে যদিও বা এ নিয়ে রাষ্ট্রপুঞ্জের এক চুক্তিতে ১২২টি দেশের সমর্থন মিলেছে, আমেরিকা-রাশিয়া-চিন-ব্রিটেন-ফ্রান্সের মতো কিছু দেশ এখনও নাছোড়বান্দা। গোপনে পরমাণু অস্ত্র তৈরির অভিযোগ উঠেছে ইরানের বিরুদ্ধে। ইজরায়েলও নাকি বাড়ছে আড়েবহরে। পরমাণু-হুমকির মাত্রা যে এখন সব চেয়ে ভয়াবহ, মানছে নোবেল কমিটিও।
এই প্রেক্ষিতে ‘আইক্যান’-এর লড়াইকে কুর্নিশ জানাতেই এই সম্মান, জানিয়েছে তারা। ২০০৭-এ অস্ট্রেলিয়ার ভিয়েনায় সরকারি ভাবে পথচলা শুরু করেছিল ‘আইক্যান’। পরমাণু শক্তিধর ৯টি দেশ, যারা পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ চুক্তির বিরোধিতা করছে, টুইটারে তাদের একহাত নেন সংস্থাটির নির্দেশক। ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসার ছক কষছেন বলে সম্প্রতি ‘মূর্খ’ বলতে ছাড়েননি ডোনাল্ড ট্রাম্পকেও। এ-ও এক যুদ্ধ বৈকি! তবে শান্তি চেয়ে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy