জেলবন্দি ইমরান খানের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েও তা পারছেন না তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। এই পরিস্থিতিতে জেল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ তুলে ইসলামাবাদ হাই কোর্টের দ্বারস্থ হলেন প্রাক্তন পাক প্রধানমন্ত্রীর বোন আলিমা খান। শুক্রবার ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) নেতা তথা খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী সোহেল আফ্রিদির উপস্থিতিতে হাই কোর্টে মামলা দায়ের করেন ইমরানের বোন।
২০২৩ সালের অগস্ট মাস থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে বন্দি পাকিস্তানের জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক ইমরান। গত ২৪ মার্চ ইসলামাবাদ হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল যে, সপ্তাহে দু’দিন জেলে গিয়ে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন তাঁর পরিবারের সদস্যেরা। আলিমার অভিযোগ, হাই কোর্টের ওই নির্দেশের পরেও পরিবারের কাউকে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। আদিয়ালা জেলের সুপারের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার অভিযোগ জানিয়েছেন ইমরানের বোন।
হাই কোর্টে আলিমা জানিয়েছেন, হাই কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও প্রতি মঙ্গলবার এবং শুক্রবার জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হচ্ছে না। তাই ইমরানের শারীরিক পরিস্থিতি ঠিক আছে কি না, আইনি অধিকার সুরক্ষিত থাকছে কি না, তা জানতে চেয়েছেন আলিমা। শুক্রবার যদিও ইসলামাবাদ হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির সঙ্গে দেখা করতে পারেননি আলিমারা। শুক্রবার ইমরানের সঙ্গে দেখা করার দাবি জানিয়ে পাক আইনসভার দুই কক্ষ সেনেট এবং ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলিতে বিক্ষোভ দেখান পিটিআই সদস্যেরা। আগামী মঙ্গলবার ইমরানের দল ইসলামাবাদ হাই কোর্ট এবং আদিয়ালা জেলের সামনে বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি নিয়েছে।
গত কয়েক সপ্তাহ ধরে পরিবার-পরিজনেরা ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে পারছেন না বলে অভিযোগ। গত ১৯ নভেম্বর রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা জেলে ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে পুলিশি বাধার মুখে পড়েন তাঁর তিন বোন— আলিমা, উজ়মা এবং নুরা খান। প্রতিবাদে ধর্নায় বসলে তাঁদের শারীরিক হেনস্থা করা হয় বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকেও ইমরানের সঙ্গে দেখা করতে বাধা দেওয়া হয়। প্রতিবাদে আদিয়ালা জেলের সামনেই ধর্নায় বসেন তিনি। ধর্নায় শামিল হন আলিমাও। ১৬ ঘণ্টা পরে শুক্রবার সকালে ধর্না তোলেন তাঁরা।
ইমরান কেমন রয়েছেন, কোথায় রয়েছেন, তা নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই জল্পনা চলছে। মৃত্যু-জল্পনার মধ্যেই বৃহস্পতিবার পাকিস্তানের আদিয়ালা জেল কর্তৃপক্ষ বিবৃতি দিয়ে জানিয়েছিলেন, ইমরান পুরোপুরি সুস্থ। আদিয়ালা জেল থেকে তাঁকে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার খবরও সত্য নয় বলে জানানো হয়। একাধিক মামলায় অভিযুক্ত ইমরান। চলতি বছরের গোড়ায় আল কাদির ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে তাঁকে ১৪ বছর জেলের সাজা দিয়েছে আদালত। সাজা হয়েছে তাঁর স্ত্রী বুশরা বিবিরও। গত সেপ্টেম্বরে সমাজমাধ্যমে ইমরান অভিযোগ করেছিলেন, তাঁর এবং বুশরার উপর জেলের অন্দরে পাক সেনাপ্রধান আসিম মুনিরের নির্দেশে মানসিক অত্যাচার চালানো হচ্ছে! তার পরেই সাক্ষাৎ নিয়ে কড়াকড়ি শুরু হয়েছিল আদিয়ালা জেলে।