Advertisement
E-Paper

ইরানের বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইজ়রায়েল হামলা করলে পরিণাম হতে পারে ভয়ঙ্কর! দাবি আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার

দক্ষিণ ইরানে রয়েছে বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পশ্চিম এশিয়ার এটিই প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আইএইএ প্রধান জানিয়েছেন, ইরানের ওই পরমাণু কেন্দ্রে কয়েক হাজার কেজি পারমাণবিক সামগ্রী রয়েছে।

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ জুন ২০২৫ ১৭:২৭

— ফাইল চিত্র।

ইরানের বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে ইজ়রায়েল যদি আঘাত হানে, তা হলে তার পরিণাম হতে পারে ভয়ানক। জানাল রাষ্ট্রপুঞ্জ নিয়ন্ত্রিত নজরদার সংস্থা আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থা (আইএইএ)। বুশেহরে হামলা হলে সম্ভাব্য ‘পরমাণু বিপর্যয়’ হতে পারে বলেও হুঁশিয়ারি দিল তারা। তবে সংস্থার ডিরেক্টর জেনারেল রাফায়েল গ্রসি আশ্বস্ত করেছেন যে, ইরানের এই পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে এখনও কোনও তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হয়নি।

শুক্রবার রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পরিষদের জরুরিকালীন বৈঠকে গ্রসি বলেন, ‘‘ওই অঞ্চলে যে দেশগুলি রয়েছে, তারা গত কয়েক ঘণ্টায় আমার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমি একটা বিষয় স্পষ্ট করতে চাই, বুশেহর পরমাণু কেন্দ্রে যদি আঘাত হানা হয়, তবে তা হলে উচ্চ পর্যায়ের তেজস্ক্রিয় বিকিরণ হবে।’’

গত ১৩ জুন সকালে ইরানের পরমাণু কেন্দ্র লক্ষ্য করে হামলা চালায় ইজ়রায়েল। সে দেশের ন’জন পরমাণু বিজ্ঞানী নিহত হন সেই হামলায়। ইরানের সামরিক ক্ষেত্রেও আক্রমণ করে তারা। বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু সরকারের আক্রমণে ইরানে প্রাণ হারিয়েছেন এখন পর্যন্ত প্রায় ৬৫৭ জন। তাঁদের মধ্যে ২৬৩ জন সাধারণ নাগরিক। ইরানের মানবাধিকার সংগঠন, যাদের দফতর ওয়াশিংটনে, তারা দাবি করেছে, নেতানিয়াহু সরকারের হামলায় সে দেশে আহত হয়েছেন প্রায় ২,০০০ জন। পাল্টা ইজ়রায়েলে হামলা শুরু করেছে ইরানও। ইজ়রায়েলের দাবি, তাদের দেশে ৪৫০টি ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে ইরান। ১,০০০টি ড্রোন ছুড়েছে। তাতে নিহত হয়েছেন অন্তত ২৪ জন।

বুশেহরে ইজ়রায়েল হামলা চালালে কী হবে?

দক্ষিণ ইরানে রয়েছে বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। পশ্চিম এশিয়ার এটিই প্রথম পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র। আইএইএ প্রধান জানিয়েছেন, ইরানের ওই পরমাণু কেন্দ্রে কয়েক হাজার কেজি পারমাণবিক সামগ্রী রয়েছে। ওই কেন্দ্রে হামলা হলে বা তার বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হলে ভয়াবহ পরিণাম হতে পারে বলে মনে করছেন গ্রসি। যদিও ওই কেন্দ্রের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়, তা হলে শীতল করার যন্ত্র খারাপ হয়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে বিকিরণ হতে পারে। গ্রসির কথায়, ‘‘খুব খারাপ পরিস্থিতিতে বুশেহর থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকায় বসবাসকারীদের সরিয়ে নিয়ে যেতে হবে।’’

গ্রসি মনে করছেন, তেজষ্ক্রিয় বিকিরণ হলে সে ক্ষেত্রে উপসাগরীয় তীরবর্তী অঞ্চলও বিপাকে পড়তে পারে। ওই অঞ্চল তেল উৎপাদন, আমদানি-রফতানির ক্ষেত্রে সারা বিশ্বে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করে। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ ইরানকে ঘিরে রয়েছে পারস্য উপসাগর। তার সবচেয়ে কাছের স্থলভাগ হল আরব আমিরশাহি, বাহরিন, কাতার। গ্রসি মনে করেন, কোনও ভাবে তেজস্ক্রিয় বিকিরণ শুরু হলে ওই এলাকার বাসিন্দাদের আয়োডিন খেতে হবে। খাবারের জোগানেও নিষেধাজ্ঞা জারি হতে পারে।

ইজ়রায়েল দাবি করেছে, ইরানের হাতে পরমাণু অস্ত্র থাকলে তা বিপজ্জনক হতে পারে। তাই সেই পরমাণু অস্ত্র তৈরি থেকে তাদের বিরত করতে হবে। এর আগে আমেরিকাও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ইরানকে। যদিও ইরান বার বার দাবি করেছে, মানুষের স্বার্থেই পরমাণু নিয়ে গবেষণা চালাচ্ছে তারা।

আএইএ-র প্রধান গ্রসি জানিয়েছেন, ইরানের বুশেহর পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র এখনও আক্রান্ত হয়নি। তবে ইরানের রাজধানী তেহরানের কাছে নাতানজ় পরমাণু কেন্দ্র, ইশফাহানে পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র, আরাক হেভি ওয়াটার রিঅ্যাক্টর আক্রান্ত হয়েছে। যদিও এই রিঅ্যাক্টর নিষ্ক্রিয়। তাতে পরমাণু সামগ্রী ছিল না বলেই জানিয়েছেন গ্রসি।

Nuclear Site Tehran
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy